Advertisement
Doctor TV

বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫


২০২২ সালে বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যখাতে যেসব চ্যালেঞ্জ ছিল

Main Image

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা


২০২২ সালে বিশ্বব্যাপী বেশকিছু রোগ ও সমস্যা আমাদের স্বাস্থ্যখাতকে দারুণভাবে প্রভাবিত করেছে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার দেয়া তথ্যের আলোকে সে বিষয়গুলো ডক্টর টিভি অনলাইনের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো। 

২০২২ এ কোভিড-১৯ মহামারী এবং এমপক্স (পূর্বে মাঙ্কিপক্স) এর বিশ্বব্যাপী প্রাদুর্ভাবের আরও একটি বছর কাটিয়েছি আমরা। ইথিওপিয়া এবং ইউক্রেনের জনগণ যুদ্ধের ফলে মৃত্যু ও ধ্বংসের মুখোমুখি হয়েছে। উগান্ডায় ইবোলা আঘাত হানে, একাধিক দেশ কলেরার প্রাদুর্ভাবের মুখোমুখি হয়েছে। খরা এবং বন্যা আফ্রিকার বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে অপুষ্টি এবং রোগকে ব্যাপক হারে বৃদ্ধি করেছে। পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যা স্বাস্থ্য পরিষেবার উপর বিরাট চাপ সৃষ্টি করেছে।

এতকিছুর পর অনেকগুলো বিষয় আমাদের আশার আলো দেখিয়েছে। 

এ সময়ে কোভিড-১৯ মহামারীর তান্ডব উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। বিশ্বব্যাপী মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব হ্রাস পাচ্ছে। এমনকি ২৭ নভেম্বর থেকে উগান্ডায় ইবোলা সংক্রমণের কোনও ঘটনা ঘটেনি।

উপরোক্ত বিষয়গুলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে (ডব্লিউএইচও) আশাবাদী করেছে। সংশ্লিষ্টদের বিশ্বাস, প্রতিটি জরুরী অবস্থা পরের বছর বিভিন্ন পয়েন্টে ঘোষণা করা হবে।

ভবিষ্যৎ মহামারীর জন্য প্রস্তুতি :

ডাব্লুএইচও এই মহামারী থেকে শেখার গুরুত্বের উপর জোর দেওয়া অব্যাহত রেখেছে যাতে আমরা পরবর্তীটির জন্য আরও ভালভাবে প্রস্তুত হতে পারি। সেপ্টেম্বরে নতুন মহামারী তহবিল প্রতিষ্ঠা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। দক্ষিণ আফ্রিকায় একটি mRNA প্রযুক্তি স্থানান্তর হাব তৈরি করা, নিম্ন- এবং নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশগুলিকে তাদের নিজস্ব mRNA ভ্যাকসিনগুলি কীভাবে দ্রুত উৎপাদন করতে হয় তা জানার জন্য। তৃতীয়টি হল, মহামারী প্রস্তুতি এবং প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক চুক্তিতে আলোচনার জন্য দেশগুলির প্রতিশ্রুতি। ২০২৩  সালের ফেব্রুয়ারিতে সদস্য দেশগুলির দ্বারা একটি শূন্য খসড়া আলোচনা করা হবে।

মাঙ্কিপক্স :

মাঙ্কিপক্স, যা এখন এমপক্স নামে পরিচিত। গত জুলাইয়েেএ বিষয়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এরআগে, রোগটি মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকায় দেখা গেলেও এ বছর তা ১১০টি দেশে ছড়িয়ে পড়ে। মোট শনাক্তকৃত রোগীর সংখ্যা ৮৩ হাজারেরও বেশি। সৌভাগ্যবশত, এতে মৃত্যুর হার অনেক কম। মাত্র ৬৬ জনের মৃত্যুর খবর জানা গেছে। 

কোভিড-১৯-এর মতো, সাপ্তাহিক রিপোর্ট করা এমপক্সের সংখ্যা সর্বোচ্চ থেকে ৯০ শতাংশেরও বেশি কমেছে। বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী বছর এই জরুরি অবস্থার অবসান ঘটাতে সক্ষম হবে বিশ্ব।

ইবোলা :

সেপ্টেম্বরে উগান্ডা ও সুদান ইবোলাভাইরাস শনাক্ত হলে সতর্ক হয়ে ওঠে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। গত ১০ বছর ধরে রোগটি নিয়ে কোন তথ্যভিত্তিক ডাটা ছিল না। এ বছর রোগী শনাক্ত, চিকিৎসা ও প্রাদুর্ভাব যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, সে ব্যাপারে কার্যকর উদ্যোগ নেয় উগান্ডা সরকার। যার ফলশ্রুতিতে ইবোলার শেষ দেখতে চলেছে উগান্ডা। 

নতুন আশঙ্কা :

প্রাণঘাতী নানা রোগের মধ্যেই দুর্ভিক্ষ এবং জাতিগত সংঘাত লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন ও স্বাস্থ্যকে হুমকির মুখে ফেলেছে। 

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত খরা এবং বন্যার ফলে আফ্রিকার বিশাল একটি অংশে খাদ্য সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। এছাড়াও কলেরা, হলুদ জ্বর, হাম এবং পোলিওর প্রাদুর্ভাব ঘটছে। 

ডাব্লুএইচও এবং উন্নয়ন অংশীদাররা সংশ্লিষ্ট দেশগুলিতে মৌলিক স্বাস্থ্য পরিষেবা বাড়ানো,  গুরুতর অপুষ্টির চিকিৎসা এবং রোগের প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধ ও সনাক্তকরণে সহায়তা দিচ্ছে। 

নতুন রোগের প্রাদুর্ভাব, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকট এবং অন্যান্য জরুরী অবস্থা ছাড়াও, যুদ্ধ ও সংঘাতে বিপন্ন আফগানিস্তান, ইথিওপিয়া, সিরিয়া, ইউক্রেন এবং ইয়েমেনের লক্ষ লক্ষ মানুষের স্বাস্থ্য ও জীবন- এমনটাই মনে করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। 

আরও পড়ুন