Advertisement
Doctor TV

বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫


জ্বরের কিছু সাধারণ তথ্য

Main Image

শিশুর জ্বর : ডা. লুনা পারভীন


জ্বর নিয়ে কিছু প্রশ্নের উত্তর দিবো আজ। উত্তরগুলো সবার বাচ্চার জন্যই, এমন না যে একেক বাচ্চার জন্য নিয়ম একেক রকম। আশা করি যার যা জানার ছিল, এখানে সব উত্তর পেয়ে যাবেন।

১. যেকোনো ভাইরাস জ্বর ৩ থেকে ৫দিন টানা ১০২/১০৩°f আসতে পারে এবং কমলে, ১০১ এর নিচে নাও নামতে পারে। কাজেই জ্বর শুরু হওয়ার পরেরবেলাতেই বা পরের দিন জ্বর কেনো কমছে না, অস্থির হওয়া যাবে না।

২. একদিনে জ্বর কমিয়ে দেয়ার কোনো মেডিসিন বা ম্যাজিক ডাক্তারদের জানা নাই। ভাইরাস জ্বরে এন্টিবায়োটিক কোনো কাজে লাগে না যদি না কোন ইনফেকশনের সোর্স পাওয়া যায় যা অনেকসময় প্রকাশ পেতে ৩দিনও লেগে যায়।

৩. জ্বর হলে বাচ্চা খাওয়াদাওয়া ছেড়ে দিবে, বড়রাও দেয়। এই অরুচি প্রাথমিক কোনো চিকিৎসা নাই। সবার মতো আপনাকেও বুঝিয়ে শুনিয়ে অল্প অল্প করে পানি তরল জাউ স্যুপ শরবত বা বাচ্চা যেটা খেতে চায় ( এমন কিছু দিবেন না যা আবার বমি, পাতলা পায়খানা ঘটায়) তাই খাওয়াবেন। পেশাব যেন অন্তত ৪ বার হয়। মুখে একদমই খেতে না পারলে, পেশাব কমে গেলে, বমি বন্ধ না হলে বা খিচুনি হলে বাচ্চাকে হাসপাতালে নিয়ে যাবেন।

৪. হালকা জ্বরে ( ১০০ থেকে ১০২°) গা মুছে দিবেন, মুখে ঔষধ খাওয়াবেন। একবার ঔষধ খাওয়ানোর পর আবার সিরাপ দিতে অন্তত ৪/৬ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হবে। আর সাপোসিটারী দিতে হলে অন্তত ৪ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হবে।

৫. বেশী জ্বরে ( ১০২° F এর উপরে গেলে) তাড়াতাড়ি জ্বর কমানোর প্রয়োজন হলে সাপোসিটার ব্যবহার করতে পারেন (যদিও এটা বাচ্চাদের জন্য অস্বস্তিকর), এতে জ্বলে সাময়িকভাবে হয়তো ১০২ এর নিচে নামতে পারে তবে পুরোপুরি যাওয়ার সম্ভাবনা কমই ১ম তিনদিনের। একটা সাপোসিটারী দেয়ার ৮ ঘন্টার মধ্যে আরেকটা সাপোসিটারী দিতে পারবেন না। তবে ৪/৬ ঘন্টা পর সিরাপ দিতে পারেন।

৫. জ্বরের ঔষধ ডাবল ডোজে বা ঘন ঘন খাওয়ালে, এন্টিবায়োটিক দিলেই জ্বর ভালো হয়ে যাবে এমন না। ভাইরাসের পরিমানের উপর, কতদিন এরা এক্টিভ থাকে তার উপর জ্বরের স্থায়ীত্ব নির্ভর করে।

৬. জ্বরের ঔষধ খাওয়ানোর চেয়ে বাচ্চার যত্ন নিন, ভিজা গামছা বা সুতি কাপড় দিয়ে গা মুছে দিন, গরম ও নরম খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করুন, সবচেয়ে বড় কথা বাচ্চাকে বিশ্রাম নিতে দিন। ভালো ঘুমাতে দিন, ঘুমের মধ্যে জ্বর থাকলেও তাকে ঘুম ভাঙিয়ে জ্বরের ঔষধ খাওয়ানোর দরকার নাই।

৭. থার্মোমিটার দিয়ে মেপে জ্বর ১০০ বা বেশী পেলেই জ্বরের ঔষধ খাওয়াবেন। গায়ে হাত দিয়ে গরম লাগা, জ্বর ৯৮, ৯৯° ; জ্বরের আগে শীত শীতভাব, অস্থির করা জ্বরের ঔষধ খাওয়ানোর কোন কারণ হতে পারে না।

৮. বাচ্চাদের এসিডিটি কম হয়, তাই একদম সম্ভব না হলে, খালিপেটে জ্বরের ঔষধ দিতে পারবেন।

৯. জ্বর হলে বাচ্চা এক আধটু বমি হতে পারে, কিছু জ্বরের ঔষধেও বাচ্চাদের বমি হয়। এসব ক্ষেত্রে বমির ঔষধ লাগে না, প্রয়োজনে জ্বরের ঔষধ পাল্টান।

ডেঙ্গু সিজন এখন। পাশাপাশি করোনার প্রকোপ আবার বাড়ছে। কাজেই সন্দেহ হলেই আশেপাশে শিশু বিশেষজ্ঞ দেখিয়ে টেস্ট করে নিবেন। আপনার শিশুকে সাবধানে রাখুন ও সবাই সুস্থ থাকুন। ধন্যবাদ!

আরও পড়ুন