Advertisement
Doctor TV

বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫


ব্যান্ডেজ লাগিয়ে ‘প্রক্সি পরীক্ষা’ দিতে এসে আটক মেডিকেল শিক্ষক

Main Image

সাজাপ্রাপ্ত চিকিৎসক হলেন সমীর রায় (২৬)। তিনি খুলনা মেডিকেল কলেজের ২৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন


রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্সি (অন্যের হয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ) জালিয়াত চক্রের আরও দুজনকে আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার চতুর্থ শিফটে তাদের আটক করা হয়।

এর মধ্যে একজন নাক ও মাথায় ব্যান্ডেজ পরে রোগী সেজে অন্যের হয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিলেন। তিনি একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষক। অন্যজন ভর্তি পরীক্ষার্থী। পরে রাতে তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এক বছর করে কারাদণ্ড দিয়ে জেলে পাঠানো হয়েছে।

সাজাপ্রাপ্ত চিকিৎসক হলেন সমীর রায় (২৬)। তিনি গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়ার মৃত সুনীল রায়ের ছেলে। তিনি খুলনা মেডিকেল কলেজের ২৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।

সমীর খুলনার একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে প্রভাষক হিসেবে কর্মরত। তিনি নড়াইলের কালিয়া থানার মো. রাহাত আমিনের (২০) হয়ে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। এ ঘটনায় রাহাতকেও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ভর্তি পরীক্ষায় মূল পরীক্ষার্থী রাহাত আমিনের পরিবর্তে পুরো মাথা, মুখে ব্যান্ডেজ করে পরীক্ষা দিতে আসেন ডা. সমীর। পরীক্ষাকক্ষে দায়িত্বরত দুই শিক্ষককে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার কথা জানান তিনি। দুর্ঘটনার কথা শুনে দায়িত্বরত শিক্ষকরা তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করার কথা বলেন। অ্যাম্বুলেন্স ডাকতে চাইলে সমীর পরীক্ষা শেষে চিকিৎসা নেবেন বলে জানান।

বিকেলে ‘এ’ ইউনিটের চতুর্থ শিফটের পরীক্ষা শুরু হয়। মাথায় ব্যান্ডেজ করা অবস্থায় সমীর পরীক্ষা দেন। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর তিনি চলে যাওয়ার জন্য বেশ তাড়াহুড়ো করেন। তবে পরীক্ষাকক্ষের দায়িত্বরত দুই শিক্ষক তাকে একা যেতে দিতে রাজি হননি। তারা সমীরের মাথার সিটি স্ক্যানসহ চিকিৎসার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন। এ জন্য তারা সমীরের অভিভাবককে ডাকতে বলেন। এরপরও তিনি একা যেতে চান। কিন্তু শিক্ষকেরা তাকে যেতে দেননি। একপর্যায়ে সমীর মূল পরীক্ষার্থীর রাহাত আমিনকে তার অভিভাবক হিসেবে ডাকেন। তখনই বিষয়টি ধরা পড়ে। এরপর প্রক্টর দপ্তরে এনে তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দেওয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আসাবুল হক বলেন, রাহাত আমিন নামের একজনের হয়ে ডা. সমীর রায় প্রক্সি দিতে এসেছিলেন। এ সময় তার মাথা, নাক ও হাতে ব্যান্ডেজ করা ছিল। একপর্যায়ে জালিয়াতি ধরা পড়লে তাকেসহ মূল পরীক্ষার্থীকে সাজা দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কৌশিক আহমেদ বলেন, পাবলিক পরীক্ষা আইনে দুজনকে এক বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

এর আগে একই ইউনিটের অন্য শিফটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে এসে দণ্ড পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী এখলাসুর রহমান, লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল মেহজাবীন ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী বায়েজিদ খান।

এখলাসুর রহমান ভর্তি পরীক্ষার রোল ১৭২২৮-এর পরীক্ষার্থী লিমনের হয়ে, ৩৯৫৩৪ রোলের পরীক্ষার্থী তানভির আহমেদের হয়ে বায়েজিদ খান এবং ৬২৮২৮ রোলের পরীক্ষার্থী মোসা. ইশরাত জাহানের হয়ে জান্নাতুল মেহজাবিন পরীক্ষা দিচ্ছিলেন।

তাদের মধ্যে এখলাসুর রহমান ও বায়েজিদকে এক বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। জান্নাতুল মেহজাবীনকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মেহজাবীন আগেও পরীক্ষায় এ ধরনের জালিয়াতি করেছেন বলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে স্বীকারোক্তি দেন।

আরও পড়ুন