ছবিঃ সংগৃহীত
যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, তারা জর্ডানের সঙ্গে একযোগে কাজ করছে গাজায় জরুরি ত্রাণ সহায়তা বিমান থেকে ফেলার (এয়ারড্রপ) এবং চিকিৎসা সহায়তার প্রয়োজন এমন শিশুদের সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে। ইসরায়েলের অবরোধ ও নির্বিচার বোমাবর্ষণের কারণে ফিলিস্তিনিদের ওপর যে মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে, তা বিশ্বজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
শনিবার গাজায় অপুষ্টিজনিত কারণে আরও দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় দুর্ভিক্ষ ও অপুষ্টিতে মারা গেছেন আরও পাঁচজন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৭ জনে, যাদের মধ্যে ৮৫ জনই শিশু।
শনিবার এক জরুরি টেলিফোন আলোচনায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ ও জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জের সঙ্গে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তিন নেতা সম্মত হয়েছেন যে, জরুরি যুদ্ধবিরতির পেছনে একটি টেকসই শান্তির পরিকল্পনা থাকা জরুরি।
আলোচনায় স্টারমার বলেন, যুক্তরাজ্য জর্ডানের মতো অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করে গাজায় ত্রাণ সরবরাহ ও চিকিৎসা প্রয়োজন এমন শিশুদের সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে, গাজা সংকট নিরসনে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ না নেওয়ার অভিযোগে স্টারমারের নেতৃত্বাধীন লেবার সরকার নিজ দেশে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহরে নিয়মিত ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভ চলছে, যেখানে অংশগ্রহণকারীরা মনে করছেন, তাদের কণ্ঠস্বর সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে না।
সম্প্রতি এই ক্ষোভ আরও তীব্র হয় যখন পুলিশের হাতে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহরে (ম্যানচেস্টার, এডিনবরো, ব্রিস্টল, ট্রুরো ও লন্ডন) শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ থেকে ১০০ জনেরও বেশি মানুষ গ্রেপ্তার হন। এসব কর্মসূচি “ডিফেন্ড আওয়ার জুরিস” ক্যাম্পেইনের অংশ ছিল, যেখানে ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’ নামের সংগঠনের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারেরও দাবি ওঠে।
এছাড়াও স্টারমারের ওপর চাপ বাড়ছে ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়েও। আগামী সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ফ্রান্স এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছে। এরই মধ্যে ২০০-এর বেশি ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্য স্টারমারকে অনুরোধ জানিয়েছেন একই পথে হাঁটতে।
এছাড়া আরেকটি বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে যুক্তরাজ্যের অস্ত্র রপ্তানি নিয়ে। সরকারের দাবি অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বরে ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানিতে সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছিল। কিন্তু মে মাসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, এরপরও ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠানগুলো ইসরায়েলে ৮ হাজার ৬৩০টি যুদ্ধাস্ত্র বা এর উপাদান রপ্তানি করেছে। এসব সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে বোমা, গ্রেনেড, ক্ষেপণাস্ত্র ইত্যাদি। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে এই বিষয়ে ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন