Advertisement
Doctor TV

বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫


বাই পোলার মুড ডিসওর্ডার

Main Image

ডা. সাঈদ এনাম, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ


আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশনের ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড স্ট্যাটিস্টিক্যাল ম্যানুয়াল অব মেন্টাল ডিসঅর্ডার (DSM-5) অনুসারে বাইপোলার ডিসঅর্ডার একটি মানসিক রোগ। ধারণা করা হয়, ব্রেইনের গুরুত্বপূর্ণ নিউরোট্রান্সমিটার ডোপামিন (Dopamine) বেড়ে যাবার কারনে এমনটি হয়ে থাকে।

এটি জনসংখ্যার শতকরা ২'৫ মানুষের ক্ষেত্রে দেখা যায়। তবে তীব্র মানসিক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিকট আত্মীয় বা সন্তানের মধ্যে এর প্রকোপ আরো বেশি দেখা যায়।

গ্রামীন পরিভাষায় অনেকেই এ রোগকে বাতাস লাগা, আলগা লাগা, বায়ুচরা, ভুত লাগা, উপরি ধরা বলে থাকেন।

এ রোগ চেনার অন্যতম সহজ একটি উপায় হলো, এটি সাধারণত এপিসোডিক হয়ে থাকে অর্থাৎ নির্দিষ্ট বা অনির্দিষ্ট বিরতিতে লক্ষন দেখা দেয়৷ সেটা কয়েক মাস বা বছর পর পর হতে পারে। যেমন রোগীর আত্মীয়স্বজন বলে থাকেন, শীত আসলে বা গৃষ্মকাল আসলেই রোগী বায়ু চরে, মেজাজ বিগড়ে বা উপরি ধরে কিংবা অনেক সময় বলেন আমাবস্যা ও পূর্ণিমা আসলেই রগ চটে যায় আবার ক'দিন গেলে ঠান্ডা হয়।

বাইপোলার ডিসঅর্ডার রোগের দুটি পর্ব রয়েছে,
১) হাইপোম্যানিক পর্ব
২) ম্যানিক পর্ব

হাইপোম্যানিক পর্বের লক্ষণ হলো,

* রোগীর মধ্যে মেজাজের তীব্র উঠানামা বা পরিবর্তন,

* রোগী নিজেকে সবার চেয়ে আলাদা বা বড় ভাবেন,

* নিজেকে আধ্যাত্মিক ক্ষমতা সম্পন্ন কেউ ভাবেন,

* তার মধ্যে চরম আত্মসম্মানবোধ প্রকাশ দেখা,

* তার ঘুমের একেবারেই কমে যায়,

* অপ্রয়োজনীয় অতিরিক্ত কথাবার্তা দেখা যায়

* তিনি অনর্গল, অনর্থক কথা বলতে থাকে, অযথা যুক্তিতর্ক প্রদর্শন করতে থাকেন,

* তার চিন্তা ভাবনা একেবারেই বিক্ষিপ্ত, লাগামহীন, এবং সমন্বয়হীন হয়ে যায়,

* তিনি নিজেকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ন কাজে জড়িত করেন। যা কখনো কখনো মারাত্মক হৃদয় বিদারক পরিণতি বয়ে নিয়ে আসে,

* অপ্রয়োজনীয় অবাধ কেনাকাটায় মত্ত থাকা,

* অতিরিক্ত টাকাপয়সার অপচয় করা,

* অতিরিক্ত দান খয়রাত বা উইল করে দেয়া, ইত্যাদি ইত্যাদি।

আর ম্যানিক পর্বে রোগীর ক্ষেত্রে এই উপসর্গগুলি এতটাই তীব্র ও ধ্বংসাত্মক পর্যায়ের হয় যে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতেই হয়।

চিকিৎসাঃ

মুড স্ট্যাবিলাইজার -MOOD STABILIZER ( ভ্যালপ্রয়িক এসিড ভ্যালপ্রোয়েট, লিথিয়াম)
এন্টিসাইকোটিক -ANTIPSYCHOTIC (ওলানজাপাইন, রেসপেরিডন, কিউটিয়াপাইন, হ্যালোপেরিডল)

ম্যানিক রোগীকে অবশ্য-অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। ক্ষেত্রবিশেষে তাদের কে ইনজেকশনের মাধ্যমে এই ঔষধ প্রয়োগ করতে হয়।

রোগী সঠিক চিকিৎসার প্রয়োগে অতি দ্রুত সুস্থ, স্বাভাবিক হয়ে উঠেন।

আরও পড়ুন