Advertisement
Doctor TV

বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫


ডা. বুলবুলের মৃত্যু ঘিরে বাড়ছে ‘রহস্য’

Main Image

ডা. বুলবলের পকেটে নগদ ১২ হাজার টাকা, মোবাইল ফোন, হাতে সোনার আংটি থাকলেও ছিনতাইকারীরা তা নেয়নি


আহমেদ মাহী বুলবুলের (৪১) নিহতের ঘটনায় রহস্যের ডালপালা বাড়ছে। রাজধানীর শেওড়াপাড়ায় বাসার সামনেই রবিবার (২৭ মার্চ) ভোরে পেশায় এই দন্তচিকিৎসক ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ডা. বুলবলের পকেটে নগদ ১২ হাজার টাকা, মোবাইল ফোন, হাতে সোনার আংটি থাকলেও ছিনতাইকারীরা তা নেয়নি। শুধু বুক পকেটের একটি স্মার্টফোন খোয়া গেছে।

ফলে ডা. বুলবুল ছিনতাইকারীদের হাতে মারা গেছেন নাকি পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পরিবারের সদস্য ও ডেন্টাল কলেজের সহপাঠীরা ডা. বুলবুল হত্যাকে নিছক ছিনতাইয়ের ঘটনা বলতে নারাজ। তারা ঘটনার সঠিক তদন্ত করে খুনিদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।

ডা. বুলবুলের বন্ধু সজীব আহমেদ বলেন, ‘আমার কাছে এটিকে ছিনতাইয়ের ঘটনা মনে হচ্ছে না। তার উরুতে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন আছে। চিকিৎসা পেশার পাশাপাশি সে ঠিকাদারিও করত বলে শুনেছি। ভোরে ঠিকাদারির কাজেই নোয়াখালী যাওয়ার জন্য বের হয়েছিল। ফলে এ হত্যাকাণ্ডের ভালোসতো তদন্ত হওয়া দরকার।’

শেওড়াপাড়ায় ডা. বুলবুলের এক প্রতিবেশী জানান, ছিনতাইয়ের ঘটনা হলে তার কাছে থাকা মোবাইল, আংটি, টাকা সবকিছুই খোয়া যেত। শুধু বড় মোবাইলটা তার কাছে নেই। আঘাতের ধরনে পেশাদার খুনির কাজ মনে হয়েছে। আমাদের কাছে মনে হয়েছে, এটি ছিনতাইয়ের ঘটনা নয়, পরিকল্পিতভাবে ডা. বুলবুলকে হত্যা করা হয়েছে।

ডা. বুলবুলের লাশ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রয়েছে।

এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মাহতাব উদ্দিন বলেন, ‘ভোর ৫টার দিকে অজ্ঞাত ব্যক্তির ছুরিকাঘাতে ডা. বুলবুল গুরুতর আহত হন। পরে তাকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে এটি ছিনতাইয়ের ঘটনা বলে মনে হচ্ছে। আমরা ঘটনাটি তদন্ত করছি এবং ঘাতকদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।’

ডা. বুলবুলের গ্রামের বাড়ি রংপুর নগরীর ভগিবালা পাড়ায়। রাজধানীর শেওড়াপাড়ার বাসায় স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে থাকতেন তিনি। রাজধানীর মগবাজারে ‘রংপুর ডেন্টাল’ নামে ডা. বুলবুলের চেম্বার রয়েছে। সেখানে তিনি দরিদ্র ও নিম্নবিত্তদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দিতেন। শুধু স্বাবলম্বীদের কাছ থেকে ফি নিতেন বলে জানা গেছে।

ডা. বুলবুলের বাবা মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সামাদ সেনাবাহিনীর সদস্য ছিলেন। চাকরি করাকালীন ১৯৯৯ সালে মারা যান তিনি। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার বড় ছিলেন বুলবুল।

তিনি ১৯৯৭ সালে রংপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও রংপুর ক্যান্টমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ঢাকার মগবাজারে একটি বেসরকারি ডেন্টাল কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে পড়াশোনা শেষ করে প্র্যাকটিস শুরু করেন। দেড় বছর বয়সী ছেলে ও সাত বছরের মেয়ে রয়েছে ডা. বুলবুলের।

রংপুর থেকে মোবাইল ফোনে ডা. বুলবুলের ছোট ভাই বকুল হোসেন বলেন, ‘সকালে ফোনে খবর পাই ভাইকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। ভাইয়ের সঙ্গে কারও কোনো বিরোধ ছিল না। কেন তাকে হত্যা করা হয়েছে তা বুঝে উঠতে পারছি না। যারাই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’

> ঢাকায় ছুরি মেরে চিকিৎসককে হত্যা

আরও পড়ুন