‘অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান সেকশন বন্ধে নাগরিকমঞ্চ বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ আয়োজিত হাইকোর্টের নির্দেশ ও তার বাস্তবায়ন’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা
দেশে শিক্ষিত ও চাকরিজীবীদের মধ্যে সিজারিয়ান-সেকশনের প্রবণতা বেশি। হাসপাতালে আসার আগেই তারা সিজারের ব্যাপারে মনস্থির করে আসেন। রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান সেকশন বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশ ও তার বাস্তবায়ন’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বিশেষজ্ঞ বক্তারা এসব কথা বলেন। সিজারের মধ্যে অধিকাংশই অপ্রয়োজনীয় বলে উল্লেখ করেন তারা।
নাগরিকমঞ্চ বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলোজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের (ওজিএসবি) সভাপতি অধ্যাপক ডা. ফারহানা দেওয়ান।
বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম।
মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক ডা. ফারহানা দেওয়ান বলেন, প্রাইভেট সেক্টরে সিজারিয়ান সেকশন সবচেয়ে বেশি হচ্ছে। এমনকি যারা শিক্ষিত ও চাকরিজীবী তাদের মধ্যে সি-সেকশনের প্রবণতা বেশি। বাংলাদেশে সি-সেকশনের হার খুলনা অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি বলে জানান তিনি।
ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম বলেন, সিজারিয়ান সেকশন করা হয় জীবন রক্ষার জন্য। কিন্তু সিজারিয়ান সেকশনের হার এত বেশি হওয়ার পরও মাতৃ মৃত্যুর হার কমছে না এবং এই মৃত্যুর হার না কমার জন্যই আমরা মনে করছি সি-সেকশনগুলো অপ্রয়োজনীয় বা মাত্রাতিরিক্ত।
ব্যারিস্টার ইমাম তার উপস্থাপনায় সংবিধানের ৩১ নম্বর অনুচ্ছেদের ‘রাইট টু লাইফ’ এর কথা উল্লেখ করেন। সংবিধানে স্বাস্থ্যকে সরাসরি মৌলিক অধিকার বলে স্বীকৃতি না দিলেও বিভিন্ন ভাবে মৌলিক অধিকার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
রাশনা ইমাম আরও বলেন, বাংলাদেশ যদি সর্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা অর্জন করতে চায় তাহলে মাতৃ স্বাস্থ্যকে অনেক বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। কোনো নারী যেন কোনো ধরনের বৈষম্যের শিকার না হয়, সেটা আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। এ সময় ব্যারিস্টার ইমাম সর্বোপরি আইনের যথাযথ প্রয়োগ এবং প্রাইভেট সেক্টরকে সব ধরনের নজরদারির আওতায় আনার জন্য সরকারকে অনুরোধ করেন।
উন্মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ হালিদা হানুম, ওজিএসবির প্রাক্তন সভাপতি ডা. ফেরদৌসী বেগম, সাধারণ সম্পাদক ডা. সালমা রউফ প্রমুখ।
যে সমস্ত প্রাইভেট ক্লিনিকে লেবার রুম নেই, তারা যাতে সিজারিয়ান সেকশন করতে না পারেন- সেজন্য প্রয়োজনীয় আইন তৈরির পরামর্শ দেন বক্তারা।
আরও পড়ুন