Advertisement
Doctor TV

মঙ্গলবার, ২২ জুলাই, ২০২৫


করোনায় নাকাল উত্তরাঞ্চল, দিনে গড়ে ১০ মৃত্যু

Main Image

চলতি মাসের ১৬ দিনে ১৬১ রোগীর মৃত্যু হয়েছে


করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে নাকাল সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলো। প্রত্যেক দিন রোগী শনাক্তের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যু। পরিস্থিতি সামাল দিতে সর্বাত্মক লকডাউন দেওয়া হলেও পরিস্থিতির খুব একটা পরিবর্তন হচ্ছে না।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতে শনাক্ত অতিসংক্রামক ডেল্টা ধরনের কারণে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে করোনায় শনাক্ত রোগীর সাথে মৃত্যু বাড়ছে। এখনো ভারত থেকে অবৈধ পথে যাত্রীদের আসা-যাওয়া অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে গ্রামাঞ্চল থেকে করোনার এ ধরন শহরমুখী হচ্ছে। এসব বন্ধ করা না গেলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে বলে সতর্ক করছেন তারা।

আজ বুধবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালের করোনা ইউনিটে আরও ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচজনের করোনা পজিটিভ ছিল। বাকিরা মারা যান উপসর্গ নিয়ে। এ নিয়ে চলতি মাসের ১৬ দিনে এখানে ১৬১ রোগীর মৃত্যু হলো। এদের মধ্যে ৯৩ জনই মারা গেছেন করোনা শনাক্ত হওয়ার পর। বাকিরা উপসর্গ নিয়ে মারা যান। দিনে গড়ে ১০ জনের বেশি মৃত্যু হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি না মানায় জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও গ্রাম পর্যায়ে করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ১ জুন সাত, ২ জুন সাত, ৩ জুন নয়, ৪ জুন ১৬, ৫ জুন আট, ৬ জুন ছয়, ৭ জুন ১১, ৮ জুন আট, ৯ জুন আট, ১০ জুন ১২, ১১ জুন ১৫, ১২ চার, ১৩ জুন ১৩, ১৪ জুন ১২, ১৫ জুন ১২ ও ১৬ জুন ১৩ জন মারা যান।

হাসপাতালে করোনা ও ইউনিটগুলোতে আটটি টিমে সেবা দিচ্ছেন মোট ৮০ চিকিৎসক। সাথে নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন ৫০০ জন। রামেক হাসপাতালের পরিচালক জানান, রোগীর চাপ বাড়ায় আজ এ হাসপাতালে দুটি আইসিইউসহ ৩৪টি বেড বাড়ানো হয়েছে। আরও ১৫ চিকিৎসকের চাহিদার চিঠি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে দেওয়া হয়েছে। সপ্তাহ খানেক আগেও এখানে ১৫ চিকিৎসকক দেয় অধিদপ্তর। আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত ২০টি আইসিইউসহ ৩০৫ বেডের বিপরীতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৩৪৪ জন। বাকিদের মেঝেসহ অতিরিক্ত বেডের ব্যবস্থা করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

রাজশাহী মেডিকলে করোনায় মারা যাওয়াদের বেশিরভাগই ভারতীয় ডেল্টা ধরনে আক্রান্ত বলে মনে করছেন রামেক হাসপাতাল পরিচালক বিগ্রেডিয়ার শামীম ইয়াজদানী। তিনি বলেন, ‘এখন আসা রোগীদের শারীরিক সমস্যা গতবছরের করোনার লক্ষণের চেয়ে আলাদা। মৃতদের বেশিরভাগই চিকিৎসাকালে অবস্থা খারাপ থাকছে। শহরের চেয়ে এখন গ্রামে শনাক্ত অনেক বেড়ে গেছে। বর্তমানে রামেক হাসপাতালে ৪০ শতাংশ রোগীই গ্রামাঞ্চলের।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেখছি, গ্রামের মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। অবাধে চলাফেরা করছেন। এমনকি মাস্কও পরছেন না। তবে আশার কথা হলো সামগ্রিকভাবে রাজশাহীতে শনাক্তের হার কমছে। স্বাস্থ্যবিধি মানলে শনাক্তের হার আরও কমে অবস্থার উন্নতি হবে।’

রামেক হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, এখন যে রোগীরা ভর্তি হচ্ছেন, তাদের অক্সিজেন স্যাচুরেশন কম, হঠাৎ শ্বাসকষ্টের সাথে শারীরিক অন্যান্য সমস্যা বেড়ে যাচ্ছে। চিকিৎসার সময়ই দিচ্ছে না।

রামেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক ডা. পার্থ মণি ভট্টাচার্য বলেন, ‘প্রথম ঢেউয়ে যেমন লক্ষণ ছিল, এবার তার থেকে আলাদা। ভর্তির পর থেকেই শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়া এবং অক্সিজেন স্যাচুয়েশন কমে যাচ্ছে। লিভার, কিডনি ও ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে সমস্যা অনেক বেশি হচ্ছে।’

আরও পড়ুন