Copyright Doctor TV - All right reserved
বাংলাদেশে বর্তমানে প্রতি ১৪ জনে একজন থ্যালাসেমিয়ার বাহক। আর ৭০ হাজারের বেশি শিশু থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত। প্রতি বছর ৬ হাজার শিশু বিভিন্ন রকমের থ্যালাসেমিয়া রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে বুধবার (৮ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের পেডিয়াট্রিক হেমাটোলজি এন্ড অনকোলজি বিভাগের উদ্যোগে সচেতনমূলক র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। র্যালি উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. দীন মো. নূরুল হক।
থ্যালাসেমিয়া রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট বিশেষায়িত ‘থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশন হাসপাতালে’র উদ্বোধন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ মে) রাজধানীর মালিবাগের হোসাফ টাওয়ারে বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে নির্মিত হাসপাতাল উদ্বোধন করেন আসগর আলী হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট প্রফেসর ডা. মনজুর মোর্শেদ।
থ্যালাসেমিয়ামুক্ত বাংলাদেশ গড়তে বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করার আহ্বান জানিয়েছেন চিকিৎসক ও সমাজকর্মীরা।
আমাদের পর্যবেক্ষণে আমরা দেখেছি, অধিকাংশ থ্যালাসেমিয়া রোগীরাই সঠিক চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত। কেউ দারিদ্রের কারণে। কেউবা সচেতনতার অভাবে। রক্তরোগ বিশেষজ্ঞের অপ্রতুলতাও একটি কারণ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশের ১০ শতাংশের অধিক মানুষ থ্যালাসেমিয়া অথবা হিমোগ্লোবিন ই এর বাহক। দেশে প্রতি বছর প্রায় ৯ হাজার শিশু থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্ম নিচ্ছে। এদেশে ৬০ থেকে ৭০ হাজার রোগী বিটা থ্যালাসেমিয়া অথবা হিমোগ্লোবিন ই রোগ নিয়ে বসবাস করছে।
বাংলাদেশের ১০-১২ শতাংশ মানুষ থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক। এছাড়াও প্রতি বছর প্রায় ১০ হাজার শিশু থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্ম নিচ্ছে। এই অবস্থায় থ্যালাসেমিয়া রোগ প্রতিরোধে বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা জরুরি বলে মনে করেন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা।
থ্যালাসেমিয়া রোগ প্রতিরোধে বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ। তাঁর মতে, বর ও কনে উভয়েই থ্যালাসেমিয়ার বাহক হলে তাদের সন্তান থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত হয়।
দেশে প্রতি বছর প্রায় ১০ হাজার শিশু থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্ম নিচ্ছে। বর্তমানে রোগটিতে আক্রান্ত শিশু-কিশোরের সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার। দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১২ শতাংশ-ই এই রোগের জীবাণু বহন করছে। সে হিসাবে প্রতি ১৪ জনে একজন থ্যালাসেমিয়ার বাহক রয়েছে।
তিনি জানান, বাংলাদেশের জনসংখ্যার ৭ থেকে ১০ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ মানুষ থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক। থ্যালাসেমিয়া বাহকদের পরস্পরের মধ্যে বিয়ের মাধ্যমে প্রতি বছর নতুন করে ৭ হাজার থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুর জন্ম হচ্ছে।
বাংলাদেশে বর্তমানে প্রতি ১৪ জনে একজনের থ্যালাসেমিয়ার বাহক রয়েছে আর ৭০ হাজারের বেশি শিশু থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত। প্রতি বছর ৬ হাজার শিশু বিভিন্ন রকমের থ্যালাসেমিয়া রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করছে।
থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধে ব্যাপক জনসচেতনতা দরকার। সরকারি, ব্যক্তিগত, সামাজিক, গণমাধ্যম সব দিক থেকেই এই সচেতনতা তৈরি করতে পারলে থ্যালাসেমিয়া নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, থ্যালাসেমিয়া রোগের বিস্তার রোধে বাহকদের মধ্যে এবং আত্মীয়ের মধ্যে বিয়ে নিরুৎসাহিত করতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্রে সন্তান ধারণের পর প্রয়োজনীয় সতর্কতাও অবলম্বন করতে হবে।
থ্যালাসেমিয়াকে দেশের সার্বিক সুস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোগটি সম্পর্কে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তাঁর ভাষায়, বাহকে-বাহকে বিয়ে হলে সংশ্লিষ্ট দম্পতির সন্তান থ্যালাসেমিয়া রোগী হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ কারণে বিয়ের আগেই এই রোগের জীন বাহক কিনা, তা রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে জেনে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
আমরা সকল চিকিৎসকই জানি, থ্যালাসেমিয়ায় কয়েকদিন পর পরই blood transfusion করতে হয় (Thalassemia major). আমি সবসময়ই এই blood transfusion এর বিরোধিতা করতাম। সবাইকে নিষেধ করতাম, এভাবে blood transfusion দিয়ে বাচ্চার ক্ষতি, না করতে।