সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ চলাকালে সেনাবাহিনীর লাঠিচার্জ করার প্রতিবাদে কলেজের কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য শাটডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার (২১ এপ্রিল) সকালে প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনের ফটকে তালা ঝুলিয়ে প্রতীকী রক্তাক্ত অ্যাপ্রোন টানিয়ে দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
এর আগে রোববার রাতে প্রদীপ প্রজ্জ্বালন ও মশাল মিছিল করেন তারা। কলেজের নিজস্ব হাসপাতাল কার্যক্রম চালু ও পর্যাপ্ত ওয়ার্ড সুবিধার দাবিতে বিক্ষোভকালে ওই দিন সেনাবাহিনী তাদের উপর লাঠিচার্জ করলে বেশ কয়েকজন ছাত্রছাত্রী আহত হন।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লক্সে অস্থায়ী ক্যাম্পাস হিসেবে ৫০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। এর প্রায় দুই বছর পর ২০২৩ সালের ৫ নভেম্বর স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর হয় প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে কলেজে পাঁচটি ব্যাচে ২৮০ জন শিক্ষার্থী আছেন।
গত ১৫ এপ্রিল থেকে নিজস্ব হাসপাতাল কার্যক্রম চালু ও পর্যাপ্ত ওয়ার্ড সুবিধার দাবিতে ক্লাস বর্জন করে ধারাবাহিকভাবে মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রদান ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা।
সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজে ইতোমধ্যে পাঁচটি ব্যাচ চালু হয়েছে, কিন্তু এখনো পর্যন্ত নেই কোনো পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল কিংবা ওয়ার্ড সুবিধা। বিগত এক বছরে শিক্ষার্থীরা মাত্র ১০ দিন ক্লিনিক্যাল ওয়ার্ডে প্রশিক্ষণের সুযোগ পেয়েছে, যা একটি মেডিকেল শিক্ষার মৌলিক চাহিদার চরম অবহেলা।
একটি সরকারি মেডিকেল কলেজ ৪-৫ বছর ধরে চালু থাকা সত্ত্বেও এমন গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা না থাকায় শিক্ষার্থীরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে। তারা দুই দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন-
১. দ্রুত পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল স্থাপন, ২. নিয়মিত ওয়ার্ড সুবিধা নিশ্চিতকরণ।
দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন, ক্লাস বর্জনসহ বিভিন্ন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করলেও, কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বারবার শুধু আশ্বাস দেয়া হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
পরিস্থিতি পরিবর্তনের আশায় শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে। কিন্তু তাদের এই যৌক্তিক দাবিকে গুরুত্ব না দিয়ে, সেনাবাহিনী নির্মমভাবে লাঠিচার্জ করে। এতে বহু শিক্ষার্থী আহত হয়, যার অনেকেই গুরুতর।
আরও পড়ুন