বাংলাদেশের ১০ শতাংশের অধিক মানুষ থ্যালাসেমিয়ার বাহক
বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সোসাইটি আয়োজিত বৈজ্ঞানিক সেমিনার
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশের ১০ শতাংশের অধিক মানুষ থ্যালাসেমিয়া অথবা হিমোগ্লোবিন ই এর বাহক। দেশে প্রতি বছর প্রায় ৯ হাজার শিশু থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্ম নিচ্ছে। এদেশে ৬০ থেকে ৭০ হাজার রোগী বিটা থ্যালাসেমিয়া অথবা হিমোগ্লোবিন ই রোগ নিয়ে বসবাস করছে। আজ সোমবার (৮মে) বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস উপলক্ষে হেমাটোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশ আয়োজিত বৈজ্ঞানিক সেমিনারে বিশেষজ্ঞ আলোচকেরা এসব তথ্য জানান।
তারা বলেন, রক্তের হিমোগ্লোবিনের গ্লোবিন জিনের বংশগত ক্রটির কারণে থ্যালাসেমিয়া রোগ হয়ে থাকে। এ কারণে থ্যালসেমিয়া রোগীদের রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম থাকে এবং রক্তের মাধ্যমে শরীরে অক্সিজেন ও পুষ্টি পরিবহন ব্যাহত হয়। ফলে শরীরের বৃদ্ধি কম হয় এবং বিভিন্ন হাড়ের গঠনে বিকৃতি দেখা দিতে পারে। বারবার রক্ত নিয়ে এ সমস্যাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয় বলে শরীরে অতিরিক্ত আয়রণ জমা হতে থাকে। এতে লিভার, হৃদপিন্ডসহ বিভিন্ন অঙ্গের কার্যক্ষমতা কমে যায়।
চিকিৎসকেরা বলেন, বাবা মা উভয়ে বাহক হলেই সাধারণত তাদের সন্তান থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত হন। থ্যালাসেমিয়া বাহকদের পরস্পরের মধ্যে বিয়ে বন্ধ করা সম্ভব হলে থ্যালাসেমিয়া রোগীর সংখ্যা কমানো সম্ভব।
তারা আরও বলেন, থ্যালাসেমিয়া সম্পর্কে রোগী, রোগীর স্বজন, সকল পর্যায়ের স্বাস্থ্য সেবাদানকারী এবং সর্বস্তরের জনগণের মাঝে সচেতনা তৈরি করতে হবে। বিয়ের আগে থ্যালাসেমিয়া স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে ২০২৮ সালের মধ্যে বাংলাদেশে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত জন্মের সংখ্যা শূণ্যে নামিয়ে নিয়ে আসা, থ্যালাসেমিয়ার সকল রোগী যাতে বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্টেশনসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সুলভে পেতে পারেন এবং থ্যালাসেমিয়া চিকিৎসার সর্বাধুনিক সুবিধাদি সহজলভ্য করতে সরকারী বেসরকারী সকল পর্যায়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানান তারা।