ছবিঃ সংগৃহীত
গত বছরের ১৮ জুলাই ঘটে যাওয়া সহিংসতার সময় আহতদের রক্ত ও চিকিৎসাসেবা দিতে একঝাঁক নির্ভীক চিকিৎসক, নার্স এবং রক্তের ঘাটতি মেটাতে রিদম ব্লাড ব্যাংক নামে একটি ব্লাড ব্যাংক এগিয়ে এসেছিল বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। এ ব্লাড ব্যাংক ১৮ থেকে ২২ জুলাই আহতদের ১২০০ ব্যাগ রক্ত সরবরাহ করেছিল।
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি জানান, ১৮ থেকে ২২ জুলাইয়ের মধ্যে 'রিদম ব্লাড ব্যাংক' আহতদের জন্য প্রায় ১২০০ ব্যাগ রক্ত সরবরাহ করে। পাশাপাশি বহু চিকিৎসক ও নার্স স্বেচ্ছায় এবং কখনো কখনো নিজেদের পরিচয় গোপন রেখে চিকিৎসাসেবা দেন।
প্রেস সচিব ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস (নিন্স) হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মুনাদি আল ইসলামের বরাত দিয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন। ফেসবুক পোস্টে অভ্যুত্থানের সময় রক্ত সংকট মোকাবেলায় রিদম ব্লাড ব্যাংকের সাহসী ভূমিকাও তুলে ধরেন তিনি।
স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন,‘আমি সম্প্রতি আমার ছেলেকে নিয়ে গিয়েছিলাম সরকারি নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে, সেখানে আমার দেখা হয়েছিল মুনাদি আল ইসলামের সঙ্গে। মুনাদি একজন চিকিৎসক এবং জুলাই অভ্যুত্থানের একজন সক্রিয় অংশগ্রহণকারী। তিনি আমাকে বিপ্লব চলাকালে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে যে যুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল, তার একটি অজানা এবং গুরুত্বপূর্ণ দিক সম্পর্কে বলেছিলেন।’
গুরুতর আহতদের অনেককেই ভর্তি করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ডিএমসিএইচ)। তবে হঠাৎ রক্তের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় জরুরি অস্ত্রোপচারের জন্য প্রয়োজনীয় রক্তের সংকট দেখা দেয়।
প্রেস সচিব আরো বলেন 'মুনাদি ও আরেকজন চিকিৎসক জানান, তখন দেশের কিছু বড় ব্লাড ব্যাংক রক্ত সরবরাহে অনাগ্রহ দেখিয়েছিল। কেন তারা এগিয়ে এলো না, সেটা পরিষ্কার নয়। আমি তাদের কোনো কর্মকর্তার সাথেও কথা বলতে পারিনি, তাই বিষয়টি আমার কাছেও অস্পষ্ট। তবে মুনাদি জানান, এই সংকটকালে কিছু ব্যক্তিগত রক্তদাতা, এমনকি হিজড়া সম্প্রদায়ের মানুষও এগিয়ে এসে রক্ত দান করেন। তবুও রক্তের ঘাটতি থেকেই যায়। এই সময়ে রিদম নামের একটি ছোট ব্লাড ব্যাংক এগিয়ে আসে। রিদমের একজন কর্মকর্তা জানান, ১৮ থেকে ২২ জুলাইয়ের মধ্যে তারা ১২০০ ব্যাগ রক্ত জোগাড় করে দেন আহতদের চিকিৎসার জন্য’
প্রেস সচিব জানান, অনেকে তখন নিজের পরিচয় গোপন রেখে চিকিৎসায় অংশ নেন, কারণ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে তখন সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সদস্যদের তৎপরতা ছিল প্রবল। এমনকি পুলিশ চিকিৎসকদের গণহত্যার দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করতেও বাধা দেয়।
আরও পড়ুন