ছবিঃ সংগৃহীত
গাজায় স্বাস্থ্যখাত এখন ভয়াবহ সংকটে, যা আগামী কয়েক প্রজন্ম পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থার মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়াসুস জানিয়েছেন, গাজার মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণে জরুরি ত্রাণ সহায়তা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো প্রয়োজন।
বিবিসি রেডিও ফোর–এর এক সাক্ষাৎকারে গেব্রিয়াসুস বলেন, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর ইসরায়েল ত্রাণ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম প্রবেশে কিছুটা শিথিলতা আনলেও তা গাজার ধ্বংসপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যব্যবস্থা পুনর্গঠনের জন্য মোটেও যথেষ্ট নয়। তিনি সতর্ক করে বলেন, “সেখানকার মানুষ দুর্ভিক্ষ দেখেছে, ভয়াবহ আঘাত পেয়েছে, পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। সব মিলিয়ে এটি এক প্রাণঘাতী পরিস্থিতি।”
ডব্লিউএইচও প্রধানের মতে, ক্ষুধা ও মানসিক স্বাস্থ্য–সংকট একসঙ্গে বেড়ে যাওয়ায় এই মানবিক বিপর্যয় প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলতে পারে। তিনি ইসরায়েলকে আহ্বান জানান, ত্রাণকে যেন অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার না করা হয় এবং সাহায্য বিতরণে কোনো শর্ত আরোপ না করা হয়।
বর্তমানে ইসরায়েল কেবল দুটি প্রবেশপথ—কেরেম শালোম ও কিসুফিম—খোলা রেখেছে। প্রতিদিন গড়ে ২০০ থেকে ৩০০ ট্রাক গাজায় ঢোকে, অথচ বাস্তব চাহিদা অন্তত ৬০০ ট্রাকের সমান, জানান গেব্রিয়াসুস।
তিনি আরও বলেন, সামরিক ব্যবহারের আশঙ্কায় ইসরায়েল অনেক চিকিৎসা সরঞ্জাম সীমান্তে আটকে রেখেছে। “একটি অস্থায়ী হাসপাতাল গড়তে তাঁবু ও খুঁটি লাগে, কিন্তু বলা হচ্ছে এগুলো ‘দ্বৈত ব্যবহারের’ জিনিস, তাই আটকানো হয়েছে,” উল্লেখ করেন তিনি।
ডব্লিউএইচওর তথ্যমতে, চিকিৎসার জন্য অপেক্ষা করতে গিয়ে গত দুই সপ্তাহে অন্তত ৭০০ ফিলিস্তিনি মারা গেছেন।
গেব্রিয়াসুস আরও বলেন, যেহেতু যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে মধ্যস্থতা করেছে, তাই তা কার্যকর রাখার দায়িত্বও তাদের ওপর বর্তায়। জাতিসংঘ জানিয়েছে, গাজা পুনর্গঠনে খরচ হবে প্রায় ৭ হাজার কোটি ডলার, যার অন্তত ১০ শতাংশ ব্যয় করতে হবে স্বাস্থ্য খাতে।
ডব্লিউএইচও মহাপরিচালকের ভাষায়, “শান্তিই সবচেয়ে বড় ওষুধ। কিন্তু যুদ্ধবিরতি এখনও ভঙ্গুর। যারা যুদ্ধ শেষের খবর শুনে আনন্দ করেছিল, তাদের অনেকে আজ আর বেঁচে নেই।”
আরও পড়ুন