Advertisement
Doctor TV

বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫


স্বতন্ত্র বিধিমালা ও সহজে নিবন্ধন করার দাবি মেডিকেল ডিভাইস ব্যবসায়ীদের

Main Image

মেডিকেল ডিভাইস ব্যবসায়ী সমিতির সম্মিলিত জোটের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন


জনগণের উন্নত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে সব ধরনের মেডিকেল ডিভাইস, যন্ত্রপাতি ও ডায়াগনস্টিক রি-এজেন্টর মান নিয়ন্ত্রণ ও সঠিক ব্যবস্থাপনায় স্বতন্ত্র বিধিমালার দাবি জানিয়েছেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে মেডিকেল ডিভাইস ব্যবসায়ী সমিতির সম্মিলিত জোটের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান ব্যবসায়ীরা। তাদের অভিযোগ, ডিভাইস নিবন্ধনের নামে সরকারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর (ডিজিডিএ) হয়রানি ও স্বেচ্ছাচারিতা করছে। নিবন্ধন পেতে তাদের উৎকোচ দিতে হয়। এ ছাড়াও প্রতিবেশী ভারতে নিবন্ধন পেতে মাত্র ১০ ডলার খরচ হয়। অথচ, বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের খরচ হয় ৬৫ হাজার টাকা, সঙ্গে আছে জটিলতাও। স্বতন্ত্র বিধিমালা হলে এসব সমস্যার সমাধান হতে পারে বলে মনে করছেন তারা।

 

এ সময় ডায়াগনস্টিক রি-এজেন্ট অ্যান্ড ইকুইপমেন্ট ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম খান (আবু) মূল বক্তব্য তুলে ধরেন। এছাড়া বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ মেডিকেল ইকুইপমেন্টস অ্যান্ড হসপিটাল ইক্যুইপমেন্ট ডিলার্স অ্যান্ড এমএফআরএস অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি আতিকুর রহমান, বিএমএ ভবন শপ ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. রিয়াজুল ইসলাম ও বাংলাদেশ মেডিকেল ইক্যুইপমেন্ট ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড সাপ্লাইয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আরশেদুল আলম পুলক।

 

আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় মেডিকেল ডিভাইস ও রোগ নির্ণয়ের উপকরণ তথা রি-এজেন্ট সম্পূর্ণ আমদানি নির্ভর। দীর্ঘদিন ধরে আমরা সুনামের সঙ্গে ডায়াগনস্টিক সরঞ্জামাদি, যন্ত্রপাতি ও রি-এজেন্ট আমদানি করে দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল ও ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে সরবরাহ করে আসছি। ১৯৪০ সালের ড্রাগ অ্যাক্ট ও ১৯৮০ সালের নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ অনুযায়ী মানবদেহের বাইরে ব্যবহৃত মেডিকেল ডিভাইস ও ডায়গনস্টিক রি-এজেন্ট ঔষধের সংজ্ঞাভুক্ত না হওয়ায় এসব পণ্য আমদানিতে কোনো অনুমতি নেওয়া লাগতো। সম্প্রতি ওই অধ্যাদেশ বাতিল করে ঔষধ ও কসমেটিকস আইন-২০২৩ প্রণয়ন করেছে সরকার।

 

তিনি বলেন, এই আইনের মাধ্যমে মেডিকেল ডিভাইস ও রিএজেন্টকে অন্তর্ভুক্ত করে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পাশাপাশি বিধিমালা প্রণয়নের কথাও স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে। আমরা চাই সে অনুযায়ী নিবন্ধনের স্বতন্ত্র আইন ও যুগোপযোগী বিধিমালা প্রণয়ন করা হোক। এজন্য ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য, ব্যবহারকারী ডায়াগনস্টিক ও হাসপাতালের মালিক সমিতির প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞদের নিয়ে মেডিকেল ডিভাইস এক্সপার্ট কমিটি গঠন করা যেতে পারে।

 

আমিনুল ইসলাম বলেন, ঔষধ প্রস্তুতে ব্যবহৃত রেসিপি অনুমোদনে নিবন্ধন করতে হয়। কিন্তু মেডিকেল ডিভাইসের যেহেতু ৯৫ ভাগই আমদানি নির্ভর, তাই এই রেসিপি অনুমোদন প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। আমাদের আমদানি করা ডিভাইস ইউএস-এফডিএ অথবা সিএ ও আইএসও সনদপ্রাপ্ত। তারপরও ফ্রি সেল সার্টিফিকেট জমা দিতে হয়। এটি আবার বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে সত্যায়িত করতে হয়, যা সময় সাপেক্ষ। যার কারণে স্বাভাবিক আমদানি প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত ও বিলম্ব হয়।

 

এই আমদানিকারক বলেন, আমরা বিদ্যমান ঔষধ ও কসমেটিকস আইন থেকে মুক্তি ও তার পরিবর্তে স্বতন্ত্র বিধিমালা চাই। পাশাপাশি নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজতর করা, নিবন্ধন ফি ক্যাটাগরি অনুযায়ী এক হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা করার দাবি জানাচ্ছি। এগুলো বাস্তবায়ন করা গেলে রোগীর রোগ নির্ণয় ফি কমে আসবে।

 

এ সময় আতিকুর রহমান বলেন, ‘ঔষধ ও কসমেটিকসের আইনের মাধ্যমে আমাদের নাকানিচুবানি খাওয়ানো হচ্ছে। বিগত দিনে করোনা মহামারি মোকাবিলা ও ডেঙ্গু মহামারিতে দ্রুত রি-এজেন্ট এনে আমরা সহযোগিতা করেছি। তাহলে কেন আমাদের এ আইনের অধীনে বেঁধে ফেলা হবে। নিবন্ধনের নামে ডিজিডিএ যে কেলেঙ্কারি করা হয়, তা বলার মতো নয়। আমার চাহিদা এক লাখ পিস, অথচ তারা অনুমতি দিচ্ছে ২০ হাজার। এসব কারণে লাগেজ পার্টির মাধ্যমে নকল ডিভাইস দেশে প্রবেশ করছে। কাজেই সস্তা ও সহজভাবে সেবা দিতে দরকার স্বতন্ত্র বিধিমালা।’

 

আরেক আমদানিকারক রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘২০১৬ সাল থেকে আমরা স্বতন্ত্র বিধিমালার দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু নানাভাবে আমাদেরকে হয়রানি করা হয়। মেডিকেল ডিভাইস পরীক্ষার সক্ষমতা না থাকা স্বত্বেও ডিজিডিএ-কে আমাদের পরীক্ষা দিতে হয়। নিবন্ধন থাকার পরও নানা ভ্যাট চাপিয়ে দেওয়ায় ডিভাইসের দাম বেড়ে যায়। যার প্রভাব পড়ে রোগীদের ওপর।’

আরও পড়ুন