Advertisement
Doctor TV

বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫


ই-সিগারেট নিয়ন্ত্রণে কঠোর হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া

Main Image

ই-সিগারেট


জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি বিবেচনায় ই-সিগারেটের বেশ কিছু ধরণ নিষিদ্ধ এবং বাকি গুলোর উপর বিধিনিষেধ আরোপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। দেশটির ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ই-সিগারেট ব্যবহারের নিয়মে সংস্কার আনার পরামর্শ দেয়ার পরই সরকারের পক্ষ থেকে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হলো।

সূত্র :  বিবিসি।

উল্লেখ্য, অস্ট্রেলিয়ায় ওষুধের দোকানেও ই-সিগারেট পাওয়া যায়। এমনকি সেখানকার চিকিৎসকরাও মাঝেমধ্যে এটি ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে প্রেসক্রিপশন করে থাকেন।

এই সুযোগে নিম্নমানের ই-সিগারেটে বাজার সয়লাব হয়ে গেছে। কালোবাজার থেকেও সহজেই নিম্নমানের পণ্য ব্যবহারকারীর হাতে পৌঁছে যাচ্ছে।

এ কারণে ন্যূনতম মান যাচাইয়ের ব্যবস্থার পাশাপাশি ফার্মেসিতে ই-সিগারেট বিক্রি সীমিত করার সিদ্ধান্ত বলে জানান দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী মার্ক বাটলার। মঙ্গলবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এই পণ্যের কারণে অস্ট্রেলিয়ায় নিকোটিনে আসক্ত এক তরুণ প্রজন্ম গড়ে উঠছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাটলার বলেন, বড় বড় তামাক কোম্পানিগুলো ধূমপানের মতই  আরেকটি আসক্তিমূলক পণ্য বাজারে এনেছে। এটিকে চকচকে মোড়কে মুড়েছে। শুধু তাই নয়, নিকোটিন আসক্ত নতুন প্রজন্ম তৈরিতে মিষ্টি স্বাদ যোগ করেছে। এর মাধ্যমে প্রতারিত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

সাধারণ সিগারেটের তুলনায় অনেকেই ই-সিগারেটকে নিরাপদ মনে করেন। তাদের যুক্তি, সেগুলোতে ক্ষতিকারক তামাক থাকে না। 

কিন্তু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের অভিমত, ই-সিগারেট কোনো দিক দিয়েই ঝুঁকিমুক্ত নয়। কারণ, সেগুলোতেও রাসায়নিক পদার্থ থাকে। 

ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করার পেছনে অস্ট্রেলিয়া সরকারের যুক্তি হচ্ছে, পণ্যটি জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, এটি তরুণদের মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এমন অনেক তরুণ ভ্যাপ গ্রহণ করছেন যাদের অতীতে ধূমপানের অভ্যাস ছিল না।


এক গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, অস্ট্রেলিয়ায় ১৪ থেকে ১৭ বছর বয়সের কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে প্রতি ছয়জনে একজন ভ্যাপ গ্রহণ করে। ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের মধ্যে এই অনুপাত প্রতি চারজনে একজন।


৫২ বছর বয়সের বাটলার মজার ছলে বলেন, শুধুমাত্র আমার বয়সীদের বেলায় প্রতি ৭০ জনে একজন ভ্যাপ গ্রহণ করেন।

তিনি বলেন, এই পণ্যটি ‘ইচ্ছাকৃতভাবে’ শিশুদের লক্ষ্য করেই উৎপাদন করা হয়। এবং কোম্পানিগুলো খুচরা পণ্যের দোকানে ‘ললি ও চকলেট বারের সাথেই ভ্যাপ রাখছে’।

তিনি আরও বলেন, হাই স্কুলগুলোতে ভ্যাপিং এখন আচরণগত সমস্যার তালিকায় এক নম্বরে উঠে গেছে।

প্রেসক্রিপশন ছাড়া ই-সিগারেট রাখলে সম্ভাব্য কী শাস্তির বিধান দেওয়া যায় তা নিয়ে অস্ট্রেলিয়া সরকার রাজ্য এবং অঞ্চলিক সরকারগুলোর সঙ্গে কাজ করবে বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।


বিশ্বের যেসব দেশে ধূমপানের বিরুদ্ধে কঠোর আইন রয়েছে অস্ট্রেলিয়া ‍তার একটি। মূলত ধূমপানের ব্যবহার কমানোর কথা বলে বাজারে নতুন পণ্য হিসেবে ই-সিগারেট আনা হয়েছিল।

বাটলার বলেন, ই-সিগারেটের কারণে ধূমপান কমেছে, উন্নত দেশগুলোর মধ্যে এমন তালিকা করলে অস্ট্রেলিয়া নিচের দিকেই থাকবে।

চিকিৎসা প্রয়োজনে যে ধরণগুলো ব্যবহারে চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন সুগুলোও সুন্দর ও চকচকে মোড়কে থাকতে পারবে না। বরং অন্যান্য ওষুধের মত করে সেগুলো মোড়কজাত করতে হবে।


ই-সিগারেটের মধ্যে স্বাদ, রঙ, তরল নিকোটিন এবং অন্যান্য উপাদান ব্যবহারের উপরও বিধিনিষেধ আরোপ করবে দেশটি। তবে কবে নাগাদ এসব নিষেধাজ্ঞা ও বিধিনিষেধ আরোপ হবে তা পরে জানিয়ে দেয়ার কথা বলেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাটলার।


সিঙ্গাপুর ও থাইল্যন্ডের মত অল্প কয়েকটি দেশ ইতোমধ্যে ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করেছে।

আরও পড়ুন