Advertisement
Doctor TV

বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫


কাউন্সেলিং : চিকিৎসা পেশার প্রাণ

Main Image

কাউন্সেলিং :: ডা. মো. তরিকুল হাসান


মেধাবীরা সাধারণত ইন্ট্রোভার্ট হয়। তারা সাধারণত মানুষজনের সাথে মিশতে চান না। কথাবার্তা কম বলেন। মেডিকেলে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করেন। তাদের অনেকেই কথা কম বলেন।

মেডিকেল শিক্ষাব্যবস্থা ও পাঠ্যক্রমে কাউন্সেলিং এর গুরুত্ব আরো বাড়ানো উচিত। আমরা বোধহয় এ ব্যাপারে কম আন্তরিকতা প্রকাশ করছি।

তাছাড়া, দীর্ঘ সময় নিয়ে কথা বলার পূর্বশর্ত হাতে সময় থাকা। নির্দিষ্ট সময়ে অসংখ্য রোগীর চাপ থাকলে তা করা সম্ভব হয় না। ফলে রোগীর গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য রোগীর স্বজনকে দেয়া সম্ভব হয় না।

আবার, বোঝার সক্ষমতা সবার সমান নয়। কেউ অল্প কথাতেই বুঝে যান আবার কাউকে অনেক সময় বোঝানোর পরও কাজের কাজ কিছুই হয়না।

সমস্যা হলো চিকিৎসা পেশার প্রাণ হলো কাউন্সেলিং। তাই প্রায়শই এক্ষেত্রে গ্যাপ হয়ে যায়। বিশেষত, পাবলিক হাসপাতালে রোগী ও তার স্বজনদের সাথে প্রচুর কথা বলতে হয়। নানা কারণে এতে গ্যাপ হয়ে যায়।

একটা উদাহরণ দিচ্ছি..

দেখা গেল রোগীর স্বজনকে খুব ভালোভাবে বলা হয়েছে, 'অজ্ঞান রোগীকে নাকের নল দিয়ে বসিয়ে খাওয়াবেন। খাওয়ানোর পরও বিশ মিনিট বসিয়ে রাখবেন।' ঘন্টা দুই পর রোগীর কাছে গিয়ে দেখলেন তাকে শুইয়ে খাওয়ানো হচ্ছে।

কি ব্যাপার?

জানতে পারা গেলো রোগীর যে স্বজনকে ভালোভাবে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছিল, সে বাড়ী চলে গেছে। বদলী লোককে কিছুই বলে যায়নি।

এদিকে, বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় নানা ধরনের সংকট রয়েছে। এই সংকটে কেবল যে রোগীরা বঞ্চনার শিকার তা নয়। চিকিৎসকরাও বঞ্চনার শিকার। সেই বঞ্চনার গল্প পাবলিক ফোরামে নাই বা বললাম।

অতএব, দেখা যাচ্ছে, কাউন্সেলিং একটি বহুমুখী বিষয়। এতে চিকিৎসক-রোগী-রোগীর স্বজন-ব্যাবস্থাপনা সবই জড়িত। এর উত্তরনে সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।

রোগীর চাপ কমানোর জন্য রোগীদের রেফারেল সিস্টেম ডেভেলপ করতে হবে। এক্ষেত্রে তৃণমূলের হাসপাতালে রোগী যথাযথ ম্যানেজমেন্ট নিশ্চিত ও রেফারেল সেন্টারের রেফারেন্স ছাড়া রুটিন রোগী ভর্তি বন্ধ করতে হবে।

জরুরী রোগীদের ব্যবস্থা আলাদা। তাদের জন্য জরুরী বিভাগেই ভালো ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম থাকা উচিত। দুঃখজনক হলেও সত্য আমাদের দেশে তা নেই। অধিকাংশ জরুরী বিভাগে প্রচুর সময়ক্ষেপণ হয়।

রোগ সারানোর জন্য চিকিৎসকদের হাতে কোন জাদুমন্ত্র নেই। প্রচলিত গাইডলাইন অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়াই একজন চিকিৎসকের দায়িত্ব। ফলাফল কেবলমাত্র আল্লাহর হাতেই।
দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রয়োজনীয় সংস্কারে সবার অংশগ্রহণ করা উচিত। এতেই সবার মঙ্গল। অযথা শুধুমাত্র চিকিৎসকদের উপর দায় চাপালে একদল প্রকৃত বন্ধুকেই হারাবে রোগীরা।

আরও পড়ুন