Advertisement
Doctor TV

বুধবার, ১৬ জুলাই, ২০২৫


কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গাইনী বিশেষজ্ঞের দীর্ঘদিনের অনুপস্থিতি, ব্যাহত হচ্ছে সেবা কার্যক্রম

Main Image

ছবিঃ সংগৃহীত


লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘ প্রায় এক দশক ধরে সংযুক্তিতে কর্মরত রয়েছেন জুনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনী) ডা. শামছুন নাহার। বর্তমানে তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আদেশে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতালে সংযুক্ত রয়েছেন। এর ফলে স্থানীয় জনগোষ্ঠী, বিশেষত মা ও শিশুস্বাস্থ্যসেবার প্রয়োজনীয়তা থাকা দুই লক্ষাধিক মানুষ দীর্ঘদিন ধরে বিশেষায়িত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন।

 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, ডা. শামছুন নাহার ২০১৫ সালের ২৯ জুন গাইনী বিশেষজ্ঞ হিসেবে কর্মস্থলে যোগদান করেন। কিন্তু মাত্র এক মাসের ব্যবধানে, ২০১৫ সালের ৫ আগস্ট তাকে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতালে সংযুক্তিতে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে সংযুক্তির আদেশ বাতিল হলে ২০১৮ সালের ৮ জুলাই তিনি পুনরায় কমলনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেন। তবে ২০১৯ সালের ৫ মে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব রোকেয়া বেগম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাঁকে আবারও ঢাকায় সংযুক্ত করা হয়, যেখানে তিনি বর্তমানে কর্মরত আছেন।

 

এ প্রসঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সব্য সাচি নাথ জানান, সংযুক্তি বাতিল করে গাইনী বিশেষজ্ঞকে পুনরায় কমলনগরে ফেরত আনার বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং জেলা সিভিল সার্জনের নিকট একাধিকবার লিখিত আবেদন করা হলেও কার্যকর কোনো ফল পাওয়া যায়নি।

 

চলমান জনবল সংকটের কারণে স্বাস্থ্যসেবার মান মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। প্রতিদিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে ৫০০ থেকে ৭০০ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। ৫০ শয্যার স্থলে নিয়মিতভাবে ৬০ থেকে ৭০ জন রোগী ভর্তি থাকছেন। অথচ ২১টি চিকিৎসক পদের মধ্যে ৯টি, ২৬টি নার্স ও মিডওয়াইফ পদের মধ্যে ২০টি এবং ২৭টি ২য়, ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির পদের মধ্যে ১৯টি পদ শূন্য রয়েছে।

এছাড়া, হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমও মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে, কারণ গুরুত্বপূর্ণ চতুর্থ শ্রেণির “কুক” পদটি দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে। ফলে রোগীদের জন্য খাবার প্রস্তুত ও বিতরণে নানা অনিয়ম দেখা দিচ্ছে। আরও উদ্বেগজনক বিষয় হলো, হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ (কার্ডিওলজিস্ট) পদটি দীর্ঘদিন ধরে শূন্য, পাশাপাশি কার্ডিওগ্রাফার পদের বিপরীতেও কোনো জনবল নেই।

 

সব মিলিয়ে, জনবল সংকট এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দীর্ঘমেয়াদি অনুপস্থিতি কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রমকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে এবং স্থানীয় জনগণের ন্যায্য স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তি কঠিন হয়ে পড়েছে।

আরও পড়ুন