Advertisement
Doctor TV

বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫


মরণোত্তর অঙ্গ দান করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন সারা

Main Image

অঙ্গ প্রতিস্থাপনে দৃষ্টান্ত স্থাপন


বিএসএমএম প্রক্টর বলেন, ‘সারা যখন বুঝতে পারেন তার অবস্থা ভালো না, সেই মুহূর্তে মাকে বলে যান মৃত্যুর পর যেন তার পুরো দেহটাই দান করা হয়। মৃত্যুর পর তার মা আমাদের বিষয়টি জানান। তার সম্মতিতেই পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়। আমাদের দেশে হার্ট ও লিভার ট্রানপ্ল্যান্ট এখনও সেভাবে শুরু হয়নি বলে এ দুটি অঙ্গ নেয়া হয়নি। সেগুলোর ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’

মরণোত্তর অঙ্গ দান করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন ২০ বছর বয়সী সারা ইসলাম। তার দুটি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয় দুই নারীর শরীরে। আর কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করা হবে আরও দুজনের চোখে। অবশ্য মৃত্যুর আগে মুহূর্তে সারা তার পুরোটাই দান করে দিতে তার মাকে বলে গেছেন।

সারার অঙ্গদানের অস্ত্রোপচারে নেতৃত্ব দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএম) প্রক্টর ও ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক হাবিবুর রহমান দুলাল।

সারার মায়ের বরাত দিয়ে ডা. দুলাল জানান, জন্মের ১০ মাস বয়সে দুরারোগ্য টিউবেরাস স্কোলোরোসিস রোগে আক্রান্ত হন সারা। এ রোগের সঙ্গে তিনি লড়াই করে এসেছেন ১৯টি বছর। জীবনের সঙ্গে তার এই লড়াইয়ের মাঝেও কোনো কিছুই থেমে থাকেনি তার।

সারার মা শিক্ষক শবনম সুলতানা ও বাবা শহীদুল ইসলাম। তাদের বড় সন্তান সারা ইসলাম। সারার একটি ছোট ভাই আছে।

অগ্রণী গার্লস স্কুল থেকে এসএসসি ও হলিক্রস কলেজ থেকে এইচএসসি দুটিতেই ভালো রেজাল্ট করেন সারা। এরপর তিনি ভর্তি হন ইউনিভার্সিটি অফ ডেভলভমেন্ট অলটারনেটিভে (ইউডা) ফাইন আর্টসে। তিনি ফাইন আর্টসের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। হয়ে উঠেছিলেন ভালো চিত্রশিল্পী।

সারা ইসলামের দুটি কিডনির একটি মিরপুরের বাসিন্দা ৩৪ বছর বয়সী শামীমা আক্তারের শরীরে এবং আরেকটি কিডনি ফাউন্ডেশনে অন্য আরেকজনের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়। কর্ণিয়া দুটিও প্রতিস্থাপন করা হবে।

বিএসএমএম প্রক্টর বলেন, ‘সারা বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা নিতে আসেন। চারদিন আগে ব্রেন অপারেশনের জন্য তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে অবস্থা খারাপ হলে আবার আমাদের এখানে নিয়ে আসা হয়।

‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, যখন সারা বুঝতে পারেন তার অবস্থা ভালো না, সেই মুহূর্তে মাকে বলে যান মৃত্যুর পর যেন তার অঙ্গ দান করা হয়। মৃত্যুর পর তার মা আমাদের বিষয়টি জানান। তার সম্মতিতেই পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়।

এত অল্প বয়সে এবং মৃত্যুর আগ মুহূর্তে অঙ্গদান করে নজির সৃষ্টি করে গেলেন সারা। এভাবে সবাই এগিয়ে এলে যারা কোনো অঙ্গে ত্রুটি নিয়ে বেঁচে আছেন, তারা সুন্দরভাবে জীবন কাটাতে পারবেন।

গত বৃহস্পতিবার (১৯অক্টোবর) সকাল ৮টায় বঙ্গবন্ধু বিএসএমএমইউ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে প্রয়াত সারা ইসলামের নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়।

আরও পড়ুন