ছবিঃ সংগৃহীত
বুকের মাঝখানে হঠাৎ করে চাপ, ঘাম, বমিভাব এমন লক্ষণগুলো অনেকেই অবহেলা করেন। ভাবেন হয়তো গ্যাস্ট্রিক বা একটুখানি ক্লান্তি। কিন্তু অনেক সময় এসব উপসর্গই হতে পারে প্রাণঘাতী হার্ট অ্যাটাকের পূর্বাভাস।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হার্ট অ্যাটাক সাধারণত আচমকা হলেও, এর আগে শরীর কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংকেত দিয়ে থাকে। এই সংকেতগুলো সময়মতো চেনা এবং দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়াই জীবন বাঁচানোর সবচেয়ে বড় সুযোগ।
ব্যথা শুধুই বুকে নয়
হার্ট অ্যাটাকের সবচেয়ে পরিচিত উপসর্গ হচ্ছে বুকে ব্যথা বা চাপ অনুভব। অনেক রোগী একে বর্ণনা করেন পাথরচাপা পড়ার মতো একটা ভারী অনুভূতি হিসেবে। সাধারণত ব্যথাটা হয় বুকের মাঝখানে বা একটু বাম দিকে। তবে ব্যথা সবসময় এক জায়গায় সীমাবদ্ধ থাকে না।
এটা ছড়িয়ে পড়তে পারে বাম হাতে, ঘাড়ে, চোয়ালে, পিঠ বা এমনকি পেটেও। আশ্চর্যের বিষয় হলো, কিছু ক্ষেত্রে ব্যথা কেবল চোয়াল বা হাতে হয়—বুকে কোনো ব্যথাই হয় না। আর এই ভিন্নধর্মী উপসর্গই হার্ট অ্যাটাককে অনেক সময় ধোঁয়াশায় ফেলে দেয়।
সময়মতো মিলছে না সংকেত
হার্ট অ্যাটাকজনিত ব্যথা সাধারণত পাঁচ মিনিট বা তার বেশি স্থায়ী হয় এবং বিশ্রাম নিলেও তা সহজে কমে না। এর সঙ্গে থাকতে পারে শ্বাসকষ্ট, ঠান্ডা ঘাম, বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরা কিংবা হঠাৎ দুর্বল লাগা। নারীদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ক্লান্তি বা ঘাড় ভার লাগাও হতে পারে প্রধান লক্ষণ।
কিছু মানুষের উপসর্গ হয় "নীরব"
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বা ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ থাকলে অনেকের ক্ষেত্রে ব্যথা স্পষ্ট থাকে না। বিশেষ করে নারীরা এবং ডায়াবেটিস রোগীরা অনেক সময় ‘সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক’-এর শিকার হন—যেখানে শারীরিক উপসর্গ এতটাই অনির্দিষ্ট হয় যে সেটাকে হার্ট অ্যাটাক বলেই মনে হয় না।
কী করবেন সংকেত দেখলে
আপনি বা আপনার আশেপাশে কেউ হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গে ভুগছেন, সময় নষ্ট না করে কাছের হাসপাতালে যান। অনেক সময় অ্যাসপিরিন খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়, তবে সেটা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী হওয়া উচিত।
হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ সম্ভব না হলেও, আগাম সংকেত বুঝে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে জীবন রক্ষা করা যায়। নিজের শরীরের পরিবর্তনগুলো নজরে রাখুন, ভুলেও অবহেলা করবেন না। শুধু নিজের জন্য নয়, পরিবার-পরিজনের নিরাপত্তার জন্যও এই সচেতনতা জরুরি। একটুখানি সতর্কতা আপনার কিংবা আপনার প্রিয়জনের জীবন বাঁচাতে পারে।
আরও পড়ুন