Ad
Advertisement
Doctor TV

সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫


এনডিএফ এর এনাইও শাখার আয়োজনে জুলাই বিপ্লব ২০২৪ স্মরণে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

Main Image

ছবিঃ ডক্টরটিভি


রাজধানীর আগারগাও জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের কনফারেন্স রুমে  রবিবার ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম, এনাইও শাখার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে “রক্তাক্ত জুলাই বিপ্লব–২০২৪” স্মরণে স্মৃতিচারণ ও দোয়া মাহফিল। অনুষ্ঠানে বিপ্লবের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় এবং তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া করা হয়।


অনুষ্ঠানের শুরুতে শহীদ ইয়ামিনের পিতা মো. মহিউদ্দিন স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, দেশের জন্য আত্মত্যাগী সন্তানদের স্মৃতি চির অম্লান থাকবে এবং এই ত্যাগের ইতিহাস ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সাহস যোগাবে।


অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’র সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরামের (এনডিএফ) সেক্রেটারি অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হোসেন এবং জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী।


প্রধান অতিথির বক্তব্যে অ্যাডভোকেট এহসান মাহবুব জুবায়ের বলেন,
“জুলাই-আগস্টের ওই দিনগুলো এমন ছিলো যেটা বিশ্বাস করা কঠিন ছিলো যে মানুষ আমরা যারা শিক্ষা বা সংস্কৃতিতে চলনে বলনে আমরা মূলত কি তার একটা নমুনা দেখেছি। এতে কোন সন্দেহ নেই যে বিরাট সংখ্যক মানুষ শত চাপের মধ্যেও মানবিকতার সর্বোচ্চ রূপ প্রদর্শন করেছে। রিস্ক নিয়েছেন, চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন, বিশেষ করে ডাক্তারদের দায়িত্ব ছিলো অনেক বেশি। একজন ডাক্তার এমন ঝুঁকি নিয়েছেন যা আমরা সাধারণত নিজের ভাই, সন্তান বা বাবার জন্য নেই। আবার এমন নির্মমতা ও নিষ্ঠুরতার নজিরও আমরা দেখেছি। শিক্ষা, সংস্কৃতি, মনন ও ভ্যালুস সবকিছুর একটা পরীক্ষা হয়ে গেছে। জুলাই আমাদের সাহসী হতে অনুপ্রাণিত করে। এই প্রতিষ্ঠান চোখের রোগীদের জন্য যা করেছে সেটি বিশাল দায়িত্ব পালন। জাতি কৃতজ্ঞ থাকবে আপনাদের প্রতি। এই দায়িত্ববোধ যেন অব্যাহত থাকে।”
 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী বলেন,
“জুলাই-আগস্টে আমরা হাসপাতালের সবাই একটি টিম হয়ে কাজ করেছি। জুলাইয়ের ১৫-১৮ এবং আগস্টের ২-৫ তারিখ আমরা বিশেষভাবে স্মরণ করি। সেসময় আমাদের ইমারজেন্সিতে বিপুল রোগী এসেছিলেন। আমাদের চিকিৎসকরা কেউ কেউ টানা ৭২ ঘণ্টা হাসপাতালে অবস্থান করেছেন। এত অল্প সময়ে এত অধিক রোগীর সেবা আমি আমার পেশায় আগে কখনও দেখিনি। আমরা চেষ্টা করেছি সর্বোচ্চটা দেয়ার। সমাজের প্রতিটি শ্রেণি-পেশার মানুষ যদি এগিয়ে আসে, তাহলে তাদের স্বাস্থ্যসেবা ও জীবনের নিরাপত্তা আরও সহজ হবে।”


অন্য বিশেষ অতিথি এনডিএফ সেক্রেটারি অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হোসেন বলেন,
“একাত্তরে আমার বয়স ছিল না, তাই সরাসরি অংশগ্রহণ করতে পারিনি। কিন্তু ২০২৪ সালের জুলাইয়ে এসে আমরা একটি মুক্তির আন্দোলন দেখেছি। ১৭ জুলাই আমাকে জানানো হয় যে দেশের পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে এবং আহতদের জন্য কিছু করার উদ্যোগ নিতে হবে। তখন আমরা এনডিএফ-এর সারা দেশের ইউনিটগুলোকে সক্রিয় করি। আমরা চেষ্টা করেছি চিকিৎসা দেওয়ার, অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস নিশ্চিত করার এবং শত শত মানুষের জন্য রক্তের ব্যবস্থা করার। আমরা তখন নৃশংসতা যেমন দেখেছি, তেমনি মানবিকতাও দেখেছি। আবার এটাও সত্য যে যতটুকু করা দরকার ছিল ততটুকু করতে পারিনি। আমি স্বাস্থ্যকর্মীদের বলবো আসুন আমরা জাতির অন্তরের যে আকুতি সেটা উপলব্ধি করি এবং এটিকে আরও গভীরভাবে বাস্তবায়নের জন্য কাজ করি। এটি কোনো দল বা গোষ্ঠীর প্রশ্ন নয়, এটি পুরো জাতির প্রশ্ন।”


অনুষ্ঠানের বক্তারা মনে করেন, রক্তাক্ত জুলাই বিপ্লব শুধু ইতিহাস নয়, বরং তা সমাজকে মানবিকতা, দায়িত্বশীলতা ও সাহসিকতার শিক্ষা দিয়েছে। তারা বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এই ত্যাগের ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে হবে এবং জাতি গঠনে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে।
 

আরও পড়ুন