Advertisement
Doctor TV

বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫


ফেনসিডিল কোনো ওষুধ নয়

Main Image

অতিরিক্ত সেবনে কিডনি জটিলতা, শারীরিক দূর্বলতা, কোষ্ঠকাঠিন্যসহ ক্ষতি করে হৃতপিণ্ডের


আশির দশকে কাশির সিরাপ হিসেবে পরিচয় পাওয়া ফেনসিডিল দ্রুতই পরিণত হয় নেশাদ্রব্য হিসেবে। ফেনসিডিলের প্রধান উপাদান মরফিন এবং হাইড্রোকডোন কাশি নিবারণে কিছুটা কাজ করলেও দীর্ঘদিন এটি সেবনে নেশায় পরিণত হয়।

অন্যান্য মাদকের মতো নির্ভরশীলতা তৈরি করায় ১৯৮২ সালের মাদকদ্রব নিয়ন্ত্রণ আইনে ফেন্সিডিলকে নিষিদ্ধ করা হয়। শুরুর দিকে ভালো লাগা থেকে এক পর্যায়ে পরিণত হয় আসক্তিতে।

এ বিষয়ে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট হাসপাতালের মনেরারোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মো. তৈয়বুর রহমান বলেন, ফেন্সিডিল গ্রহণের শুরুর দিকে কিছুটা ফেসিনেশন বা আগ্রহ তৈরি করে। এক পর্যায়ে সেটি নির্ভরশীলতা তৈরি করে। এসময় একদিন এটি গ্রহণ করা বাদ দিলে কিছু শারীরিক উপসর্গ তৈরি হয় যা হেরোইনের মতো অন্যান্য মাদকের মতোই। এর মধ্যে শরীরে তীব্র ব্যথা হওয়া, নাক দিয়ে পানি ঝরা, ডায়রিয়া হওয়া, মাংস পেশিতে সংকোচন হয় এবং এসময় রোগী অস্থির হয়ে পড়ে।

দেশে নিষিদ্ধ হওয়ায় চোরাইপথে আসা এ মাদক, প্রতিনিয়ত উদ্ধার করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। সর্বশেষ ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে সর্বচ্চ যাবজ্জীবন কারদণ্ডের বিধান থাকলেও, এখনও চুড়ান্ত সাজা হয়নি কোনো মামলারই।

২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পাঁচ লিটার ফেন্সিডিল কোডিন মিশ্রিত দ্রব্য পাওয়া গেলে দশ বছরের সাজা এবং এর বেশি হলে জাবাজ্জীবন সাজার বিধান আছে বলে জানা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রধান রাসায়নিক পরীক্ষক ড. দুলাল কৃষ্ণ সাহা।

তিনি বলেন, ২০১৫ সালে ভারত-বাংলাদেশের সচিব পর্যায়ের বৈঠকে সীমান্ত এলাকার প্রায় দুইশো ফেন্সিডিল কারখানা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়। এর পরেও পার্শবর্তী রাজ্যগুলো থেকে এখনও কিছু মাদক দেশে আসে। তবে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠর নজরদারীতে সেগুলোর অধিকাংশই উদ্ধার ও ধ্বংস করা হয়।

ফেন্সিডিলে থাকা অ্যান্টি-হিস্টামিন পরিমিত সেবেনে কাশি প্রতিরোধে সমান্য কাজ করলেও, অতিরিক্ত সেবনে কিডনি জটিলতা, শারীরিক দূর্বলতা, কোষ্ঠকাঠিন্য, এবং হৃতপিণ্ডে ক্ষতিসাধন করে বলে মনে করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. সৈয়দ আতিকুল হক।

তিনি বলেন, অতিরিক্ত সেবনে ঘুমঘুম ভাব ও কাজের প্রতি অনিহাসহ তৈরি হয় নানা জটিলতা। তরুনদের মধ্যে এই মাদক সেবনের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় নষ্ট হয় দেশের উৎপাদন শ্রমঘণ্টা।

আরও পড়ুন