ছবিঃ সংগৃহীত
বাংলাদেশে মৃত্যুর শীর্ষ ১০ কারণের মধ্যে ৪টিই ফুসফুস ও শ্বাসতন্ত্রজনিত রোগ, যার অন্যতম প্রধান কারণ তামাক। ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত পুরুষ রোগীদের প্রায় ৮০ শতাংশই ধূমপায়ী। তাই ফুসফুসজনিত রোগের ঝুঁকি কমাতে শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন এখন জরুরি হয়ে পড়েছে।
বিশ্ব ফুসফুস দিবস উপলক্ষে শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা আয়োজিত ‘ফুসফুসের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে এই তথ্য তুলে ধরেন ক্যানসার ও বক্ষব্যাধি চিকিৎসক, জনস্বাস্থ্যবিদ, সাংবাদিকসহ বিশেষজ্ঞরা। প্রতিবছর ২৫ সেপ্টেম্বর দিবসটি পালিত হয়, এবছরের প্রতিপাদ্য ছিল ‘হেলদি লাংস, হেলদি লাইফ’।
ওয়েবিনারে জানানো হয়, তামাক ব্যবহার ও পরোক্ষ ধূমপান ফুসফুস ক্যানসার, ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি), যক্ষ্মা ও হাঁপানির মতো রোগের প্রধান কারণ। গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে ২০১৭ অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রায় ৩ কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক (৩৫.৩ শতাংশ) মানুষ তামাক ব্যবহার করে। কর্মক্ষেত্রে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয় ৮১ লাখ এবং গণপরিবহনে আড়াই কোটি মানুষ। তামাকজনিত অসুখে দেশে প্রতিবছর মৃত্যু হয় ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষের।
বিশেষজ্ঞরা জানান, দেশে অসংক্রামক রোগে মৃত্যুর ৪০ শতাংশেরও বেশি ঘটে ফুসফুস ও হৃদরোগে, যা কমানোর অন্যতম কার্যকর উপায় শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন। যদিও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ২০২১ সালে আইনের সংশোধনী প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। দ্রুততম সময়ে সংশোধনী পাসের দাবি তোলেন তারা।
ওয়েবিনারে বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, “ফুসফুসসহ সবধরনের ক্যানসারে চিকিৎসা ব্যয় এবং মৃত্যুহার অনেক বেশি। নীতিনির্ধারকদের কাছে এসব অসুস্থ মানুষের আর্তনাদ পোঁছাতে হবে, তাহলে তারা আইন সংশোধনকে অগ্রাধিকার দিবে।”
বাংলাদেশ লাং ফাউন্ডেশনের মহাসচিব ডা. আসিফ মুজতবা মাহমুদ বলেন, “ফুসফুসের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে হলে তামাক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতেই হবে।”
ঢাকা ট্রিবিউনের সম্পাদক রিয়াজ আহমদ বলেন, “গণমাধ্যমের দায়িত্ব এবিষয়ে আরো বেশি সংবাদ প্রকাশ করা যেন নীতিনির্ধারকরা বুঝতে পারেন তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণ কেন জরুরি।”
স্পটলাইটনিউজ২৪ ডট কমের সম্পাদক মোর্শেদ নোমান বলেন, “তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক নীতি প্রণয়নে গণমাধ্যম সবসময়ই ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে এবং এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে বিশ্বাস করি।”
ওয়েবিনারের সভাপতিত্ব করেন প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের। ডিজিটাল মিডিয়া প্রধান মেহেদী হাসানের সঞ্চালনায় মূল উপস্থাপনা তুলে ধরেন কর্মসূচি প্রধান মো. হাসান শাহরিয়ার। এতে গণমাধ্যম, তামাকবিরোধী সংগঠন ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
আরও পড়ুন