Advertisement
Doctor TV

বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫


উপজেলা হাসপাতালে নারীর স্বাস্থ্যসেবা

Main Image

হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ড


আজ ২৮ মে, আন্তর্জাতিক নারী স্বাস্থ্য দিবস। দিনটি বিশ্বের বিভিন্ন নারী সংগঠন ও স্বাস্থ্য সংগঠনের কাছে অত্যন্ত আলোচিত। 

দিবসটি পালনের উদ্দেশ্য হচ্ছে- মানুষকে নারীর স্বাস্থ্য ও অধিকার সম্পর্কে অবগত করা। এই দিন যুদ্ধ ঘোষণা করছে সামাজিক ও লিঙ্গ বৈষম্যের বিরুদ্ধে যা নারীর অধিকারকে প্রতিনিয়ত ক্ষুন্ন করছে। এই দিনটি নারীকে তার যৌন ও প্রজনন অধিকার সম্পর্কে সচেতন করে। পাশাপাশি প্রজনন স্বাস্থ্যে উপর নারীর অধিপত্য প্রতিষ্ঠার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।

নারী স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বাংলাদেশ সরকার প্রাথমিক পর্যায়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা সুনিশ্চিত করেছে। নারী স্বাস্থ্য রক্ষায় যেসব সেবা উপজেলা পর্যায়ে দেয়া হয়, তার বিবরণ নিচে দেয়া হলো। 

প্রসব পূর্ব কর্ণার (এএনবি কর্ণার)ঃ গর্ভকালীন এবং প্রসব পরবর্তী নিয়মিত চেকআপ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়। একজন চিকিৎসক ও একজন মিডওয়াইফ এটি সমন্বয় করেন। 

গাইনী বহিঃবিভাগঃ এখান থেকে প্রতিদিন নারী ও মায়েদের বেশকিছু রোগের চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়ে থাকে। সেগুলো হলো : 

১. মূত্রনালীর সংক্রমণ: জ্বর, তলপেটে ব্যথা, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া নিয়ে রোগীরা আসেন। প্রস্রাব পরীক্ষার ফলাফল দেখে উপযুক্ত ওষুধ প্রয়োগ করে সংক্রমণ নির্মূল করা হয়। যে কোন বয়সের নারীরা এই সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারেন। 

২. মাসিকের অনিয়ম : বয়ঃসন্ধিকাল থেকে মেনোপেজে যাওয়ার আগ পর্যন্ত মাসিকের সমস্যা নিয়ে নারীরা চিকিৎসকের কাছে আসেন। বয়সভেদে অনিয়মিত মাসিকের কারণও ভিন্ন হয়। এই ভিন্ন ভিন্ন কারণ ও ইতিহাস জেনে সঙ্গে পরীক্ষার ফলাফল বিবেচনা করে চিকিৎসা দেয়া  হয়। 

৩. বন্ধ্যাত্ব : বন্ধ্যাত্ব দুই ধরনের হতে পারে। 

এর প্রথমটি হলো: নির্দিষ্ট সময় চেষ্টার পরও কোন বাচ্চা নেই। অন্যটি হলো: একটি সন্তান আছে। তারপর আর হচ্ছে না। 

দুই ধরনের রোগীকেই প্রাথমিকভাবে কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা দেয়া হয়। পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে চিকিৎসা দেয়া হয়। অবশ্য এই পরীক্ষাগুলো উপজেলা হাসপাতালে করা হয় না। বাহির থেকে করাতে হয়। 

৪. পলি সিস্টিক ওভারিঃ 

এই সমস্যায় আক্রান্ত নিয়ে নারীরা আসেন অতিরিক্ত ওজন, মাসিকের ব্যথা ও বন্ধ্যাত্ব নিয়ে। বয়সভেদে সমস্যার প্রকোপের উপর ভিত্তি করে চিকিৎসা আলাদা হয়ে থাকে। 

৫. যোনীপথের প্রদাহঃ

অতিরিক্ত সাদা স্রাব, মাসিকের রাস্তায় চুলকানি যোনীপথের প্রদাহের উপসর্গ। গাইনী বহিঃবিভাগে এই সমস্যা নিয়ে সবচেয়ে বেশি রোগী এসে থাকে। 

৬. মেনোপজঃ এটি কোন রোগ নয়। নির্দিষ্ট বয়স শেষে নারীর মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরবর্তী অবস্থা। এই সময়ে নারীরা বেশকিছু সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকদের কাছে আসেন। 

৭. ভায়া সেন্টারঃ জরায়ুর মুখে ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা পর্যক্ষেণের জন্য প্রতিটি উপজেলা হাসপাতালে বিনা খরচে ভায়া পরীক্ষা করা হয়। পাশাপাশি স্তন ক্যান্সার শনাক্ত ও দ্রুত চিকিৎসার জন্য স্তন পরীক্ষা করা হয়। একজন প্রশিক্ষিত নার্স এই কার্যক্রম পরিচালনা করেন।

পরিবার পরিকল্পনা : নারীর যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও পনিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার নির্দেশনায় সম্পূর্ণ বিনামূল্যে একজন নারীর জন্য উপযুক্ত পদ্ধতি নির্ধারণ ও প্রয়োগ করা হয়।  

 

লেখক : 

ডা: ফাইরুজ পারভীন তানিয়া
জুনিয়র কনসালট্যান্ট
গাইনি ও প্রসূতি বিভাগ

আরও পড়ুন