Advertisement
Doctor TV

রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫


অসহায় দুরারোগ্য রোগী ও আর্তমানবতার সেবায় মুনির ফাউন্ডেশন

Main Image

বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা অসহায় রোগীর পাশে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে কাজ করছে মুনির ফাউন্ডেশন


আর্তমানবতার সেবা ও দরিদ্র দুরারোগ্য মুমূর্ষু রোগীদের পাশে এগিয়ে আসার মাধ্যমে তাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছে মুনির ফাউন্ডেশন। দরিদ্র রোগীদের কথা মাথায় রেখে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ‘মেডিকেল ভিলেজ’ স্থাপনের লক্ষ্য তাদের। ডক্টর টিভি অনলাইনকে এ তথ্য জানিয়েছেন সংগঠনটির জেনারেল সেক্রেটারি শরিফ সিরাজী। 

তিনি জানান, মুনির ফাউন্ডেশনের যাত্রা শুরু ২০১৯ সালে। বিগত ৩ বছরে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রায় ১ কোটি টাকার সমপরিমাণ আর্থিক সহায়তা লাভ করেছে সংগঠনটি। সেখান থেকে এখন পর্যন্ত ১৩৯ জন দূরারোগ্য রোগীকে বিভিন্ন অংকের আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন মুনির ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি জেনারেল শরিফুল ইসলাম সিরাজী। 

শরিফুল ইসলাম সিরাজী জানান, মুনির ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠা মুজাহিদুল ইসলাম মুনির নামের অতি সাধারণ একজন ব্যক্তির নামে। তিনি ছিলেন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বাসিন্দা। ২০১৭ সালে প্রাণঘাতী ক্যানসার বা লার্জ ডিফিউজড বি-সেল লিম্ফোমায় আক্রান্ত হন।  তখন সুচিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি। কিন্তু মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে ২০১৯ সালে তার শরীরে আবারও ক্যানসার ধরা পড়ে। 

শরিফুল ইসলাম সিরাজী জানান, প্রথমবার পারিবারিক সম্পত্তি বিক্রি করে মুনিরের চিকিৎসা করা সম্ভব হয়। দ্বিতীয়বার ক্যান্সারের চিকিৎসা করার সামর্থ্য না থাকায় ক্রাউডফান্ডিংয়ের (মানুষের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে) মাধ্যমে টাকা যোগাড় করা হয়। তখন সবার সহায়তা পেয়ে আপ্লুত হয়ে পড়েন মুনির। মনের ইচ্ছা প্রকাশ করে তিনি বন্ধু-স্বজনদের জানান যে, সবাই তাকে চিকিৎসার জন্য যেভাবে সহায়তা করেছে, ঠিক একইভাবে তিনিও অন্য অসহায় রোগীদের পাশে দাঁড়াতে চান। যেন আর্থিক সমস্যা থাকলেও প্রত্যেকেই চিকিৎসা করার সুযোগ পায়। কিন্তু সেই ইচ্ছা পূরণ হয়নি মুনিরের। ওই বছরের ২৯ জুন ভারতের ব্যাঙ্গালোরের মজুমদার ক্যানসার সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

মুনিরের মৃত্যুর পরে তার স্মৃতি ও ইচ্ছাকে বাস্তবে রূপ দিতে কিছু উদ্যোমী যুবক মিলে গড়ে তোলেন ‘মুনির ফাউন্ডেশন’। ইতোমধ্যে সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট- ১৮৬০ অনুযায়ী রেজিস্টেশনও পেয়েছে সংস্থাটি।

শরিফুল ইসলাম সিরাজী জানান, সাধ্যমত ইসলামী নীতিমালা মেনে পরিচালিত হচ্ছে মুনির ফাউন্ডেশন। ‘যাকাত-সাদাকাহ্’ প্রজেক্টের মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। 

দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা অসহায় রোগীদের পাশে দাঁড়ানোর কাজ চলছে মুনির ফাউন্ডেশন পরিচালিত পেশেন্ট ক্রাউডফান্ডিং প্রজেক্টের মাধ্যমে। ক্রাউডফান্ডিং তথা মানুষের কাছ থেকে প্রাপ্ত অর্থ  সহায়তা ব্যয় করা হয় অসহায় এবং গরিব রোগীদের সেবায়। অনলাইনে কার্যক্রম পরিচালনার সুবিধার্থে ক্রাউডফান্ডিং ওয়েবসাইটও খুলেছে মুনির ফাউন্ডেশন। আর্তমানবতার সেবায় তাদের এই উদ্যোগে যথেষ্ট সফল হয়েছে। যার ফলে অল্প কয়েক বছরের মধ্যেই ফাউন্ডেশনের নাম ছড়িয়ে পড়েছে দেশব্যাপী। 

শরিফুল ইসলাম সিরাজী জানান, তিন ধরনের সদস্য নিয়ে কাজ করে থাকে মুনির ফাউন্ডেশন। সেগুলো হলো-  আজীবন সদস্য, দাতা সদস্য, স্বেচ্ছাসেবক। আজীবন সদস্য হতে চাইলে ফাউন্ডেশনের তহবিলে এককালীন ন্যূনতম ১ লাখ টাকা দান করতে হবে। দাতা সদস্যরা দিয়ে থাকেন এককালীন ৫০ হাজার বা তারও বেশি টাকা। এ ছাড়া সংস্থার ফান্ডে যে কোনো পরিমাণ অর্থ দান ও কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতার মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যোগ দিতে পারেন যে-কেউ।

আরও পড়ুন