সারভাইক্যাল ক্যান্সার তথা জরায়ুমুখ ক্যান্সার সচেতনতা মাস উপলক্ষ্যে রোববার (১৯ জানুয়ারি) অবসটেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকলিজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ (ওজিএসবি) আয়োজিত সায়েন্টিফিক সেমিনার
প্রাণঘাতী জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে সময়মতো হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। সারভাইক্যাল ক্যান্সার তথা জরায়ুমুখ ক্যান্সার সচেতনতা মাস উপলক্ষ্যে রোববার (১৯ জানুয়ারি) অবসটেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকলিজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ (ওজিএসবি) আয়োজিত সায়েন্টিফিক সেমিনারে বক্তারা টিকা প্রয়োগের গুরুত্ব তুলে ধরেন। সেমিনারের সায়েন্টিফিক পার্টনার ছিল ইনসেপ্টা।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ওজিএসবির সভাপতি অধ্যাপক ডা. ফারহানা দেওয়ান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সেক্রটারি জেনারেল অধ্যাপক ডা. সালমা রউফ।
সেমিনারে জানানো হয়, সার্ভিকাল ক্যান্সার বা জরায়ু মুখ ক্যান্সার নারীদের জন্য একটি ভয়াবহ ব্যাধি। বিশ্বে প্রতি দুই মিনিটে একজন নারী জরায়ুমুখ ক্যান্সারে মৃত্যুবরণ করেন। প্রতি বছর ৫০ লক্ষাধিক নারী এই রোগে নতুন করে আক্রান্ত হন। স্তন, ঠোঁট এবং মৌখিক গহ্বরের ক্যান্সারের পরে জরায়ুর ক্যান্সার হলো মেয়েদের তৃতীয় সর্বাধিক সাধারণ ক্যান্সার।
জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সর্বশেষ প্রকাশ করা প্রতিবেদন মতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ৬,৬০০ নারী জরায়ুমুখ ক্যান্সারে মারা যান আর ১৩,০০০ নারী নতুন করে এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। এ হিসেবে প্রতিদিন গড়ে সারা দেশে ১৮ জন নারী মারা যাচ্ছেন জরায়ু-মুখ ক্যান্সারে।
প্রায় ৯৯.৯% সার্ভিকাল ক্যান্সার হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট হয়। চিকিৎসা শাস্ত্রে একে সংক্ষেপে এইচপিভি বলে। একটানা এইচপিভি সংক্রমণের পর একজন মহিলার জরায়ুমুখের ক্যান্সার হতে প্রায় ১৫ থেকে ১৮ বছর সময় লাগে। যৌন অনুশীলন এবং একাধিক যৌন সঙ্গীর পরিবর্তন হলে এইচপিভি সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা তৈরি হয়। তাছাড়া অপরিষ্কার, অপরিচ্ছন্নতা আর অজ্ঞতার কারণেও এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এই ক্যান্সার প্রতিরোধে সাধারণত ১০ বছর বয়সের পর থেকেই জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধক টিকা নেওয়া উচিত। টিকা নিতে হয় মোট তিনবার। প্রথম ডোজের এক মাস পর দ্বিতীয় ডোজ এবং প্রথম ডোজের ছয় মাস পর তৃতীয় ডোজ টিকা নিতে হয়। ৯ থেকে ২৫ বছর বয়সে এ টিকা কার্যকর হয়। গর্ভাবস্থায় এ টিকা প্রদানের অনুমোদন নেই। আক্রান্ত হয়ে ক্যান্সার সংঘটনের পর এই টিকা আর কোনো কাজে আসে না।
টিকা গ্রহণের পাশাপাশি নিয়মিত পেপস স্মেয়ার টেস্ট বা প্যাপ স্মিয়ার টেস্ট করালে জরায়ুমুখ ক্যান্সারের আক্রমণ হার কমিয়ে আনা যায়। তবে ঔষধি প্রতিরোধকের চেয়ে আচরণগত প্রতিরোধকের দিকে গবেষকরা বেশি গুরুত্বারোপ করেছেন।
আরও পড়ুন