Advertisement
Doctor TV

বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫


ডেঙ্গুর নতুন উপসর্গ বাড়াচ্ছে উদ্বেগ

Main Image

শিশুদের তীব্র জ্বর দেখা দিলেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা


ডেঙ্গুতে এ বছর প্রাণহানি পৌঁছেছে ১৯২ জনে, যা নতুন রেকর্ড। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৫ জনের মৃত্যু নিয়ে নতুন এ রেকর্ড হয়েছে। এবার কম বয়সীদের মৃত্যু বেশি। আর ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশুরা যেসব লক্ষণ-উপসর্গ নিয়ে আসছে, সেগুলো আগে তেমন দেখা যায়নি।

এর মধ্যে ফুসফুসের রক্তক্ষরণ নতুন উপসর্গ। কেউ কেউ গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। হঠাৎ অবস্থার  অবনতিতে অনেকেই মারা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

ডেঙ্গুতে শিশুদের মৃত্যু বেশি হওয়ায় অভিভাবকরা রয়েছেন ব্যাপক উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায়। এমন পরিস্থিতিতে শিশুদের তীব্র জ্বর দেখা দিলেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

কীটতত্ত্ববিদরা মনে করছেন, ডেঙ্গুর জন্য দায়ী এডিস মশার দাপট ১৫ দিনের মধ্যে কমলেও তা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে সময় লাগবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৯ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল ১৮৯ জনের। সে সময় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন।

তিন বছর আগের তুলনায় এখন রোগীর সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশ। তারপরও মৃত্যু বেড়ে রেকর্ড ছাড়িয়েছে। অতীতে নভেম্বর মাসে ডেঙ্গুর বিস্তার ও মৃত্যুর ঘটনা ছিল বিরল। ঠিক যে সময়ে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে থাকার কথা, সে সময়েই তা বাড়ছে দ্বিগুণ গতিতে। যার ফলে উদ্বেগ সর্বত্র।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৮৮৮ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ সময়ে মারা গেছেন ৫ জন। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৯২ জন।

ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ২৪ ঘণ্টায় ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ৪৭৫ জন ভর্তি হয়েছেন। একই সময়ে ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪১৩ জন রোগী।

প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও ইমেরিটাস অধ্যাপক এ বি এম আব্দুল্লাহ বলছেন, ‘এবার মানুষ সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ডেন-থ্রি ধরনে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। আরেকটি কারণ হলো এবার যারা মারা যাচ্ছেন, তাদের বেশিরভাগ আগেও ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘ডেঙ্গুতে মৃত্যুর প্রধান কারণ রক্তের প্ল্যাটিলেট কমে যাওয়া, যে কারণে শুরু হয় রক্তক্ষরণ। করোনার মতো এই ভাইরাসে আক্রান্তরাও যদি আগে থেকে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, ক্যান্সাসার, কিডনির মতো সমস্যায় ভোগেন, তাহলে মৃত্যুঝুঁকি বেশি থাকে।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ কবিরুল বাশার বলেন, ‘অন্য বছরের মতো এবার খুব দ্রুত ডেঙ্গু চলে যাবে না। তবে প্রেডিকশন বলছে, ১৫ দিন পর থেকে কমতে শুরু করবে। পুরোপুরি যাবে না, কিছুটা দুর্বল হবে।’

জলবায়ুর পরিবর্তন, মানুষের শরীরে জীবাণুর বাসা, মশা জন্মানোর জন্য কিছু স্থায়ী জায়গা তৈরি হয়ে থাকা, ওয়াসার লাইনে লিকেজ, বাড়ির পার্কিংয়ে গাড়ি ধোয়াসহ বিভিন্ন বিষয় এবার ডেঙ্গুর বিস্তারে ভূমিকা রাখছে বলে মনে করেন তিনি।

আরও পড়ুন