Advertisement
Doctor TV

বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫


ওমিক্রন নিয়ে এত চিন্তা কেন

Main Image

ওমিক্রন যত দুর্বল হোক না কেন বয়স্ক মানুষ যাদের কোমরবিডিটি আছে, তাদের জন্য এটি ভয়ংকর হতে পারে


করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন ডেল্টার মতো মারাত্মক না হলেও অনেক বেশি সংক্রামক। বিদ্যুৎ গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে এ ধরনের সংক্রমণ।

আমাদের দেশে এখন করোনার পাশাপাশি অন্যান্য ঠান্ডা-জ্বরের ভাইরাস বিরাজ করছে। বেশিরভাগ মানুষ সর্দি-কাশিতে ভুগছেন। ফলে করোনা আক্রান্ত এবং সুস্থদের খুঁজে বের করা খুব কঠিন হয়ে পড়ছে।

ওমিক্রন আমাদের শ্বাসতন্ত্রের উপরের অংশে আর ডেল্টা নিচের অংশে অর্থাৎ ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায়। ফলে ডেল্টা মারাত্মক করোনা রোগ সৃষ্টি করে।

ডেল্টার সাথে ওমিক্রনের উপসর্গের কিছু পার্থক্য রয়েছে। যেহেতু এখন দুটি ধরনেই সংক্রমণ ঘটছে, তাই উপসর্গগুলো জানা খুব জরুরি।

১. ডেল্টা সংক্রমণে শুষ্ক কাশি হয়, যা ওমিক্রনে হয় না। বরং ওমিক্রনে গলাব্যথা হবে। আক্রান্তের মনে হবে গলার ভেতরটা যেন ছিঁড়ে যাচ্ছে।

২. ডেল্টাতে ঘ্রাণশক্তি ও স্বাদ কমে যায়, ওমিক্রনে যা হয় না। বরং ওমিক্রনে প্রচণ্ড শরীর ব্যথা হয়,  বিশেষ করে কোমর থেকে শরীরের নিচের অংশে।

৩. ওমিক্রনে রোগীর নাক বন্ধ থাকে, যা ডেল্টাতে থাকে না।

৪. ওমিক্রনে উচ্চমাত্রায় জ্বর থাকে। ডেল্টাতে গায়ে গায়ে জ্বর ৯৯ থেকে ১০০ থাকে।

তাহলে ওমিক্রন নিয়ে এত চিন্তা কেন
ওমিক্রন ডেল্টার চেয়ে ৫-৬ গুন বেশি সংক্রামক। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাদের শরীরে আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

ধরুন ১০০ জন ডেল্টাতে আক্রান্ত হলে ৫ জনের মাঝারি থেকে মারাত্মক কভিড হয়। ঠিক একই গুননে ১০০ জন ডেল্টা সমান ৫০০ জন ওমিক্রনে আক্রান্ত হবে। যদি ওমিক্রনে মাঝারি থেকে মারাত্মক কভিডে আক্রান্তের হার ১ শতাংশও হয় তাহলেও ডেল্টার মতো ৫ জনই হবে। ফল হার কমে গেলেও সংখ্যা একই থাকবে। আমাদের সংখ্যার কথাটি অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে।

তবে আশার কথা বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩২ শতাংশ পূর্ণ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। অনেকেরই আগেই প্রাকৃতিকভাবে সংক্রমণ হয়ে গেছে।

করোনার যে ধরনই আসুক না কেন মাস্কই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে শক্তিশালী সুরক্ষা অস্ত্র। এজন্য দয়া করে মাস্ক পরুন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।

ওমিক্রন যত দুর্বল হোক না কেন, বয়স্ক মানুষ, যাদের কোমরবিডিটি আছে, তাদের জন্য এটি ভয়ংকর হতে পারে। মনে রাখবেন, Little birds may peck a dead lion. আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।

লেখক: ডা. নুসরাত সুলতানা
সহযোগী অধ্যাপক (সিসি)
ভাইরোলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ

আরও পড়ুন