ছবিঃ সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে বৈশ্বিক সহায়তা তহবিলে ব্যাপক কাটছাঁটের ফলে আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য খাতে অর্থায়ন কমে ১৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন স্তরে পৌঁছাবে, বুধবার প্রকাশিত এক গবেষণায় এমন সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। গবেষকরা বলছেন, এতে করে বিশ্ব “গ্লোবাল হেলথ অস্টেরিটি” বা বৈশ্বিক স্বাস্থ্য খাতে মিতব্যয়িতার এক নতুন যুগে প্রবেশ করছে।
বিশ্বখ্যাত দ্য ল্যানসেট সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণা অনুযায়ী, বিশ্বের দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য নির্ভরযোগ্য স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী আন্তর্জাতিক সহায়তা ২০২৫ সালে নাটকীয়ভাবে হ্রাস পাচ্ছে। সবচেয়ে বড় এই ছাঁটাই এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে, যেখানে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন গত বছরের তুলনায় কমিয়ে দিয়েছে ৬৭ শতাংশ।
ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্য প্রায় ৪০ শতাংশ, ফ্রান্স ৩৩ শতাংশ এবং জার্মানি ১২ শতাংশ স্বাস্থ্য সহায়তা কমানোর ঘোষণা দিয়েছে।
করোনা মহামারির সময় ২০২১ সালে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সহায়তা পৌঁছেছিল ৮০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত। কিন্তু চলতি বছর তা কমে ৩৯ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়াবে বলে গবেষকরা জানিয়েছেন, যা ২০০৯ সালের পর সর্বনিম্ন।
এ অবস্থাকে ‘গুরুতর পরিবর্তন’ উল্লেখ করে গবেষকরা বলছেন, এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়বে সাব সাহারান আফ্রিকার দেশগুলোর ওপর। বিশেষ করে সোমালিয়া, সংঘাতপীড়িত কঙ্গো এবং মালাওয়ির মতো দেশগুলোর স্বাস্থ্যব্যবস্থা মূলত আন্তর্জাতিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল।
এই তহবিল সংকোচনের ফলে এইচআইভি/এইডস, যক্ষা ও ম্যালেরিয়ার মতো মারাত্মক রোগের চিকিৎসা ও প্রতিরোধ কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে বলে গবেষণায় সতর্ক করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক Institute for Health Metrics and Evaluation (IHME)-এর গবেষকরা আহ্বান জানিয়েছেন, দ্রুত আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সহায়তা বৃদ্ধি করতে হবে। সেইসঙ্গে বিকল্প উৎস থেকেও অর্থ সংগ্রহের প্রস্তুতি নিতে হবে দেশগুলোকে।
গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে এমন এক সময়ে, যখন রুয়ান্ডার রাজধানী কিগালিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক এইচআইভি বিজ্ঞান সম্মেলন।
অন্যদিকে, দ্য ল্যানসেট-এর আরও একটি গবেষণায় আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা হ্রাসের ফলে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে অন্তত ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষের অপ্রয়োজনীয় মৃত্যু ঘটতে পারে, যা প্রথম বিশ্বযুদ্ধে নিহত সেনাদের সংখ্যাকেও ছাড়িয়ে যাবে।
আরও পড়ুন