Advertisement
Doctor TV

বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫


সন্ধানী: ৪৮ বছরে মানবতার কল্যাণে এক মহীরুহ

Main Image

সন্ধানী কেন্দ্রীয় পরিষদ


“আমার চোখে দেখুক বিশ্ব, জাগুক সকল প্রাণ
আমার রক্তে বাঁচুক জীবন, হাসুক সকল প্রাণ…”

 

আজ ৫ ফেব্রুয়ারি,২০২৫  সন্ধানীর ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সফল হোক, সার্থক হোক। বাংলাদেশের স্বেচ্ছায় রক্তদান আন্দোলনের পথিকৃৎ সন্ধানী মানবতার কল্যাণে প্রায় অর্ধশতক অতিক্রম করে চলেছে সন্ধানীয়ানদের দৃঢ় মনোবল এবং ভালোবাসার জন্য।

 

১৯৭৭ সাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষে পড়েন মো. ইদ্রিস আলী মঞ্জু। একদিন তিনি জানতে পারেন, তাদের এক সহপাঠী আর্থিক সমস্যার কারনে সকালের নাস্তা না করে অভূক্ত অবস্থায় দুপুর দুটা পর্যন্ত ক্লাস করেন। বিষয়টি তাকে ভীষণ ভাবে নাড়া দিলে ১৯৭৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি সকালে নাস্তার টেবিলে ব্যাপারটি তিনি আরো পাঁচ জন সহপাঠীকে জানান এবং তারা ছয়জন মিলে ঐ সহপাঠির প্রতিদিনের সকালের নাস্তার ব্যবস্থা করেন। এভাবে নামহীনভাবে সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রেক্ষাপটে ১৯৭৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি যাত্রা শুরু হয় সন্ধানীর।

 

 

সহপাঠীকে সাহায্যের বিষয়টি তাদের ভাবিয়ে তুলে। এমন আরো শত শত অসহায় শিক্ষার্থী ও হাসপাতালের রোগীদের কথা চিন্তা করে তারা তাদের কাজটিকে একটি সাংগঠনিক রূপ দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেন। ১৯৭৭ সালের ১৯ মার্চ বিকাল ৫ টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রত্যেকে সংগঠনের একটি করে নাম ঠিক করতে একত্রিত হলে মোশাররফ হোসেন মুক্ত'র প্রস্তাবিত ‘সন্ধানী’ নামটি সবাই সংগঠনের জন্য মনোনীত করে। পাশাপাশি গঠিত হয় প্রথম কমিটি এবং পরবর্তীতে ছয় জন মিলে তৈরি করে সন্ধানীর প্রথম সংবিধান ‘সন্ধানী নিয়াবলী’। যেখানে সন্ধানীর উদ্দেশ্য হিসেবে লেখা ছিল- ‘যাবতীয় অন্যায় অনাচার থেকে মুক্ত রেখে নিজেদের আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা এবং মানবতার কল্যাণের জন্য সাধ্যানুযায়ী সার্বিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া।”

 

 

সন্ধানীকে জাতীয় পর্যায়ের প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৩ সালে স্বীকৃতি দেয়। পরবর্তীতে ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ সমাজ কল্যাণ পরিষদ ও যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের অনুমোদন প্রদান করে। একই বছর এশিয়ার একমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে সন্ধানী পায় ‘কমনওয়েলথ ইয়ুথ সার্ভিস এওয়ার্ড'। ২০০৪ সালে ‘সমাজসেবা’ ক্যাটাগরিতে ছাত্র-ছাত্রী পরিচালিত বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে সন্ধানী অর্জন করে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ‘স্বাধীনতা পদক’।

 


সন্ধানীর ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেশব্যাপী বিভিন্ন মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে সন্ধানী ইউনিট এবং ডোনার ক্লাবগুলোতে বেশ জাক জমকপূর্ণভাবে পালিত হবে দিনটি। 

 

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সকল সন্ধানীয়ান এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের শুভেচ্ছা জানান সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মুকাররাবিন হক নিবিড়। মেডিকেল ও ডেন্টাল শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিচালিত সর্ববৃহৎ এই অরাজনৈতিক সংগঠনটি উন্নতির আরও উচ্চতা স্পর্শ করুক এই সকলের কামনা।


শুভ জন্মদিন সন্ধানী

জয় হোক মানবতার
জয় হোক সন্ধানীর ❤
 

লেখকঃ
মুকাররাবিন হক নিবিড়

কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক, 

সন্ধানী কেন্দ্রীয় পরিষদ। 

আরও পড়ুন