Ad
Advertisement
Doctor TV

বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫


অন্তঃসত্ত্বা ও প্রসবোত্তর নারীদের মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে উদ্বেগজনক হারে

Main Image

ছবিঃ সংগৃহীত


এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, এ সময়ের প্রায় ৭৭ শতাংশ নারী বিষণ্নতা বা উদ্বেগজনিত সমস্যায় ভুগছেন। এর মধ্যে ৬৬ শতাংশ একইসঙ্গে উভয় সমস্যার শিকার হচ্ছেন। মঙ্গলবার (০৯আগস্ট) আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) তাদের অ্যাডসার্চ প্রকল্পের আওতায় পরিচালিত ‘এনহ্যানসিং অ্যাক্সেস টু মেন্টাল হেলথ সার্ভিস থ্রু টেলিমেডিসিন হেলথ সার্ভিস অ্যাট ওয়েলবিং সেন্টার ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করে এ তথ্য জানায়।

 

গবেষণার আওতায় ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে গত জুলাই পর্যন্ত ঢাকার বাইরে সাতটি জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে প্রায় সাড়ে সাত হাজার নারীকে পর্যবেক্ষণ করা হয়।

বিষণ্নতায় আক্রান্ত নারীদের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী দুঃখবোধ, ঘুমের ব্যাঘাত, কাজের আগ্রহ হারানো, ক্লান্তি, আত্মদোষারোপ, খাবারে অরুচি, মনোযোগের অভাব এবং আত্মহত্যার চিন্তার মতো লক্ষণ পাওয়া গেছে। অন্যদিকে উদ্বেগে ভোগা নারীদের মধ্যে স্নায়বিক অস্থিরতা, নিয়ন্ত্রণ হারানোর ভয়, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা ও হঠাৎ ভয় পাওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়।

 

গবেষণায় আরও জানা যায়, দেশে নারীরা পুরুষের তুলনায় মানসিক রোগে বেশি আক্রান্ত হন এবং গর্ভকালীন ও প্রসবোত্তর সময়ে এ ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়।

বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক অ্যান্ড হেলথ সার্ভে (বিডিএইচএস) ২০২২–এর তথ্য বিশ্লেষণেও একই চিত্র উঠে এসেছে। এতে দেখা যায়, ২০ হাজার ২৯ জন প্রজনন বয়সী নারীর মধ্যে ৪ শতাংশ মাঝারি-তীব্র উদ্বেগে ও ৫ শতাংশ মাঝারি-তীব্র বিষণ্নতায় ভুগছেন। ভৌগলিকভাবে খুলনা, রংপুর ও সিলেট বিভাগের নারীদের মধ্যে এ হার তুলনামূলকভাবে বেশি।

 

এছাড়া বাংলাদেশ অ্যাডোলেসেন্ট হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিং সার্ভে ২০১৯–২০ অনুযায়ী, সাইবার বুলিং কিশোরী নারীদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য বড় ঝুঁকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। জরিপে অংশ নেওয়া কিশোরীদের ৮ শতাংশ গত এক বছরে সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়েছে এবং ১২ শতাংশ তীব্র বিষণ্নতায় আক্রান্ত বলে চিহ্নিত হয়েছে।

 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জানায়, বিশ্বব্যাপী ২০২১ সালে ৯৭ কোটির বেশি মানুষ কোনো না কোনোভাবে মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন, যার মধ্যে প্রায় ২৪ কোটি দক্ষিণ এশিয়ায়। বাংলাদেশে ২০১৯ সালের জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য জরিপ অনুযায়ী অন্তত ১৯ শতাংশ মানুষ মানসিক রোগে আক্রান্ত।

 

কিন্তু দেশের মানসিক স্বাস্থ্যসেবার অবস্থা এখনো অপ্রতুল। বর্তমানে সারা দেশে মাত্র ২৬০ জন মানসিক চিকিৎসক এবং ৫৬৫ জন মনোবিজ্ঞানী আছেন। অর্থাৎ প্রতি ১০ লাখ মানুষের জন্য গড়ে দুইজনেরও কম চিকিৎসক এবং চারজনেরও কম মনোবিজ্ঞানী। এর অধিকাংশই শহর এলাকায় অবস্থান করায় গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য সরাসরি সেবা পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
 

আরও পড়ুন