Advertisement
Doctor TV

বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫


‘অবহেলা ও ভুল চিকিৎসার’ অভিযোগ যেভাবে করবেন

Main Image

প্রতিকার পেতে রাজধানীর বিজয় নগরে বিএমডিসি কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দিতে হবে


রাজধানীর গ্রিন রোডে সেন্ট্রাল হাসপাতালে মাহবুবা রহমান আঁখি ও তার নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় আবারও সামনে এসেছে ‘ভুল চিকিৎসা’ বা ‘চিকিৎসায় অবহেলা’। হাসপাতালের কনসালটেন্ট অধ্যাপক ডা. সংযুক্তা সাহার এ রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিয়েছে।

এমন প্রেক্ষাপটে শুক্রবার বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) শৃঙ্খলা কমিটি বৈঠক করে ডা. সংযুক্তা সাহা ইস্যুতে ব্যবস্থা নেওয়ার আগ্রহ দেখায়। তবে ‘ভুল কিংবা চিকিৎসায় অবহেলার’ কারণে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে কীভাবে প্রতিকার পাবেন, তার সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন রয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, চিকিৎসায় অবহেলা, ভুল চিকিৎসা কিংবা চিকিৎসাজনিত অভিযোগের প্রতিকার পেতে রাজধানীর বিজয় নগরে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দিতে হবে।

অভিযোগটি নথিভুক্ত করার পর সেটি যাবে বিএমডিসির ট্রেজারারের কাছে। তিনি যদি মনে করেন, অভিযোগটি শৃঙ্খলা কমিটির বৈঠকে আলোচ্যসূচি হিসেবে দেওয়া দরকার, তাহলেই সেটি কার্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করবেন। তিনি যদি মনে করেন, দরকার নেই, তাহলে সেটি অভিযোগ হিসেবে গ্রহণ হবে না।

যেসব অভিযোগ কার্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়, সেগুলো শৃঙ্খলা কমিটির বৈঠকে বিশ্লেষণ হয়। বিশ্লেষণের পর অভিযোগকারী এবং বিবাদীকে চিঠি দেওয়া হয়। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাকে জবাব দিতে ১৫ দিন সময় দেওয়া হয়।

এরপর শুনানির জন্য নির্দিষ্ট দিনে শৃঙ্খলা কমিটি দু’পক্ষের বক্তব্য শোনে। কমিটি মনে করলে অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য বিশেষায়িত তদন্ত কমিটিও গঠন করতে পারে।

বিষয়ভিত্তিক তদন্তের সুবিধার জন্য বিভিন্ন সরকারি মেডিকেল কলেজের বিভাগীয় প্রধানদের নিয়ে এ কমিটি করা হয়। বিএমডিসি অভিযোগ-সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র কমিটির কাছে পাঠিয়ে দেয়। ওই কমিটি কাগজপত্র পরীক্ষা করে যদি মনে করে, বাদী-বিবাদীর সঙ্গে আরও কথা বলা দরকার, তাহলে তারা দু’পক্ষকে আবারও ডাকবে। ফলে কয়েক দফা বৈঠক করতে হয়, অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে কয়েক মাস পর্যন্ত লাগতে পারে।

বিশেষজ্ঞ কমিটি তদন্ত শেষে শৃঙ্খলা কমিটির কাছে সুপারিশ করে। শৃঙ্খলা কমিটি সব তদন্ত প্রতিবেদন, সবগুলো বৈঠকের প্রতিবেদন দেখে ও বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয় অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তদন্ত কমিটি শাস্তিমূলক ব্যবস্থার সুপারিশ করে। আর শৃঙ্খলা কমিটি যদি মনে করে সবকিছু ঠিকঠাক আছে, তাহলে একটি সিদ্ধান্তে চলে আসে। আর কখনও যদি তদন্ত কমিটি শাস্তির সুপারিশ করে কিন্তু শাস্তির মেয়াদ বলে না দেয়, তখন সে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে শৃঙ্খলা কমিটি।

শৃঙ্খলা কমিটির সুপারিশ যায় কার্যনির্বাহী কমিটির কাছে। সেখানে আরেকবার অভিযোগের বিষয়ে আলোচনা হয় এবং এ কমিটি সুপারিশ অনুমোদন করলে বিএমডিসি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারে।

বিএমডিসির ভারপ্রাপ্ত ট্রেজারার লিয়াকত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, সুপারিশ বাস্তবায়নের পদ্ধতি হচ্ছে, সিদ্ধান্ত নিয়ে অভিযুক্তকে চিঠি দেওয়া হয়। তাকে সাত দিনের সময় দেওয়া হয় আত্মপক্ষ সমর্থনে। তার উত্তর গ্রহণযোগ্য না হলে, যদি নতুন কিছু প্রমাণ করতে না পারেন, সেক্ষেত্রে শাস্তি কার্যকর করা হয়।

আরও পড়ুন