Ad
Advertisement
Doctor TV

মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫


বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে টাইফয়েড টিকাদান বিষয়ক ক্যাম্পেইন

Main Image

ছবিঃ ডক্টরটিভি


বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে টাইফয়েড টিকাদান বিষয়ক ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থা ও ইউনিসেফ বাংলাদেশেরসহযোগিতায় আজ সোমবার সকালেবাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ক্যাম্পেইন এরআয়োজন করা হয়। সরকারের বর্ধিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই)-এর আওতায় পরিচালিত এ ক্যাম্পেইনে সব টিকা বিনামূল্যে দেওয়া হবে।

 

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, টাইফয়েড এখনো বাংলাদেশের একটি বড় জনস্বাস্থ্য সমস্যা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর বিশ্বে প্রায় ৯০ লাখ মানুষ টাইফয়েডে আক্রান্ত হয় এবং এক লাখ ১০ হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটে। বাংলাদেশে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার তুলনামূলকভাবে বেশি। গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজ-এর ২০২১ সালের সমীক্ষায় দেখা যায়, দেশে প্রায় ৪ লাখ ৭৮ হাজার মানুষ টাইফয়েডে আক্রান্ত হয় এবং ৮ হাজারের মৃত্যু ঘটে। আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় ৬৮ শতাংশই শিশু।

 

অনুষ্ঠানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ক্যাম্পেইন কো-অর্ডিনেটর ড. রেজাউল করিম টাইফয়েড টিকার গুরুত্ব নিয়ে একটি প্রেজেন্টেশন দেন। তিনি বলেন, টাইফয়েড প্রতিরোধে টিকা অত্যন্ত কার্যকর এবং এ উদ্যোগ ঔষধ প্রতিরোধী টাইফয়েড নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

 

প্রেজেন্টেশনের পর শিশু রোগ বিশেষজ্ঞদের বিভিন্ন প্রশ্নোত্তর পর্বের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়। বিশেষজ্ঞরা টাইফয়েড প্রতিরোধে টিকার কার্যকারিতা, টিকা প্রদানের সঠিক বয়স, এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানভিত্তিক কার্যক্রমের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

 

ক্যাম্পেইনের আওতায় প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাইরে থাকা ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী সব শিশু টিকা পাবে। তবে যেসব শিশুর জ্বর রয়েছে (১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি), পূর্বে টিকা নেওয়ার পর অ্যালার্জির ইতিহাস আছে, টিকা নেওয়ার দিনে অসুস্থ, অথবা গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী মা—তাদের টিকা দেওয়া হবে না।

 

টিকা গ্রহণ নিশ্চিত করতে শিক্ষার্থীদের জন্ম নিবন্ধনের ১৭ সংখ্যার আইডি ব্যবহার করে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এজন্য নির্ধারিত ওয়েবসাইট *www.vaxepi.gov.bd*-তে

 রেজিস্ট্রেশন করে টিকাদান কার্ড ডাউনলোড করতে হবে। যেসব শিক্ষার্থীর জন্ম নিবন্ধন নেই বা ১৫ বছরের বেশি বয়স হলেও অষ্টম/নবম শ্রেণিতে পড়ছে, তাদের স্থানীয় স্বাস্থ্য সহকারী বা টিকাদান কর্মীর মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।

 

টিকাদান কার্যক্রম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানভিত্তিক কেন্দ্রগুলোতে পরিচালিত হবে। বাদ পড়া শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পেইন চলাকালে নিকটবর্তী সরকারি হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সিটি কর্পোরেশন ক্লিনিক বা কমিউনিটি টিকাদান কেন্দ্র থেকে টিকা নিতে পারবে।

 

ক্যাম্পেইনের সফলতা নিশ্চিত করতে শিক্ষক সমাজকে বিশেষ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে। তাদের ওরিয়েন্টেশন সভায় অংশগ্রহণ, অনলাইন রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ায় সহায়তা এবং শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের টিকার গুরুত্ব বোঝাতে হবে।

 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বর্তমানে টাইফয়েড চিকিৎসায় ব্যবহৃত অনেক অ্যান্টিবায়োটিক কার্যকারিতা হারাচ্ছে। ফলে ঔষধ প্রতিরোধী টাইফয়েড জ্বরের ঝুঁকি বাড়ছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় টিকাদান কর্মসূচি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

আরও পড়ুন