গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে ‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’ কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশে শিক্ষার্থীদের বাধা দেওয়ায় বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) মনোরোগবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ডা. সুলতানা আলগিনকে সকল কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
গত ১২ এপ্রিল বিএমইউ রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক নোটিসে এ কথা জানানো হয়েছে।
তাকে কর্তব্যে অবহেলায় অভিযুক্ত করে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিভাগীয় একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়।
নোটিসে বলা হয়েছে, ‘ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে স্মারক নং-বিএসএমএমইউ/২০২৫/৫০৪২, তারিখ: ০৭/০৪/২০২৫ইং মোতাবেক এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। কিন্তু উক্ত বিষয়ে দাপ্তরিকভাবে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরও জোরপূর্বক পোস্ট গ্রাজুয়েট শিক্ষার্থী চিকিৎসকদের ক্লাসে অবস্থান করতে বাধ্য করার বিষয়ে 'বৈষম্যবিরোধী চিকিৎসক ফোরাম (বৈচিফ)' ও 'Mr. Fazle Rahman Pinak. News Editor, iON TV (Sky Channel 782)' কর্তৃক লিখিতভাবে আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ পেশ করা হয়েছে। এ মর্মে উক্ত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের নিমিত্ত (স্মারক নং-বিএসএমএমইউ/২০২৫/৫১০০, তারিখ: ০৮/০৪/২০২৫ইং) কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে 'তদন্ত কমিটি' গঠন করা হয়। গঠিত কমিটির সিদ্ধান্তের ক্রমিক ৩ মোতাবেক আপনি পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিভাগীয় একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।’
সদয় অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এর অনুলিপি সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে পাঠানো হয়।
সূত্র মতে, ‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’ কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে গত ৭ এপ্রিল সকালে সব ক্লাস ও পরীক্ষা সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার নোটিস দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে ডা. সুলতানা আলগিন সেই নির্দেশনা অমান্য করে প্রশিক্ষণার্থী চিকিৎসকদের ক্লাসে উপস্থিত হতে বাধ্য করেন। এমনকি কোনো শিক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকলে পরীক্ষায় অংশ নিতে না দেওয়া বা ফেল করিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন বলেও অভিযোগ করেছেন একাধিক শিক্ষার্থী।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ক্লাসে না গেলে ভবিষ্যতে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে না—এমন হুমকির মুখে বৈশ্বিক এই কর্মসূচি বাদ রেখে ক্লাসে যেতে বাধ্য হন তারা।
এ অভিযোগ তদন্তে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈঠকে একটি কমিটি গঠন করা হয়। প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
এমইউ/
আরও পড়ুন