Ad
Advertisement
Doctor TV

বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫


ডেঙ্গুতে আশঙ্কাজনক হারে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা

Main Image

ছবিঃ প্রতীকী


বর্ষাকাল দক্ষিণ এশিয়ায় নানান রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়ার জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে। এ সময় জমে থাকা ও দূষিত পানি সংক্রমণের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। এর মধ্যে সবচেয়ে উদ্বেগজনক রোগ হলো ডেঙ্গু জ্বর, যা এডিস মশার কামড়ে ছড়ায়। কিন্তু বর্ষা পেরিয়ে সেপ্টেম্বরেও ডেঙ্গু তার প্রভাব বিস্তার করেই চলছে। চলতি বছর সমগ্র অঞ্চলে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে, এবং শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার হার তুলনামূলকভাবে বেশি। 

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, বর্ষার শেষ প্রান্তে আগামী মাসে ডেঙ্গু সংক্রমণ আরও দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। এ বছরের শুরু থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ১১ হাজার ২৮৯ জন শিশু, এবং মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে ২০ জন। 

তবে ইতিবাচক দিক হলো ডেঙ্গু প্রতিরোধযোগ্য। শিশুদের সুরক্ষায় কিছু কার্যকর ব্যবস্থা নিলে ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব। যদিও প্রতিটি ক্ষেত্রে রোগ গুরুতর আকার ধারণ করে না, তবুও জটিলতা এড়াতে সময়মতো চিকিৎসা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। তাই ডেঙ্গুর উপসর্গ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত তা জানা অপরিহার্য।

 

শিশুদের মধ্যে ডেঙ্গুর উপসর্গ

ডেঙ্গু সাধারণত ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে তুলনামূলক হালকা হয়। তবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে বা দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হলে রোগটি গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে।

শিশুদের মধ্যে সাধারণ লক্ষণগুলো হলো 

- হঠাৎ উচ্চ জ্বর (১০৪°F পর্যন্ত)

  • - তীব্র মাথাব্যথা
  • - চোখের পিছনে ব্যথা
  • - হাড়, জয়েন্ট ও মাংসপেশিতে প্রচণ্ড ব্যথা

    - শরীরজুড়ে লালচে ফুসকুড়ি বা র‍্যাশ

    - ক্ষুধামান্দ্য, বমি বা বমি বমি ভাব

  • - ৬ বছরের নিচে শিশুদের উচ্চ জ্বরের কারণে খিঁচুনি হতে পারে। আবার জ্বর সাধারণত ২–৭ দিন স্থায়ী হয় এবং এর ৩–৪ দিন পর শরীরে র‍্যাশ দেখা দেয়।

 

কখন ডাক্তার দেখাবেন

যদি শিশুর মধ্যে এসব উপসর্গ দেখা দেয়, দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে নিতে হবে। চিকিৎসক সাধারণত শিশুর স্বাস্থ্য ইতিহাস জানবেন, শারীরিক পরীক্ষা করবেন এবং রক্ত পরীক্ষা (যেমন IgM অ্যান্টিবডি, PCR বা NS1 অ্যান্টিজেন টেস্ট) করে ডেঙ্গু শনাক্ত করবেন।

 

ডেঙ্গুর চিকিৎসা

ডেঙ্গুর নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ নেই। চিকিৎসা মূলত উপসর্গ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে করা হয়। শিশুকে বিশ্রামে রাখতে হবে, জ্বর ও ব্যথা কমাতে শুধু প্যারাসিটামল দেওয়া যাবে, কখনোই অ্যাসপিরিন বা আইবুপ্রোফেন নয়। শিশুকে পর্যাপ্ত তরল ও পানি খাওয়াতে হবে এবং পানিশূন্যতা রোধে নজর দিতে হবে।

জ্বর নামার সময় (সাধারণত ৩–৭ দিনের মধ্যে) জটিলতা দেখা দিতে পারে। এ সময় ডেঙ্গু গুরুতর আকারে (Severe Dengue বা Dengue Hemorrhagic Fever) রূপ নিতে পারে, যা জীবনঘাতী এবং জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন।

 

ডেঙ্গু প্রতিরোধের উপায়

প্রতিরোধের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো মশার কামড় এড়ানো। এজন্য

  • - দরজা-জানালায় জালি ব্যবহার করুন
  • - জালি না থাকলে জানালা-দরজা বন্ধ রাখুন
  • - শিশুদের পূর্ণহাতা জামা, লম্বা প্যান্ট, মোজা ও জুতা পরান
  • - ভোর ও সন্ধ্যায় বাইরে যাওয়া কমান
  • - বাইরে গেলে মশা প্রতিরোধক ব্যবহার করুন

 

আরও পড়ুন