Advertisement
Doctor TV

বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫


পরিস্থিতি খারাপ হলে বইমেলা স্থগিতের সম্ভাবনা রয়েছে

Main Image

ডা. কে. এম. মুজাহিদুল ইসলাম। ছবি: ডক্টর টিভি


যদি জীবনের প্রতি হুমকি চলে আসে। বই মেলা বাস্তবায়নে যে বিশেষ কমিটি করা রয়েছে তারা যদি কোন রিপোর্ট দেয় এবং সরকার থেকে সিদ্ধান্ত দেয়া হয় এবারের বই মেলা স্থগিত হতে পারে।  এমন তথ্য জানিয়েছেন বাংলা একাডেমি পরিচালক( প্রশাসন মানবসম্পদ উন্নয়ন ও পরিকল্পনা বিভাগ)  ডা. কে. এম. মুজাহিদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, প্রথমেই জীবন তারপর অন্য জিনিস। মেলার সার্বিক অবস্থা জানানোর জন্য একটা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সরকারি মহল থেকে।  স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টদের নিয়ে একটা কমিটি করা হয়েছে। এছাড়াও বড় ধরনের কমিটি করা হয়েছে, যারা মেলাকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছেন। যদি কোনো কারণে সরকারের কোনো নির্দেশনা আসে অথবা আমাদের যদি এ ধরনের কোনো নির্দেশনা (সরকারকে) জানানোর প্রয়োজন হয়, এ কমিটি সুনির্দিষ্ট জায়গায় তা পৌঁছিয়ে দেবে।

শুক্রবার ডক্টর টিভিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বাস্থ্যবিধির বিষয় উল্লেখ করে বাংলা একাডেমির পরিচালক ডা. কে. এম. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, সমন্বয় মিটিংয়ে আমরা মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সংস্থা একটি সমন্বিত চিন্তাভাবনা করে মেলার স্বাস্থ্যবিধিটাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। মেলাতে দুটি অংশ, একটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমি অংশ। আপনারা খেয়াল করেছেন সুনির্দিষ্ট এবং নান্দনিক পরিবেশে, আমি বলব যে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে মেলাতে প্রবেশের ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, মেলাতে আসা সবাই অবশ্যই সুনির্দিষ্ট লাইনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে, ৩ ফিট দূরত্ব রেখে ‍তাও মানা সম্ভবপর না হলে অন্তত দূরত্ব বজায় রেখে প্রবেশ করছেন।  প্রবেশ করার মুখে তাকে প্রথম থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে তাপমাত্রা দেখা হচ্ছে।  কেউ যদি মাস্ক না নিয়ে আসেন তাকে অবহিত করা হয়, পাশে মাস্ক কেনার জায়গা রয়েছে। যদি সম্ভব না হয় আমাদের যে স্বেচ্ছাসেবক রয়েছেন তারা মাস্ক প্রদান করেন। পাশে আমরা স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রেখেছি, সেখানে চাপ দিয়ে নিজেরাই হ্যান্ড স্যানিটাইজ করে মেলায় প্রবেশ করতে পারেন।

মেলায় প্রবেশের পর কেউ যদি মাস্ক পরতে অনীহা প্রকাশ করেন তাহলে কী ব্যবস্থা রাখা হয়েছে? এমন প্রশ্নের উত্তরে এই কর্মকর্তা বলেন, মেলায় অনেকেই প্রবেশ করে একটা সময় মাস্ক ঠিক নিচের দিকে নামিয়ে দেন বা পরেন না। এই বিষয়টাকে আমরা মনিটরিং করার জন্য বাংলা একাডেমি থেকে দুইটি কমিটি করেছি। কমিটিতে দুজন আহ্বায়ক রয়েছেন। মেলার দুটি প্রান্তে বিশেষ করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বেশি, সেখানে পশ্চিম এবং পূর্ব প্রান্তে ভাগ করে আমরা দিয়েছি। তারা সার্বক্ষণিক এটা মনিটরিং করে থাকেন। বিনয়ের সাথে বলেন, আপনারা মাস্ক যথারীতি যথানিয়মে পরিধান করুন।

তিনি বলেন, মেলায় দর্শনার্থীদের উদ্দেশ্য আমরা বলবো- কেউ না পারলেও অন্তত নিজের স্বার্থের কথা চিন্তা করে যেটুকু সময় মেলায় থাকুক না কেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।

ডা. কে. এম. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, এ বছর অমর একুশে বইমেলা ২০২১ হিসেবে অভিহিত হচ্ছে। যদিও মেলাটি ফেব্রুয়ারি মাসে হওয়ার কথা ছিল। করোনা মহামারী জন্য আমরা সময়মতো শুরু করতে পারিনি। যেহেতু প্রাণের মেলায় প্রত্যেকের একটা বিশেষ আবেদন থাকে। এর প্রেক্ষিত বিবেচনা করে মেলা কমিটি একটু বিলম্ব হলেও ১৮ তারিখ থেকে শুরু করতে পেরেছে। তবে আমাদের সবসময় মাথায় রয়েছে করোনা মোকাবেলা করে কিভাবে মেলা চালিয়ে যেতে পারি।

প্রবীণ লেখক এবং শিশুদের জন্য মেলায় কোনো বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেক লেখক রয়েছেন তারা সবকিছু উপেক্ষা করে মেলায় আসতে চান। তাদের বয়স এবং অন্যান্য বিষয় চিন্তাভাবনা করে আমরা ভেতরে ঢাকা সিভিল সার্জন অফিসের সহযোগিতায় একটা বুথ রেখেছি। সেখানে ডাক্তারদের সহযোগীরা আছেন, বসেন এবং তারা স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে থাকেন।  শুধু তাই নয়, যদি কারও খারাপ অবস্থা হয়, কমিটির সিদ্ধান্তের আলোকে নিকটস্থ হসপিটালে নেওয়ার প্রয়োজন হলে সেখানে পাঠানোর ব্যবস্থা করব।

তিনি আরও বলেন, যেহেতু পরিবেশটা এখন একটু গরম যাচ্ছে।  যেহেতু এবছর শিশুকর্ণার রাখা হয়নি, শিশুদেরকে মেলায় আসার আমন্ত্রণ কিংবা আসার জন্য খুব একটা বলছি না। আমরা আশা রাখবো শিশুদের কিংবা খুব বেশি জটিল রোগে বা সর্দি, হাঁচি-কাশি থাকেলে তাদেরকে আপাতত মেলাতে না আসার জন্য বলবো।

স্বাস্থ্যবিধি মাথায় রেখেই এবারের মেলা বৃহৎ আয়তনে রাখা হয়েছে জানিয়ে পরিচালক বলেন, প্রতি বছর আট হাজার বর্গফুট জায়গা মিলে মেলা হয়। এবার ১৫ হাজার বর্গফুট নিয়ে হচ্ছে। আমরা যদি একটু স্বাস্থ্য সচেতন হই, ভিড় এড়িয়ে চলি। কারো যদি শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকে, জ্বর জ্বর ভাব থাকে অনুগ্রহপূর্বক মেলায় আসবেন না। আপনার নিজের ইচ্ছার জন্য আরো ১০০ জনকে যেন আক্রান্ত না করে ফেলে। 

আরও পড়ুন