Advertisement
Doctor TV

বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫


মিয়ানমারে জান্তার নিশানায় চিকিৎসকরা

Main Image

ছবি : সংগৃহীত


মিয়ানমারে চিকিৎসাকর্মীদের নিশানা করে নির্যাতন-নিপীড়ন চালাচ্ছে দেশটির সামরিক বাহিনী। দ্য গার্ডিয়ান বলছে, সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই চিকিৎসাকর্মীরা আন্দোলন ছাড়াও বিক্ষোভে আহতদের চিকিৎসা দিচ্ছেন। আর তাদের এ কাজ বাধাগ্রস্ত করতে জান্তা নানা তৎপরতা চালাচ্ছে। এসবের অংশ হিসেবে চিকিৎসাকর্মীদের নিশানা করেছে জান্তা।

দেশটির চিকিৎসাকর্মীরা বলছেন, সামরিক বাহিনী হাসপাতাল, ক্লিনিকসহ চিকিৎসা-সংক্রান্ত বিভিন্ন স্থাপনায় দিনরাত হানা দিচ্ছে। অ্যাম্বুলেন্স লক্ষ্য করে হামলা করছে। চিকিৎসাকর্মীদের আটক, মারধর করা হচ্ছে এমনকি নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে বেশ কয়েকজন সহকর্মী মারাও গেছে।

ফিজিশিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটসের রাহা ওয়ালা বলেন, ‘মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা ও জাতীয় ধর্মঘটে অংশ নেওয়ায় চিকিৎসাকর্মীদের পদ্ধতিগতভাবে নির্যাতন-নিপীড়ন করছে সেনাবাহিনী। হামলা-মামলা ছাড়াও বাড়ি থেকে অনেককে তুলে নেওয়া হচ্ছে। কিছুসংখ্যক চিকিৎসাকর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বাকিদের এখনো কোনো খোঁজ নেই।’

ইয়াঙ্গুন শহরের এক চিকিৎসক গোপন স্থান থেকে বলেন, ‘চিকিৎসাকর্মীদের আটক করার পর তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। তাদের শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন দেখা গেছে।’

গত সপ্তাহে অর্থোপেডিক সার্জন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কিউ মিন সোকে তার ইয়াঙ্গুনের বাসভবন থেকে তুলে নেওয়া হয়। তার দুই হাত পিছমোড়া করে শক্ত করে বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয়। শুধু ইয়াঙ্গুন নয়, দেশটির অন্যান্য এলাকায়ও চিকিৎসাকর্মীদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে জান্তা। চিকিৎসাকেন্দ্রে চালানো হচ্ছে অভিযান।

অধিকারবিষয়ক সংগঠন অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্সের (এএপিপি) তথ্য অনুযায়ী, মিয়ানমারে দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলা বিক্ষোভে ৭০০ জনের বেশি বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন। গ্রেপ্তার-আটক হওয়া ব্যক্তির সংখ্যা কয়েক হাজার।

এএপিপি জানায়, মিয়ানমারে চলমান সহিংসতায় এখন পর্যন্ত অন্তত পাঁচ চিকিৎসাকর্মী নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে নার্সিং শিক্ষার্থী থিনজার হেইন (২০) আছেন। তিনি আহত বিক্ষোভকারীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার সময় গত ২৮ মার্চ গুলিতে নিহত হন। থিনজার সেনা অভ্যুত্থানের বিরোধিতা করেছিলেন। আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য তিনি অন্যদের এ-সংক্রান্ত কৌশল শিখিয়ে ছিলেন।

মান্দালয় শহরের এক চিকিৎসক বলেন, ‘আমাদের অবস্থা এমন, যেন আমরা বর্বরদের মুখোমুখি। এক আহতকে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার চেষ্টাকালে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। অথচ তাদের গায়ে তখন চিকিৎসাসেবা দেওয়ার পোশাক ছিল।’

আরও পড়ুন