Ad
Advertisement
Doctor TV

বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৫


রিলস আসক্তি মস্তিষ্কে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে: বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা

Main Image


সোশ্যাল মিডিয়ার রিলস এখন তরুণদের বিনোদনের প্রধান মাধ্যম। কয়েক সেকেন্ডের এই ছোট ভিডিও ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানুষকে স্ক্রিনের সামনে আটকে রাখছে। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই অতিরিক্ত আসক্তি আমাদের মস্তিষ্কের জন্য ভয়াবহ ক্ষতির কারণ হতে পারে।

গবেষণার ফলাফল

চীনের তিয়ানজিন নর্মাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কিয়াং ওয়াংয়ের নেতৃত্বে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলা হয়, রিলস আসক্তি মস্তিষ্কে অ্যালকোহল বা জুয়া খেলার মতো ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।

যারা নিয়মিত ও দীর্ঘ সময় রিলস দেখেন, তাদের মস্তিষ্কের প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স (মনোযোগ, আত্মনিয়ন্ত্রণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ নিয়ন্ত্রণ করে) অতিরিক্ত চাপে থাকে। 

বিশেষ করে বয়স ২৬-২৭ বছরের আগে যদি এই অভ্যাস তৈরি হয়, তবে মনোযোগের ঘাটতি, স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া এবং দৈনন্দিন জীবনে বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে।

মস্তিষ্কের ক্ষতিকর প্রভাব

রিলস দেখার সময় ডোপামিন ক্ষরণ বেড়ে যায়। প্রথমে এটি আনন্দ দেয়, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে আসক্তি তৈরি করে। 
রাতে রিলস দেখলে ঘুমের মান নষ্ট হয়, কারণ এটি মস্তিষ্কের হিপ্পোক্যাম্পাসকে (স্মৃতি ও নেভিগেশনের জন্য দায়ী অংশ) প্রভাবিত করে। 

দীর্ঘদিনের অভ্যাসে মস্তিষ্কের রিওয়ার্ড পাথওয়ে অস্বাভাবিকভাবে সক্রিয় হয়ে ওঠে, যা স্নায়বিক কার্যকারিতা ব্যাহত করতে পারে। 

অধ্যাপক ওয়াং জানান, চীনে বর্তমানে ৯৫.৫ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী প্রতিদিন গড়ে ১৫১ মিনিট রিলস দেখেন। এটি শুধু মানসিক স্বাস্থ্য নয়, শারীরিক সুস্থতার জন্যও ক্ষতিকর।

করণীয়: আসক্তি থেকে মুক্তির উপায়

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সচেতনতা ও কিছু অভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে রিলস আসক্তি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

সময় ব্যবস্থাপনা করুন – প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় রিলস দেখার জন্য রাখুন। 
নোটিফিকেশন বন্ধ রাখুন – পড়াশোনা বা কাজের সময় সোশ্যাল মিডিয়ার নোটিফিকেশন এড়িয়ে চলুন। 

অ্যাপ ব্যবহার করুন – ব্যবহারের সময় ট্র্যাক ও সীমাবদ্ধ রাখার জন্য বিশেষ অ্যাপ ব্যবহার করুন। 

অন্য কাজে মন দিন – নতুন কিছু শেখা, ব্যায়াম বা আড্ডায় সময় কাটান। 
পজিটিভ কন্টেন্ট দেখুন – প্রয়োজনে শিক্ষামূলক ও প্রেরণাদায়ক ভিডিও বেছে নিন। 

উপসংহার

রিলস বিনোদনের একটি মাধ্যম হলেও অতিরিক্ত ব্যবহার মস্তিষ্ক ও জীবনযাত্রায় মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই এখনই প্রয়োজন সচেতনতা ও আত্মনিয়ন্ত্রণ। ছোট ছোট অভ্যাস পরিবর্তনই আমাদের মানসিক ও শারীরিক সুস্থতার বড় রক্ষাকবচ হতে পারে।

 

আরও পড়ুন