Advertisement
Doctor TV

সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫


উন্নতমানের ওষুধ তৈরির অবদানে রসায়নে নোবেল

Main Image

রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের কে. ব্যারি শার্পলেস, ক্যারোলিন আর বার্তোজি এবং ডেনমার্কের মর্টেন মেলডান


ক্লিক রসায়ন এবং বায়োর্থোগোনাল রসায়ন উন্নয়নে অবদানের জন্য এ বছর রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের কে. ব্যারি শার্পলেস, ক্যারোলিন আর বার্তোজি এবং ডেনমার্কের মর্টেন মেলডান। তারা সবাই আলাদাভাবে ক্লিক রসায়ন নিয়ে কাজ করেছেন, যা উন্নতমানের ওষুধ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

ক্লিক রসায়ন হলো অণুগুলোকে জীবন্ত কোষের মধ্যে থাকা অণুর মতো করে সংযুক্ত করা। রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস বলেছে, বিজ্ঞানী শার্পলেস এবং মেলডান ক্লিক রসায়নের ভিত্তি স্থাপন করেছেন যা কিনা রসায়নের একটি প্রয়োগিক রূপ। অন্যদিকে বার্তোজি রসায়নের এ ধারাকে এক নতুন মাত্রায় নিয়ে গিয়ে জীবন্ত কোষে এর ব্যবহার শুরু করেছেন। আর জীবন্ত কোষে ক্লিক রসায়নের ব্যবহারকেই বলা হয় বায়োর্থোগোনাল রসায়ন।

রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস আরও জানিয়েছে, অণুকে একত্রে যুক্ত করার ক্ষেত্রে ওষুধ প্রস্তুতকারীদের ভাবনায় নতুন বিপ্লব এনেছে এই গবেষণা। অন্যান্য ব্যবহারের পাশাপাশি ওষুধ তৈরিতে ভূমিকা রেখেছে ক্লিক রসায়ন। এ উদ্ভাবন মানুষের শরীরে ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আরো কমিয়ে আনবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষ করে ক্যান্সার চিকিৎসায় বিশেষ অবদান রাখতে পারে এ গবেষণা। ডিএনএ ম্যাপিং এবং দরকারি ও সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক উপকরণ তৈরির কাজে এই রাসয়নিক বিক্রিয়াটির বহুল ব্যবহার হচ্ছে বিশ্বে।

বাংলাদেশ সময়  বুধবার বিকেল পৌনে চারটায় এই তিনজনের পুরস্কারের জয়ের ঘোষণা দেন একাডেমি অব সায়েন্সেসের সেক্রেটারি জেনারেল হান্স এলেগ্রেন।

ব্যারি শার্পলেস দ্বিতীয়বারের মতো নোবেল পুরস্কার পেলেন। ২০০১ সালে প্রথমবার এই পুরস্কার জেতেন তিনি। পুরস্কারটির ইতিহাসে পঞ্চম ব্যক্তি হিসেবে দুটি নোবেল জিতলেন শার্পলেস।

কে. ব্যারি শার্পলেস ১৯৪১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে ১৯৬৮ সালে পিএইচডি লাভ করেন। শার্পলেস ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি ও স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা করেছেন। ১৯৯০ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের স্ক্রিপস রিসার্চ ইনস্টিটিউটে রসায়ন বিষয়ে ডব্লিউ এম কেক অধ্যাপক হিসেবে নিয়োজিত।

ক্যারোলিন আর. বার্তোজি ১৯৬৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করেন। ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটি বার্কলে থেকে তিনি পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে বার্তোজি স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে অ্যান টি. এবং রবার্ট এম. বাস স্ট্যানফোর্ড অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।

মর্টেন মেলডালের জন্ম ১৯৫৪ সালে ডেনমার্কে। টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি ১৯৮৬ সালে পিএইচডি লাভ করেন। বর্তমানে কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করছেন।

নোবেল পুরস্কার প্রচলনের পর থেকে এখন পর্যন্ত ১১৪ বাররসায়নে নোবেল দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত মাত্র দুইজন দুইবার রসায়নে নোবেল পেলেন। এর আগে ব্রিটিশ জৈবরসায়নবিদ ফ্রেডেরিক স্যাঞ্জার ১৯৫৮ এবং ১৯৮০ সালে রসায়নে নোবেল জেতেন।

আগামী ১০ ডিসেম্বর নোবেল পুরস্কারের জনক সুইডিশ বিজ্ঞানী ও শিল্পপতি আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকীতে স্টকহোম ও অসলোতে অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সব বিজয়ীর হাতে প্রাইজমানি হিসেবে এক কোটি সুইডিশ ক্রোনারের চেক, মানপত্র ও স্বর্ণপদক দেওয়া হবে।

বিজয়ীর প্রতিক্রিয়া
ক্যারোলিন আর. বার্তোজিকে স্থানীয় সময় গভীর রাতে নোবেল জয়ের খবর দেওয়া হয়েছিল। এ কথা শুনে নিজের প্রতিক্রিয়ায় তিনি জানান, ‘আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। ’

মার্কিন এই অধ্যাপক জানান, তাঁর কাজ নতুন ধরনের অণু আবিষ্কার করতে ব্যবহার করা হচ্ছে। যেগুলোর অস্তিত্ব আছে বলে আমরা জানতাম না। এর মাধ্যমে রোগীদের শরীরের সঠিক স্থানে ওষুধ পৌঁছে দেওয়ার কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা।

আরও পড়ুন