স্বাস্থ্যনীতি পুনর্গঠনে জোর দাবি বিশেষজ্ঞদের
দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করতে জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি পুনর্গঠনের জোরালো দাবি জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
সোমবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টারে ‘পলিসি ফোরাম ইনভেন্টরি গবেষণা’ নিয়ে আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় তারা এ দাবি জানান।
আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের ওয়ার্কিং গ্রুপের সদস্য ও সরকারের আইইডিসিআরের সাবেক পরিচালক ডা. জাকির হোসেন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের উপদেষ্টা ড. ইয়াসমিন এইচ আহমেদে সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ডা. শাহ মনির হোসেন, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটালের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী।
অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, যেকোনো কাজের একটি সুনির্দিষ্ট পলিসি থাকা জরুরি। তা বাস্তবায়ন করাও জরুরি। আবার অনেক কিছু হয়ে যায়, যা নিয়ে পূর্বে কোনো পলিসি থাকে না। যেমন, করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচতে আমরা মাস্ক পরে থাকি, এটি কিন্তু কোনো পলিসিতে ছিল না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলার কারণেই ফলো করেছি। আমরা নিজেরাও জানতাম না যে, করোনা থেকে বাঁচতে মাস্ক পরতে হবে।
বিএসএমএমইউ উপাচার্য বলেন, আমাদের মেডিকেল কলেজগুলোতে এডুকেশনের কোয়ালিটি ইম্প্রুভ করা দরকার। এটি পলিসিতে লেখা আছে, কিন্তু কোনো বাস্তবিক প্রয়োগ নেই।
দেশে এখন ১১৩টির মতো মেডিকেল কলেজ আছে। এসব কলেজ থেকে যারা ভবিষ্যতে চিকিৎসক হয়ে আসবেন, তাদের কোয়ালিটি কীভাবে উন্নত করা যায় আমাদের তা ভাবা উচিত। দেশে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য সেবাদানকারীদের জন্য একটি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান তৈরি করা এখন সময়ের দাবি।
সভাপতির বক্তব্যে ডা. জাকির হোসেন বলেন, স্বাস্থ্যনীতি বাস্তবায়নে আলাদা অবকাঠামো অত্যন্ত জরুরি। জনস্বাস্থ্য নিয়ে যারা চিন্তা-ভাবনা করেন, তাদের সাহায্যে নতুন অবকাঠামো গঠন করতে হবে। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে পড়ালেখা অনেক দরকার। পাশাপাশি জনস্বাস্থ্যের লোকদের স্বাস্থ্যনীতির সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।
আলোচনার শুরুতে জানানো হয়, বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের পক্ষ থেকে ‘ইনভেনটরি অব হেলথ পলিসি অ্যান্ড পলিসি ফোরামস’ শীর্ষক গবেষণা চালিয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) গবেষকদের একটি দল। বিশ্ববিদ্যালয়ের গণস্বাস্থ্য ও ইনফরম্যাটিক্স অনুষদের অধ্যাপক ড. মো. আতিকুল হকের নেতৃত্বে গবেষণাটি চালানো হয়।
গবেষণায় দেশের জনস্বাস্থ্য নীতিমালা তৈরি এবং তা বাস্তবায়নে জনগণ ও সুশীল সমাজের অংশগ্রহণ নিয়ে সরকারি অংশীজনদের মাঝে ভুল ধারণা, উপযুক্ত নাগরিক প্রতিনিধি নির্বাচনে ব্যর্থতা, তৃণমূল পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবাকর্মী এবং সেবাগ্রহীতাদের মতামতের গুরুত্বের অভাব দেখা যায়।
এ গবেষণা জনগণের অংশগ্রহণ ও নীতিমালা তৈরিতে পলিসি ফোরামের ভূমিকাও মূল্যায়ন করে। কীভাবে অধিকতর জনবান্ধব নীতিমালা তৈরি ও বাস্তবায়ন করা যেতে পারে, তা নিয়ে বেশ কিছু পরামর্শ তুলে ধরেন গবেষকরা।
আরও পড়ুন