Advertisement
Doctor TV

মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫


সিত্রাং তাণ্ডবের রাতে মোংলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৭ শিশুর জন্ম

Main Image

সিত্রাংয়ের তান্ডবের রাতে মোংলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জন্ম নেয়া নবজাতকদের নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ফটোশেসন


ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের তান্ডবের মধ্যেই বিদ্যুৎহীন ঘুটঘুটে অন্ধকার রাতে ৭ গর্ভবর্তী নারীর সফল ডেলিভারি হয়েছে বাগেরহাটের মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। 

সোমবার রাতের প্রচন্ড ঝড়-বৃষ্টির মধ্যেই স্বজনদের নিয়ে হাজির হন বিভিন্ন এলাকা থেকে আসেন সরকারী এ হাসপাতালে। বিদ্যুৎ না থাকায় হাসপাতালেও ওই রাতে এক প্রকার ভুতুড়ে অবস্থা ছিলো। রাতে হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক ও নার্সেরা খবর দেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোঃ শাহীন হোসেনকে। খবর পেয়ে তিনি দ্রুত হাসপাতালে ছুটে এসে বাকী সকল চিকিৎসক ও নার্সদের খবর দিয়ে নিয়ে আসেন। এরপর এক এক করে শুরু হয় প্রসূত মায়েদের সেবা। বিদ্যুৎ নাথাকায় চার্জার লাইট, মোবাইল টর্চ আর মোমবাতির আলো দিয়ে প্রসূতিদের সন্তান প্রসব কাজ শুরু করেন হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার, সিনিয়র ষ্টাফ নার্স, মিডওয়াইভস-সহ স্বাস্থ্যকর্মীরা। সে রাতেই একে একে ৭ জন প্রসূতি মায়ের ডেলিভারি সম্পন্ন করেন তারা।

ওই রাতে সন্তান জন্ম দেওয়া ওই প্রসূতি মায়েরা হলেন- মোংলার সিগনাল টাওয়ার এলাকার জাকির হাওলাদারের স্ত্রী মনিরা (৩৩), মাকোরঢোন এলাকার সোহাগ সরদারের স্ত্রী মুক্তা বেগম (১৯), আরাজী মাকোরঢোনের মেহেদী হাসানের স্ত্রী বনানী (১৯), বাঁশতলার মাছুমের স্ত্রী নাঈমা বেগম (২০), নারকেলতলার মজিবর হাওলাদারের স্ত্রী রাজিয়া (৩০), মালগাজীর মানিক শেখের স্ত্রী মিলা (২৬) ও ভাসানী সড়কের আবুল হোসেনের স্ত্রী শাহনাজ বেগম (৪২)।

এ ঘটনার ছবিসহ নিজ ফেসবুক টাইমে উল্লেখ করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোঃ শাহীন হোসেন।

তিনি লিখেছেন, ঘূর্নিঝড় সিত্রাং আমাদের যতই রক্ত চক্ষু দেখাক স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা তাতে মোটেও ভীত নয়!

বঙ্গোপসাগরের কাছে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা সুন্দরবন এর নিকটবর্তী মোংলা উপজেলাতে গতকাল (সোমবার দিবাগত রাত) সিত্রাং এর তান্ডব চলাকালীন প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে একে একে ৮ জন গর্ভবতী মা হাসপাতালে এসে ভর্তি হন। এর মধ্যে গতকাল ভোর হতে ইলেকট্রিসিটি নাই। চার্জার লাইট, মোবাইল টর্চ আর মোমবাতির আলো দিয়ে কাজ করছে মেডিকেল অফিসার, সিনিয়র ষ্টাফ নার্স, মিডওয়াইভস, আয়া, ওয়ার্ড বয়, পরিচ্ছন্নতা কর্মী। লেবার ওয়ার্ডে রোগী রাখার জায়গা নাই। এক্সট্রা বেড দিয়ে রোগী ভর্তি রাখতে হয়েছে।

আমাদের টিম মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টায় সফলভাবে ৭ জন মা'র ডেলিভারি সম্পন্ন হয়।

সারারাত অনেক চেষ্টা করেও একজন মায়ের ডেলিভারি করানো যায় নাই। অবশেষে ভোরবেলা তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। বাকি ৭ জন মা এবং শিশু সুস্থ আছে, ভালো আছে।

মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিম সোমবার সারা দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেও ডিউটিতে উপস্থিত থেকে এত দারুণ ভাবে সেবা কার্যক্রম চালু রেখেছে যে তাদেরকে ধন্যবাদ জানালেও সেটা খুব কম হয়ে যায়!

আরও পড়ুন