বাংলাদেশ ফার্মাসিস্ট ফোরাম
আন্তর্জাতিক মানের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের কাছে ৬ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ফার্মাসিস্ট ফোরাম। সংগঠনের সভাপতি মো. আজিবুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মেহেদী হাসান তানভীর স্বাক্ষরিত ৬ দফা দাবি স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর উপস্থাপন করেন। পরে দেশের প্রায় ৩০ হাজার গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্টদের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের প্রধান এ কে আজাদের কাছে বাংলাদেশ ফার্মাসিস্টস ফোরামের পক্ষ থেকে এ লিখিত সুপারিশ জমা দেওয়া হয়।
স্বাস্থ্য খাতের জন্য বাংলাদেশ ফার্মাসিস্ট ফোরামের সুপারিশগুলো হলো-
১। উন্নত বিশ্বের হাসপাতালগুলোতে যেখানে গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্টরা (হসপিটাল ফার্মাসিস্ট), বহির্বিভাগ, জরুরি বিভাগসহ সকল বিভাগ এমনকি হাসপাতালের ওয়ার্ডেও সফলতার সঙ্গে চিকিৎসক এবং নার্সদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে। সেখানে ১৯৬৫ সালে ফার্মেসি শিক্ষা চালু হলেও আজও বাংলাদেশে প্রকৃত হাসপাতাল ফার্মাসিস্ট (গ্র্যাজুয়েট) নিয়োগ হয়নি বলে দেশের রোগীরা ওষুধ পাচ্ছে ঠিকই কিন্তু তার ভুল ব্যবহার, সঠিক ডোজের অভাবসহ নানা সমস্যায় পড়ছেন। এমনকি ভুল ওষুধ সেবনে দেশে মৃত্যুর মতো বেশ কিছু ঘটনা ঘটতে দেখা গিয়েছে। বাংলাদেশের চিকিৎসা সেবাকে উন্নত বিশ্বের মতো সফল করে গড়ে তুলতে হাসপাতালে গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্ট নিয়োগ প্রয়োজন।
২। একজন স্বনামধন্য ফার্মাসিস্টকে বাংলাদেশ সরকারের একমাত্র সরকারি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এসেনশিয়াল ড্রাগস কম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ায় ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞ।
৩। পরবর্তীতে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ডিরেক্টর জেনারেল পদটি একজন স্বনামধন্য গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্টের জন্য নির্ধারণ করতে হবে।
৪। ওষুধ প্রশাসনের প্রতিটি জেলা অফিসে অন্তত ২ জন গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্ট নিয়োগ প্রয়োজন।
৫। স্বাস্থ্য সংস্কার বিষয়ক কমিটিতে একজন গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্ট অন্তর্ভুক্তকরণের জন্য বিশেষ অনুরোধ।
৬। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য বিষয়ক সকল কমিটিতে একজন গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্ট অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ফার্মাসিস্ট ফোরাম, বাংলাদেশ (সংক্ষেপে বিপিএফ) একটি অরাজনৈতিক, পেশাজীবী সংগঠন। দেশের ফার্মেসি পেশার বিকাশ, উন্নয়ন, ফার্মেসিসংক্রান্ত শিক্ষার ক্রমাগত মানোন্নয়ন, জাতীয় ওষুধনীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, ফার্মাসিস্টদের পেশাগত স্বার্থ রক্ষা ইত্যাদি বিবিধ বিষয় নিয়ে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এসংক্রান্ত অন্যান্য সংস্থার সাথে কাজ করে আসছে। যাদের মধ্যে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর, ফার্মেসি কাউন্সিল অব বাংলাদেশ, ওষুধশিল্প সমিতি ইত্যাদি অন্যতম। ১৯৬৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশের সর্বপ্রথম ফার্মেসি বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে দেশে ৪৩টি সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসি বিভাগ থেকে শিক্ষা ও গবেষণা পরিচালিত হচ্ছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উত্তীর্ণ গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্টরা সম্মানের সাথে দেশে ও বিদেশের বিভিন্ন ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও কমিউনিটি ফার্মেসিগুলোতে পেশাগত কাজে নিয়োজিত রয়েছে। দেশে-বিদেশে মিলিয়ে বর্তমানে সংগঠনের সদস্যসংখ্যা ৩০ হাজারেরও অধিক।
আরও পড়ুন