Advertisement
Doctor TV

সোমবার, ২১ জুলাই, ২০২৫


ডেঙ্গু ও করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশের সব হাসপাতালে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

Main Image

ছবিঃ সংগ্রহীত


ডেঙ্গু ও করোনাভাইরাসের বাড়বাড়ন্তে দেশের স্বাস্থ্যসেবায় দেখা দিয়েছে বাড়তি চাপ। দুই ভাইরাসের সংক্রমণে কোথাও কোথাও মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। এমন প্রেক্ষাপটে হাসপাতালগুলোকে আরও প্রস্তুত ও সচল রাখতে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

 

রোববার (২০ জুলাই) অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান স্বাক্ষরিত একটি সার্বিক নির্দেশনা দেশের সব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, বিভাগীয় ও জেলা হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।

 

ডেঙ্গু চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপনা:
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে জ্বরের রোগীদের দ্রুত শনাক্তকরণ ও শ্রেণিবিন্যাসে (A, B, C গ্রুপ) ফ্লু কর্নার বা ফিভার কর্নার স্থাপন করতে হবে। এসব কর্নারে রোগীদের অবস্থা অনুযায়ী ট্রিয়াজ করে চিকিৎসা দিতে হবে। সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু শনাক্তে পর্যাপ্ত কিটের মজুত নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। আর বেসরকারি হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত ফি কার্যকর রাখতে বলা হয়েছে, যাতে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ নজরদারি করবে।

সব হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য নির্দিষ্ট বেড ও ওয়ার্ড চালু রাখার পাশাপাশি, প্রশিক্ষিত চিকিৎসক টিম রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রোগীর জন্য আইভি ফ্লুইড, মশারির ব্যবস্থা ও প্রয়োজনে প্লাটিলেট কনসেনট্রেট সংগ্রহে প্রস্তুত থাকতে হবে।

 

প্লাটিলেট সরবরাহের জন্য দেশের ২১টি সেন্টার নির্ধারণ করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ, বিএসএমএমইউ, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল, রাজশাহী, বরিশাল, কক্সবাজার, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, দিনাজপুর, মানিকগঞ্জ, সিরাজগঞ্জসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, প্রতিটি হাসপাতালে ডেঙ্গু মৃত্যু বিশ্লেষণে গঠিত কমিটির প্রতিবেদন রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখায় (সিডিসি) পাঠাতে হবে। রোগীর ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর নির্ভুলভাবে সংরক্ষণ করে জিও লোকেশন ট্রেসিং নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি সব ল্যাবে ‘ডেঙ্গু ট্র্যাকার অ্যাপ’ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে হাসপাতাল ও আশপাশের এলাকা পরিষ্কার রাখতে হবে এবং সিটি করপোরেশন বা পৌরসভার সহায়তায় এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসে ব্যবস্থা নিতে হবে। সেই সঙ্গে দর্শনার্থীর সংখ্যা সীমিত রাখারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

 

করোনা ব্যবস্থাপনা:
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় হাসপাতালগুলোকে আরও সতর্ক ও সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে মাস্ক ও প্রয়োজনে পিপিই পরার বিষয়ে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগে জ্বরের রোগীদের আলাদাভাবে পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে।

হাসপাতালে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ, আইসোলেশন শয্যা ও র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট কিটের মজুত নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। অ্যান্টিজেন টেস্টে পজিটিভ আসা রোগীদের আরটি-পিসিআর পরীক্ষার জন্য নমুনা নির্ধারিত ল্যাবে পাঠাতে হবে এবং তথ্য DHIS2 ও MIS সার্ভারে এন্ট্রি করতে হবে।

কোনো রোগীকে যৌক্তিক কারণ ছাড়া অন্য হাসপাতালে রেফার না করারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে রেফারের আগে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। কোভিড চিকিৎসায় জাতীয় ক্লিনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট গাইডলাইনের ১০ম সংস্করণ অনুসরণ করতে হবে।

 

সবশেষে, হাসপাতালে আগত রোগী ও দর্শনার্থীদের করোনা সংক্রমণ বিষয়ে সচেতন করার বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন