Ad
Advertisement
Doctor TV

বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫


চোখের সুরক্ষায় যে খাবারগুলো আপনার খাদ্য তালিকায় থাকা উচিত

Main Image

ছবিঃ প্রতীকী


চোখ আমাদের শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর মধ্যে একটি। আধুনিক জীবন ধারায় দীর্ঘ সময় কম্পিউটার, মোবাইল বা টেলিভিশনের সামনে থাকায় চোখের উপর চাপ বেড়ে যায়। আর বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দৃষ্টিশক্তি ও কমতে থাকে। তবেকিছু নির্দিষ্ট ফল ও সবজিনিয়মিত খেলে চোখের স্বাস্থ্য রক্ষা করা সম্ভব। আসুন জেনে নিই সেই সুপারফুড গুলো।

 

গাজর: চোখের রাত কানা বন্ধু

গাজর হলো চোখের জন্য চির প্রিয় খাবার।এতে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন ও ভিটামিন এ, যা চোখের রেটিনার স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। বিশেষ করে রাতকানা রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা গাজর নিয়মিত খেলে উপকৃত হন। গাজর কাঁচা বা রান্না করে দু’টো আকারেই খাওয়া যায়।

 

পালংশাক: চোখের লাইটার

পালংশাক কে বলা যেতে পারে চোখের “সুপারফুড”। এতে প্রচুর ভিটামিন সি, লুটেইন এবং জেক্সানথিন থাকে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো চোখকে ফ্রির্যাডিকেল থেকে রক্ষা করে এবং দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। সালাদে, ভাপে বা স্যুপে ব্যবহার করতে পারেন।

 

ক্যাপসিকাম: চোখের সুরক্ষাকারী

ক্যাপসিকামে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি এবং শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি চোখের ছানিপড়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। ক্যাপসিকাম কাঁচা খাওয়া যায়, আবার তরকারির রেসিপিতেও ব্যবহার করা যায়।

 

ব্রকলি: সবজির রাজা

ব্রকলি শুধুই স্বাস্থ্যকর নয়, চোখের জন্যও উপকারী। এতে থাকে ভিটামিন সি, যা চোখের ফ্রির্যাডিকেল ক্ষতি কমাতে সাহায্য করে। যাদের চোখের ছানি বা অন্যান্য সমস্যা রয়েছে, তারা ব্রকলি নিয়মিত খেলে দৃষ্টিশক্তি উন্নত রাখতে পারেন। বাজারে প্রায় সারাবছর পাওয়া যায়, তবে শীতকালেই এটি সবচেয়ে তাজা হয়।

 

মিষ্টি আলু: চোখের শক্তিশালী বন্ধু

মিষ্টি আলুতে রয়েছে প্রচুর বিটা ক্যারোটিন এবং ভিটামিন এ, যা চোখের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যারা দৃষ্টিশক্তি কমার ঝুঁকিতে, তারা মিষ্টি আলুনিয়মিত খেলে চোখ সুস্থ রাখতে পারেন। এটি স্যুপ, স্টার-ফ্রাই বা ভাপা করেখাওয়া যায়।

 

আমলকি: ভিটামিনসি’রপ্যাক

আমলকি হলো প্রচুর ভিটামিন সি-এর উৎস।এটি চোখের রেটিনা এবং রক্তনালীকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। কাঁচা বাপাকা যে কোনো অবস্থায় আমলকি খাওয়া যায়। সকালে এককাপ আমলকির রস নিলে চোখের স্বাস্থ্যের জন্য এটি একটি চমৎকার শুরু হতে পারে।

 

লেবু: চোখের রক্তনালী পরিষ্কারকারী

কমলা লেবু তে প্রচুর ভিটামিন সি থাকে। এটি চোখের রক্তনালী পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে, ছানি পড়ার ঝুঁকি কমায় এবং চোখের বড় রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। চা বা পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে খেতে পারেন।

 

ব্লুবেরি: ছোট কিন্তু শক্তিশালী

বেরিজাতীয় ফল, বিশেষ করে ব্লুবেরি, চোখের জন্য দারুণ। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চোখের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে এবং ফ্রির্যাডিকেলের বিরুদ্ধে লড়াই করে। প্রতিদিন কয়েকটি ব্লুবেরি খেলে চোখের জন্য উপকার পাওয়া যায়।

 

বিশেষ টিপস:

  • ১. প্রতিদিন অন্তত এক ধরণের সবজিও এক ধরণের ফলের স্বাদ গ্রহণ করুন।
  • ২. রান্নারসময় সবজিগুলো বেশি তাপমুক্ত উপায়ে (ভাপা, স্টার-ফ্রাই, স্যুপ) রান্না করুন যাতে ভিটামিন নষ্ট না হয়।
  • ৩. চশমা বা চোখের অন্যান্য সমস্যা থাকলে, খাবারের সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শকে সংযুক্ত রাখুন।

 

চোখ আমাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলোর একটি—দৃষ্টি ভালোথাকলে আমরা আমাদের চারপাশেরজগৎ সুস্পষ্টভাবে উপভোগ করতে পারি। সুস্থচোখের জন্য খাদ্যাভ্যাসে কিছুনির্দিষ্ট ফল ও সবজিঅন্তর্ভুক্ত করা অত্যন্ত জরুরি।গাজর, পালংশাক, ক্যাপসিকাম, ব্রকলি, মিষ্টি আলু, আমলকি, লেবুএবং ব্লুবেরি নিয়মিত খেলে চোখের দৃষ্টিশক্তিরক্ষা ও উন্নত করাসম্ভব। তবে মনে রাখতে হবে, শুধু খাবার খাওয়াই যথেষ্ট নয়। পর্যাপ্ত ঘুম, চোখের বিশ্রাম, এবং প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শও নেওয়া আবশ্যক। খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে এই অভ্যাসগুলো মিলিয়ে নিলে চোখ সুস্থ থাকবে এবং জীবন দেখার আনন্দও বজায় থাকবে।

 

আরও পড়ুন