বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট ডা. কর্নেল (অব.) জেহাদ খান
নিযুক্ত জনবলের দরকারি অভিজ্ঞতা ও সক্ষমতা অর্জনের পরই বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএমইউ) এর সুপার স্পেশালালাইজড হাসপাতালের রোবটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারটি চালু করা হবে। রোববার (১১ মে) বিএমইউয়ে রোবটিক রিহ্যাবিলিটেশন বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মসূচীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেছেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) ও রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার ইমপ্লিমেন্টেশন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ।
৫ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলবে ১৪ মে পর্যন্ত। এতে অংশ নিচ্ছেন চিকিৎসক, ফিজিওথেরাপিস্টসহ ২১ জন প্রশিক্ষণার্থী। চীনের ৭ জন বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার এর সমন্বয়ে গঠিত চীনা টেকনিক্যাল টিম প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন।
রোবটিক রিহ্যাবিলিটেশন বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মসূচীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) ও রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার ইমপ্লিমেন্টেশন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ, ফিজিক্যাল মেডিসিন এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের চেয়ারম্যান ও শীঘ্রই চালু হতে যাওয়া রোবটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুস শাকুর, উপ-পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. মোঃ আবু নাছের, উপ-পরিচালক (সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল) ডা. এ কে আল মিরাজসহ চীনের টেকনিক্যাল টিম ও প্রশিক্ষণার্থী উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রা-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মোঃ আবুল কালাম আজাদ তার বক্তব্যের শুরুতে চীন সরকার ও বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের প্রতি ধন্যবাদ জানান ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি জানান, চীন সরকার বাংলাদেশকে একটি রোবটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার চালুর জন্য প্রায় ২০ কোটি টাকা মূল্যের রোবটিক যন্ত্রপাতি দিয়েছেন। এই সেন্টার চালুর লক্ষ্যেই আজকের প্রশিক্ষণ কর্মসূচী শুরু করা হয়েছে। এই সেন্টারটি চালু করতে পারলে এটাই হবে বাংলাদেশের প্রথম রোবটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার।
অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, এই সেন্টারে জুলাই গণ অভ্যুত্থানে আহতদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়া হবে। আহতদের মধ্যে যারা দীর্ঘমেয়াদী সমস্যায় ভুগছেন ও পুনবার্সনের প্রয়োজন তারা এই সেন্টারের মাধ্যমে উপকৃত হবেন। তবে সুনির্দিৃষ্ট পরিকল্পনার ভিত্তিতে দেশের সাধারণ রোগীদের জন্যও এই সেন্টার উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। চিকিৎসা ব্যয়ও যতটা সম্ভব রোগীদের সাধ্যের মধ্যে রাখার চেষ্টা করা হবে। সেন্টারটি চালু হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য যে সকল (সংশ্লিষ্ট রোগীরা) রোগীরা বিদেশ যায় তারা এখানে চিকিৎসা নিতে পারবেন, এতে করে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে।
ফিজিক্যাল মেডিসিন এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুস শাকুর বলেন, রোবটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার দক্ষিণ এশিয়াতেই খুব একটা নেই বললেই চলে। এই সেন্টারে রয়েছে ৬২টি রোবট। এরমধ্যে এআই বেসইসড রোবটের সংখ্যা ২২টি। এর মাধ্যমে নিখুঁতভাবে ফিজিওথেরাপিসহ বিভিন্ন চিকিৎসাসেবা দেয়া সম্ভব হবে। জুলাই ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে যারা আহত হয়েছেন বিশেষ করে যাদের দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা প্রয়োজন তারা এখানে চিকিৎসা নিতে পারবেন। সকল ধরনের স্ট্রোক এর রোগী, নিউরোলজিক্যাল ডিসঅর্ডার বা স্নায়ুবিক বৈকল্য, দীর্ঘমেয়াদী ব্যাথা, প্যারালাইসিস জনিত সমস্যা, ফ্রোজেন শোল্ডার, নার্ভের ইনজুরির ফলে দুর্বলতা, অবশজনিত সমস্যা, শরীরের কোথাও শক্ত হয়ে যাওয়া, অ্যাক্সিডেন্ট ও ইনজুরিজনিত দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা এরকম অসংখ্য রোগ ও সমস্যায় ভোগা দেশের মানুষ এই সেন্টার থেকে চিকিৎসাসেবা পাবেন ও উপকৃত হবেন। এ ধরনের রোগীরা এই সেন্টার থেকে চিকিৎসাসেবা নিয়ে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারবেন বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি।
আরও পড়ুন