ছবিঃ সংগৃহীত
‘নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)’ আন্দোলনের স্থপতি ও চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে লন্ডনে চিকিৎসাধীন আছেন। রূপালী পর্দায় নায়ক হিসেবে তুমুল জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর দীর্ঘ সময় ধরে সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে গণসচেতনতা গড়ে তোলার কাজে নিজেকে নিবেদিত করেন তিনি। তবে এবার তিনি নিজেই জীবনের সবচেয়ে কঠিন লড়াই লড়ছেন মস্তিষ্কে টিউমার নিয়ে।
বুধবার (১ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ইলিয়াস কাঞ্চনের একমাত্র ছেলে ও নিসচার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মিরাজুল মইন জয় কানাডা থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ তথ্য প্রকাশ করেন। তিনি জানান, তার বাবা ইলিয়াস কাঞ্চন চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকে লন্ডনে অবস্থান করছেন, এবং এই দীর্ঘ সময় তার লন্ডন যাত্রা ও অবস্থান একান্তই চিকিৎসাজনিত কারণে।
মিরাজুল জয় বলেন, বছরের শুরুতে তার বাবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে—কথা বলতে গিয়ে আটকে যাওয়া, স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়। এরপর গত ৯ এপ্রিল তাকে ঢাকার ধানমন্ডির আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়, যেখানে প্রায় ছয় ঘণ্টার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মাথার এমআরআই করা হয়। রিপোর্টে ধরা পড়ে তার ব্রেনে একটি টিউমার রয়েছে।
পরবর্তী চিকিৎসাপর্বে ১৩ এপ্রিল ইলিয়াস কাঞ্চনকে আগারগাঁওয়ের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসাইন্সে নেওয়া হয়। সেখানে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে জানানো হয়, তার টিউমারটি ব্রেনের গভীরে গুরুত্বপূর্ণ স্নায়ুর সংযোগস্থলে অবস্থান করছে, যার কারণে দেশে অপারেশন ঝুঁকিপূর্ণ হবে। পরিবারের সিদ্ধান্তে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নেওয়া হয়।
২৬ এপ্রিল তিনি লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন এবং পরদিন হারলি স্ট্রিট ক্লিনিকে নিউরোসার্জনের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা শুরু হয়। দীর্ঘ তিন মাসের পর্যালোচনা ও প্রস্তুতির পর ৫ আগস্ট লন্ডনের উইলিংটন হাসপাতালে প্রফেসর ডিমিট্রিয়াসের নেতৃত্বে তার ব্রেনে অস্ত্রোপচার করা হয়।
জয় জানান, অস্ত্রোপচারে পুরো টিউমার অপসারণ সম্ভব হয়নি, কারণ এতে প্যারালাইসিস বা কথাবার্তা হারানোর আশঙ্কা ছিল। তাই আংশিক টিউমার অপসারণের পর সিদ্ধান্ত হয় বাকি অংশ রেডিয়েশন ও কেমোথেরাপির মাধ্যমে নিষ্ক্রিয় করার। এই চিকিৎসা অক্টোবর মাসেই শুরু হবে এবং ছয় সপ্তাহ চলবে। এরপর চার সপ্তাহ ডাক্তারের পর্যবেক্ষণে থাকবেন তিনি। চিকিৎসকের সবুজ সংকেত মিললেই ইলিয়াস কাঞ্চন দেশে ফিরবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
এ সময় তিনি দেশবাসীর কাছে বাবার সুস্থতার জন্য দোয়া কামনা করেন।
আরও পড়ুন