ছবিঃ সংগৃহীত
সোমবার (২০ অক্টোবর) সকালে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের লেকচার হলে আয়োজন করা হয় ‘ওয়ার্ল্ড এভিডেন্স-বেইজড হেলথকেয়ার ডে’ উদযাপন অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে বক্তারা দেশের স্বাস্থ্যসেবায় প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসা (Evidence-Based Medicine) চর্চার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএমইউর ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের (বিএমআরসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সায়েবা আখতার। আরও উপস্থিত ছিলেন বিএমইউর প্রো ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, প্রো ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মুজিবুর রহমান হাওলাদার, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলামসহ বিভিন্ন ফ্যাকাল্টির ডিন, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাবৃন্দ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, “এভিডেন্স-বেইজড চিকিৎসা পদ্ধতি একটি জটিল ও ব্যয়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। এ বিষয়ে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বিএমইউর সহযোগিতা চলছে, যা ভবিষ্যতে অনেক ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে।” তিনি আরও বলেন, “চিকিৎসকদের শুধু তথ্যের ওপর নির্ভর না করে নিজেদের প্রজ্ঞা ও নৈতিকতা কাজে লাগাতে হবে। আধুনিক বিজ্ঞানের পাশাপাশি মানবিক মূল্যবোধেও সমৃদ্ধ হতে হবে।”
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেন, “প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসাবিদ্যার চর্চা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে। এটি স্বাস্থ্য শিক্ষা ও গবেষণায় গুণগত উন্নয়ন ঘটাবে।” তিনি জানান, “এই পদ্ধতির প্রয়োগে দেখা গেছে, রোগীর মৃত্যুহার প্রায় ছয় ভাগের এক ভাগ কমে যায়। তাই আধুনিক জ্ঞাননির্ভর চিকিৎসা চর্চার মাধ্যমে জনগণের জীবন রক্ষা করা সম্ভব।”
বিশেষ অতিথি অধ্যাপক ডা. সায়েবা আখতার বলেন, “গবেষণালব্ধ জ্ঞানকে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের হাতে পৌঁছে দিতে হবে, যাতে এটি বাস্তবে প্রয়োগযোগ্য হয়। এতে চিকিৎসক, গবেষক ও রোগী তিন পক্ষই উপকৃত হবেন।” তিনি প্রতিটি বিভাগের জন্য আলাদা চিকিৎসা নীতিমালা প্রণয়নের পরামর্শ দেন, যা রোগীর অধিকার ও চিকিৎসকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
সবশেষে বক্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন বিএমইউর নেতৃত্বে প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসা চর্চা দেশের স্বাস্থ্য খাতে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে, যা জনগণের জন্য আধুনিক, মানবিক ও টেকসই স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।
গবেষণা, চিকিৎসাসেবা ও শিক্ষার প্রতিটি স্তরে প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসা চর্চা বাস্তবায়ন করতে পারলে দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা আরও দক্ষ, ন্যায্য ও জনমুখী হয়ে উঠবে। এতে শুধু রোগীর আস্থা বাড়বে না, চিকিৎসক ও গবেষকদের কাজও হবে আরও ফলপ্রসূ।
আরও পড়ুন