Ad
Advertisement
Doctor TV

শনিবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৫


একাডেমিক ও সেবা হাসপাতাল আলাদা করার উদ্যোগ

Main Image


সরকার দেশের একাডেমিক এবং সেবা হাসপাতাল পৃথক করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে ইতিমধ্যেই একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে, এবং অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদকালে অন্তত বিভাগীয় পর্যায়ে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে। এ পদক্ষেপের মূল লক্ষ্য হলো দেশের চিকিৎসা শিক্ষার মানোন্নয়ন ও মানসম্পন্ন চিকিৎসক তৈরি করা।


ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) দেশের সবচেয়ে প্রাচীন এবং বৃহৎ চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান। আড়াই হাজার শয্যার এই হাসপাতালে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার রোগী চিকিৎসা গ্রহণ করেন। সীমিত শয্যা এবং অতিরিক্ত রোগীর চাপের কারণে হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদান প্রধানত প্রশিক্ষণার্থী চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীদের উপর নির্ভরশীল। ফলে শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ঠিকভাবে নিতে পারছে না এবং রোগীদের সেবার মানও প্রভাবিত হচ্ছে।

 

বর্তমান পরিস্থিতিতে যে সেবা বিশেষজ্ঞদের দ্বারা প্রদত্ত হওয়া উচিত, তা অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে হচ্ছে। এর ফলে রোগীরা কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না এবং শিক্ষার্থীরাও প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ গ্রহণে ব্যর্থ হচ্ছেন। দীর্ঘমেয়াদে এ অবস্থা চিকিৎসা শিক্ষার মানকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার তথ্য অনুযায়ী, ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজে প্রতি বছর ২০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করেন। এমবিবিএস শিক্ষার্থীদের ১১টি বিষয়ে বেসিক শিক্ষা এবং হাতে কলমে প্রশিক্ষণ নিতে হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সরকারি হাসপাতালের মোট শয্যা সংখ্যা ৭১ হাজার ৬৬০ হলেও শয্যার সংখ্যা রোগীর চাহিদার তুলনায় খুবই সীমিত। ফলে অনেক রোগী মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং শিক্ষার্থীরাও সঠিক প্রশিক্ষণ নিতে পারছেন না।

 

সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, যেসব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সঙ্গে সেবা কার্যক্রমও চলছে, সেগুলোর কিছু অংশ আলাদা করে শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যবহার করা হবে। এতে শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ সঠিকভাবে নিতে পারবে এবং রোগীরা সেবা গ্রহণে কোনো ধরনের বিঘ্নের মুখোমুখি হবেন না। একাডেমিক এবং সেবা হাসপাতাল আলাদা করার মাধ্যমে রোগীদের ভোগান্তি কমবে, স্থানীয় পর্যায়ে উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত হবে এবং চিকিৎসা শিক্ষার মানোন্নয়ন ঘটবে।

 

এ পদক্ষেপ বাস্তবায়ন হলে রোগী-চাপ কমানো সম্ভব হবে। রোগীরা পর্যাপ্ত সময় ও সঠিক পরামর্শ পাবেন, এবং শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট শয্যা ও সেবা পরিবেশে নিজেদের দক্ষতা বাড়াতে পারবে। দীর্ঘমেয়াদে দেশের চিকিৎসা শিক্ষার মান উন্নত হবে এবং স্থানীয় পর্যায়ে রোগীদের উন্নত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত হবে।

আরও পড়ুন