জেলার ১১ উপজেলা সদরের হাসপাতালে আসা রোগীদের ৮০ শতাংশই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত
সুনামগঞ্জে বসতবাড়ি থেকে বন্যার পানি নামার পর রোগবালাই মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। কলেরা, ডায়রিয়া, আমাশয়, জ্বরসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন হাজারো মানুষ।
জেলার ১১ উপজেলা সদরের হাসপাতালে আসা রোগীদের ৮০ শতাংশই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। গত কয়েক বছরের মধ্যে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এমন অস্বস্তিকর পরিবেশ দেখেননি বলে জানিয়েছেন সেবা সংশ্লিষ্টরা।
প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ১৬ জুন সুনামগঞ্জের বেশিরভাগ এলাকা বন্যাকবলিত হয়। ডুবে যায় জেলার ৮০ ভাগের বেশি এলাকা। পানির তোড়ে ঘরে থাকা ধানচাল, গৃহপালিত পশু, জমিতে থাকা সবজি, পুকুরের মাছ সবই ভেসে গেছে। এখনো নিচু এলাকার হাজারো মানুষ পানিবন্দি।
আশ্রয়কেন্দ্র, বসতবাড়ি যেখানেই লোকজন আছেন, সঙ্গে আছে পানিবাহিত রোগ। এর মধ্যে ডায়রিয়াই বেশি। কোনো কোনো ডায়রিয়ার রোগীর অবস্থা কলেরার পর্যায়ে।
সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া রফিকুন্নেছা বলেন, এতো ভিড়, মেঝেতে থেকেই তিন দিন হয় ডায়রিয়ার চিকিৎসা নিতে হচ্চে তাদের।
জেলার দোয়ারাবাজার হাসপাতালের উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার ডা. হাসান মাহমুদ বলেন, হাসপাতালে আসা রোগীদের ৮০ ভাগই এখন পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত। এর মধ্যে ডায়রিয়া রোগীই বেশি, দুয়েকজন কলেরা নিয়েও আসছেন।
সুনামগঞ্জের ৩০০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আনিসুর রহমান বলেন, বন্যার সময় হাসপাতালের তালা ভেঙে আউটডোর ছাড়াও কক্ষে ঢুকে আইসিইউ বেড ভেঙেছেন বন্যার্তরা, গরু-ছাগল রেখেছেন। মানবিক বিপর্যয়ের সময় এই বিষয়ে কিছুই করার ছিল না। কিন্তু ব্যবস্থাপনা না থাকায় এখন পানিবাহিত রোগীর চাপ সামলানো কঠিন হচ্ছে।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. আহম্মদ হোসেন বলেন, পানিবাহিত রোগবালাই অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত জেলার ১১ উপজেলা হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগী ভর্তি ছিলেন ৭৪৪ জন। এর মধ্যে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় বিভিন্ন হাসপাতালে আক্রান্ত ১০৭ জন ভর্তি হয়েছেন।
তিনি আরও জানান, স্বাস্থ্য বিভাগের ১২০টি টিম ঘরে ঘরে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও ওরস্যালাইন পৌঁছে দিচ্ছে। প্রত্যেকটি হাসপাতালের আউটডোরেও এ বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন