Advertisement
Doctor TV

বুধবার, ৯ জুলাই, ২০২৫


‘সংক্রমণ প্রতিরোধে’ বিএমইউকে জাতীয় মডেল হিসেবে গড়বে ডব্লিউএইচও

Main Image


বাংলাদেশে হাসপাতাল-ভিত্তিক সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা এখনো বড় চ্যালেঞ্জ। প্রতিদিনই অসংখ্য রোগী চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে এসে নতুন সংক্রমণের ঝুঁকিতে পড়েন—যার বড় অংশই প্রতিরোধযোগ্য। এই বাস্তবতায় সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ (আইপিসি) ব্যবস্থাকে টেকসই ও মানসম্পন্ন করতে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বিএমইউ) ‘জাতীয় মডেল’ হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।


আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে বিএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলমের কার্যালয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হয় ডব্লিউএইচও’র প্রতিনিধি দল। দলের নেতৃত্ব দেন সংস্থার হেলথ সিস্টেম ইউনিটের বাংলাদেশ প্রধান সাঙ্গে ওয়াংমো। বৈঠকে দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আইপিসি বাস্তবায়নে যৌথ কর্মপরিকল্পনার রূপরেখা চূড়ান্ত হয়।

বৈঠকে ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, তারা বিএমইউ’র হাসপাতাল ও ল্যাবরেটরিগুলোকে সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় একটি জাতীয় মানদণ্ডে রূপান্তরে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে। এই ব্যবস্থায় বিশেষ গুরুত্ব পাবে—চিকিৎসকদের কাজের ধরণ, রোগীদের সুরক্ষা, হাসপাতাল পরিচ্ছন্নতা, স্বাস্থ্যবর্জ্য ব্যবস্থাপনা, টিকাদান কার্যক্রম এবং সচেতনতা ও প্রশিক্ষণের মতো বিষয়গুলো। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার লক্ষ্য হচ্ছে এমন একটি বাস্তবসম্মত ও কার্যকর আইপিসি কাঠামো গড়ে তোলা, যা স্বাস্থ্যকর্মীদের আচরণগত পরিবর্তন ও দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি রোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

 

বৈঠকে জানানো হয়, বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যসেবায় সংক্রমণ প্রতিরোধ একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশে হাসপাতাল-ভিত্তিক সংক্রমণে প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক রোগী আক্রান্ত হন, যা প্রতিরোধযোগ্য হলে চিকিৎসা ব্যয়, মৃত্যু ও জটিলতা—সবই হ্রাস পেতো। এই বাস্তবতায় বিএমইউ-ডব্লিউএইচও’র যৌথ উদ্যোগ দেশের স্বাস্থ্যখাতের জন্য একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিএমইউকে জাতীয় মডেল হিসেবে গড়ে তোলা গেলে দেশের অন্যান্য মেডিক্যাল কলেজ, হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে আইপিসি বাস্তবায়ন সহজ ও কার্যকর হবে।

 

এসময় বিএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেন, আমরা সংক্রমণ প্রতিরোধে শুধু নির্দেশনা মেনে চলবো না, বরং নিজেই একটি নির্দেশনামূলক প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠতে চাই। ডব্লিউএইচও’র সহযোগিতায় আমাদের হাসপাতাল ও ল্যাবরেটরিকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা হবে, যাতে দেশের মানুষ আরও নিরাপদ ও বিশ্বস্ত স্বাস্থ্যসেবা পায়।

তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই সহায়তা কেবল একটি বিশ্ববিদ্যালয় বা হাসপাতালের উন্নয়ন নয়—এটি দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থায় সংক্রমণ প্রতিরোধ ও ব্যবস্থাপনার জন্য একটি টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে কাজ করবে। এই উদ্যোগ সফল হলে বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে—যেখানে প্রতিটি হাসপাতাল হবে নিরাপদ, পরিচ্ছন্ন ও রোগীবান্ধব।

 

বৈঠকে বিএমইউ উপাচার্যের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন— পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আতিকুল হক তুহিন, ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুস শাকুর, এবং পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু নোমান মোহাম্মদ মোছলেহ উদ্দীন। ডব্লিউএইচও’র পক্ষ থেকে ছিলেন সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ (আইপিসি) ইউনিটের জাতীয় পেশাগত কর্মকর্তা ডা. মুরাদ সুলতান।

আরও পড়ুন