
ছবিঃ সংগৃহীত
বাংলাদেশে শিশু মৃত্যুর অন্যতম কারণ নিউমোনিয়া প্রতিরোধে নতুন প্রজন্মের অধিক কার্যকর নিউমো কক্কালকনজুগেট ভ্যাকসিন (পিসিভি) চালুর আহ্বান জানিয়েছেন দেশের শীর্ষ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
বৃহস্পতিবার আইসিডিডিআর,বি-তে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা জানান, ২০১৫ সাল থেকে ইপিআই কর্মসূচির আওতায় ব্যবহৃত পিসিভি-১০ ভ্যাকসিন শিশুদের কিছু নির্দিষ্ট সেরোটাইপ জনিত রোগ থেকে সুরক্ষাদিচ্ছে ঠিকই, তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিউমোকক্কাস ব্যাকটেরিয়ার ধরনে পরিবর্তন এসেছে। ফলে নবীন সেরো টাইপের বিরুদ্ধে কার্যকর সুরক্ষার জন্য পরবর্তী প্রজন্মের ভ্যাকসিন চালু করা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে।
আইসিডিডিআর,বি ও আইইডিসিআর-এর যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, পিসিভি-১০ চালুর পর কিছু সেরোটাইপের প্রকোপ কমলেও নতুন সেরোটাইপের সংক্রমণ বেড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রেরসিডিসি-এর সহযোগিতায় পরিচালিত এই গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, পিসিভি-১০ টিকাকে পিসিভি-১৩, পিসিভি-১৫বা পিসিভি-২০ সংস্করণে উন্নীত করা হলে শিশুদের সুরক্ষা যথাক্রমে ১৭%, ১৯% ও৫২% পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে।
আইসিডিডিআর,বি’র নির্বাহীপরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ বলেন, “নিউমোনিয়া এখনও শিশু মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। তাই এখন সময় এসেছে প্রমাণভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের।”
বৈঠকের সভাপতি ও নাইট্যাগ চেয়ারম্যান ড. ফিরদৌসী কাদরী বলেন, “বিশ্বের বহু দেশ ইতোমধ্যেই উন্নত পিসিভি ভ্যাকসিন চালু করেছে; বাংলাদেশকেও এখন সেই পথে অগ্রসর হতে হবে।”
ইপিআই-এর সাবেক প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. তাজুল ইসলাম এ বারী জানান, পিসিভি-১৩ ভ্যাকসিন শুধুকার্য করই নয়, বরং অর্থনৈতিক দিক থেকেও সাশ্রয়ী হতে পারে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. ফারহাদ হুসাইন বলেন, “নতুন ভ্যাকসিন চালু করলে অ্যান্টিবায়োটিকের ওপর নির্ভরতা কমবে। ইউনিসেফ, ডব্লিউএইচও ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উল্লেখ করেন, স্বাস্থ্য নিরাপত্তা কেবল চিকিৎসা নয়, এটি অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ।”
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী দেলোয়ার হোসেন বলেন, “প্রমাণ একেবারেই পরিষ্কার—আমাদের দ্রুত নতুন প্রজন্মের পিসিভি চালু করতে হবে, যাতে শিশুদের সর্বোচ্চ সুরক্ষা নিশ্চিত হয়।”
বৈঠকের শেষে বিশেষজ্ঞরা সর্বসম্মতিক্রমে মত দেন যে, প্রমাণ ভিত্তিক এই পদক্ষেপ বাংলাদেশের সফল টিকাদান কর্মসূচিকে আরও শক্তিশালী ও টেকসই করে তুলবে এবংভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
আরও পড়ুন